প্রযুক্তি ডেস্ক: দীর্ঘ ইতিহাসে বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য জাহাজ ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ বাহিনী। মার্কিন নৌ বাহিনী চালুর পর থেকে প্রথমে কামান ও বর্তমানে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও আরো অনেক কিছু দিয়ে এসব জাহাজকে যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করেছে দেশটি।
বিভিন্ন সময়কাল দেখলে সহজেই বলা যায় কোন মার্কিন জাহাজ সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সবচেয়ে মারাত্মক ছিল ‘ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ’ বা সিভি-৬ যুদ্ধজাহাজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তিদের জয় পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এর অনন্য পরিষেবা ও অসংখ্য যুদ্ধ রেকর্ড।
বর্তমানে জাহাজ বনাম জাহাজ যুদ্ধ অনেক কম হওয়ায় এখন যুক্তরাষ্ট্রের কোন যুদ্ধজাহাজ সবচেয়ে প্রাণঘাতী তা ঠিক করা কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর তথ্য অনুসারে, ‘ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড’ বা সিভিএন-৭৮ সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধজাহাজ। কারণ যে কোনো পরিস্থিতিতে বিশাল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে এটি।
এটি তুলনামূলকভাবে নতুন জাহাজ, যা ২০১৭ সালের ২২জুলাই কমিশন বা মার্কিন নৌবাহিনীর অফিসিয়াল সেবায় যোগ হয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নতমানের বিমানবাহী রণতরী এবং এখনও পর্যন্ত নির্মিত বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট স্ল্যাশগিয়ার।
ফোর্ডের অনেক দিক রয়েছে, যা বর্তমানে এটিকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধজাহাজ হিসেবে গড়ে তুলেছে। যার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক বহুমুখী ফাইটার প্লেনের এয়ার উইং, অসাধারণ রেডার সক্ষমতা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এর অপারেশনাল রেঞ্জ বা পরিসর, যা দূরত্ব নয়, সময়ের হিসাবেই পরিমাপ হয়।
২৫ বছর পর্যন্ত সমুদ্রে কাজ করতে পারে এই জাহাজ, তারপরে কেবল জ্বালানি ভরা ও বড় ধরনের মেরামতের প্রয়োজন হয় এর। এটি মূলত ভাসমান এক বিমানবাহিনী, যা পৃথিবীর প্রায় যে কোনো স্থানে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। এজন্যই প্রাণঘাতী হিসেবে পরিচিত এই জাহাজ।
এ জাহাজটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর, অভিযোজনযোগ্য ও প্রাণঘাতী যুদ্ধজাহাজ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী, যা যথার্থই। এই জাহাজ এক লাখেরও বেশি পানি স্থানান্তর করতে পারে। জাহাজটি দৈর্ঘ্যে এক হাজার একশ ফুট ও এতে সর্বোচ্চ চার হাজার ছয়শ জন ক্রু থাকতে পারে।
জাহাজটির বিভিন্ন সিস্টেম পূর্বের ‘নিমিৎজ’ শ্রেণির বিভিন্ন ক্যারিয়ারের চেয়ে অনেক উন্নত এবং ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এয়ারক্রাফট লঞ্চ সিস্টেম’ বা ইএমএএলএস-এর কারণে এই জাহাজের বিমান উৎক্ষেপণের গতি অনেক বেশি।
২০২৫ সালের অক্টোবরে জাহাজটি ভেনেজুয়েলা ও আশপাশের এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর জন্য ক্যারিবিয়ান সাগরে পাঠানো হয়েছে। নৌবাহিনীর সবচেয়ে শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ হলেও এটি একা চলে না। এর শক্তি মূলত সেইসব জাহাজ থেকে আসে যারা ফোর্ডের সঙ্গে মিলে ‘ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ’ বা সিএসজি গঠন করে। এ দলটি ফোর্ডকে আরো শক্তিশালী ও সুরক্ষিত করার পাশাপাশি জাহাজকে ঘিরে থাকা শক্তিশালী নৌবাহিনী দল ‘সিএসজি-১২’কে বিশ্বের অনেক নৌবাহিনীর তুলনায় আরো প্রাণঘাতী ও উন্নত করে তুলেছে।
সানা/ওআ/আপ্র/০৯/১২/২০২৫
























