ঢাকা ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

বর্তমানে শিশুদের শত বছর বাঁচার সম্ভাবনা নেই

  • আপডেট সময় : ০৬:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • ৫৭ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: একশ বছর আগে পৃথিবীর মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৩২ বছর। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর। গত ১০০ বছরে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কারণ পৃথিবীতে শিশু মৃত্যুর হার এখন অনেক কমে গেছে। আজকের শিশুরা গড়ে ৮৫ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবেন। কয়েক দশক আগে শিকাগোর ইলিনয় ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ স্কুলের প্রফেসর জে ওলশানস্কি ও তার সহকর্মীরা এ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের শুধু ১ থেকে ৫ শতাংশ শিশুই ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচতে পারবেন।
সম্প্রতি ওলশানস্কি ও তার সহকর্মীরা ন্যাচার এইজিং জার্নালে মানুষের আয়ু সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রকাশ করেছেন; যেখানে অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, হংকং, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের আয়ু পর্যালোচনা করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৯ সালে জন্ম নেওয়া মেয়ে শিশুদের ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৫ দশমিক ১ শতাংশ। আর ছেলে শিশুদের ক্ষেত্রে এ সম্ভাবনা মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ।
ওলশানস্কি বলেন, আমরা আমাদের অনুমানটি পরীক্ষা করার জন্য ৩০ বছর অপেক্ষা করেছি। এখন আমরা দেখাতে পেরেছি যে, মানুষের আয়ু দ্রুত বৃদ্ধির যুগ শেষ হয়ে গেছে। যেমনটা আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম। তবে মানুষের আয়ু এখনও বাড়ছে। তবে আগের দশকের তুলনায় এর গতি তুলনামূলক ধীরে। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম যে, মানুষের আয়ু বৃদ্ধির হার কমে যাবে। তখন বহু মানুষ আমাদের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছিলেন। কেননা তাদের মতে, চিকিৎসাশাস্ত্র ও আয়ু বৃদ্ধিতে সহায়ক প্রযুক্তির উন্নতির ফলে মানুষের আরও দীর্ঘায়ু হবে।
ওলশানস্কির মন্তব্যের ৩৪ বছর পর যেন তার কথাই সত্য হতে যাচ্ছে। সিএনএনের পক্ষ থেকে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, অনেকের ধারণা মানুষ শিগগিরই ১২০ এমনকি ১৫০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচতে পারবে। আপনি কিভাবে এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর সঙ্গে আপনার গবেষণা ফলাফলের সমন্বয় করছেন? তিনি বলেন, এই সংখ্যাগুলো সব বানানো। আয়ু বৃদ্ধির এই অতিরঞ্জিত দাবিগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে যাচাই করার কোনো উপায় নেই। আমাদের গবেষণায় অতিরঞ্জন বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। কেননা এগুলো অপ্রত্যাশিত বৈজ্ঞানিক অনুমান। শুধু একজন নারী ১২২ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচেছেন।
ওলশানস্কি বলেন, বার্ধক্য থামানোর বর্তমানে কোনো উপায় নেই। এটি আপনার কোষ, টিস্যু ও অঙ্গের ক্ষয় করছে যা বর্তমানে বন্ধ করার উপায় নেই।
গত ৩০ বছরে স্থূলতা ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মতো রোগগুলো ব্যাপক হারে দেখা যাচ্ছে। সিএনএন-এর পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, আয়ু বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এগুলো কি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে?
মানুষ ১৫০ বছর কিংবা এর চেয়েও বেশি বয়স বাঁচবেÑ এমন কথাগুলো বলা হয় নানা প্রাণীর ওপর গবেষণা করে। ইঁদুর তো আর মানুষ না, এই কথা সত্য। তবুও ওশানেস্কির কাছে জানতে চাওয়া হয়, এসব গবেষণা কী আপনাকে আশাবাদী করে?
ওলশানস্কি বলেন, বার্ধক্য নিয়ে কাজ করার বিষয়টি অনেকটা এমনই। এক্ষেত্রে মৌলিক জৈবিক প্রক্রিয়া পরিবর্তনের দরজা আমাদের জন্য উন্মুক্ত। যাই হোক, কিছু গবেষক এই প্রাণীর মডেলগুলোর ফলাফল হিসেবে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা ধরে নিয়েছেন, আপনি যদি একটি ইঁদুরের আয়ুষ্কাল দ্বিগুণ বা তিনগুণ করতে পারেন, তবে আপনি মানুষের জীবনকালও দ্বিগুণ বা তিনগুণ করতে পারবেন। আমার কোনো সন্দেহ নেই, আমরা এই স্বল্পকাল জীবিত প্রজাতির আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারছি। তবে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, এটি একইভাবে মানুষের আয়ুও সমান গতিতে বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন যে, এটি কি আমাদের আয়ু দীর্ঘ করতে পারে? তিনি বলেন, উত্তর হবে হ্যাঁ, পারে। তবে তা কতটুকু সেটি আমরা জানি না।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বর্তমানে শিশুদের শত বছর বাঁচার সম্ভাবনা নেই

আপডেট সময় : ০৬:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

নারী ও শিশু ডেস্ক: একশ বছর আগে পৃথিবীর মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৩২ বছর। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর। গত ১০০ বছরে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কারণ পৃথিবীতে শিশু মৃত্যুর হার এখন অনেক কমে গেছে। আজকের শিশুরা গড়ে ৮৫ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবেন। কয়েক দশক আগে শিকাগোর ইলিনয় ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ স্কুলের প্রফেসর জে ওলশানস্কি ও তার সহকর্মীরা এ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের শুধু ১ থেকে ৫ শতাংশ শিশুই ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচতে পারবেন।
সম্প্রতি ওলশানস্কি ও তার সহকর্মীরা ন্যাচার এইজিং জার্নালে মানুষের আয়ু সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রকাশ করেছেন; যেখানে অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, হংকং, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের আয়ু পর্যালোচনা করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৯ সালে জন্ম নেওয়া মেয়ে শিশুদের ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৫ দশমিক ১ শতাংশ। আর ছেলে শিশুদের ক্ষেত্রে এ সম্ভাবনা মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ।
ওলশানস্কি বলেন, আমরা আমাদের অনুমানটি পরীক্ষা করার জন্য ৩০ বছর অপেক্ষা করেছি। এখন আমরা দেখাতে পেরেছি যে, মানুষের আয়ু দ্রুত বৃদ্ধির যুগ শেষ হয়ে গেছে। যেমনটা আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম। তবে মানুষের আয়ু এখনও বাড়ছে। তবে আগের দশকের তুলনায় এর গতি তুলনামূলক ধীরে। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম যে, মানুষের আয়ু বৃদ্ধির হার কমে যাবে। তখন বহু মানুষ আমাদের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছিলেন। কেননা তাদের মতে, চিকিৎসাশাস্ত্র ও আয়ু বৃদ্ধিতে সহায়ক প্রযুক্তির উন্নতির ফলে মানুষের আরও দীর্ঘায়ু হবে।
ওলশানস্কির মন্তব্যের ৩৪ বছর পর যেন তার কথাই সত্য হতে যাচ্ছে। সিএনএনের পক্ষ থেকে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, অনেকের ধারণা মানুষ শিগগিরই ১২০ এমনকি ১৫০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচতে পারবে। আপনি কিভাবে এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর সঙ্গে আপনার গবেষণা ফলাফলের সমন্বয় করছেন? তিনি বলেন, এই সংখ্যাগুলো সব বানানো। আয়ু বৃদ্ধির এই অতিরঞ্জিত দাবিগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে যাচাই করার কোনো উপায় নেই। আমাদের গবেষণায় অতিরঞ্জন বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। কেননা এগুলো অপ্রত্যাশিত বৈজ্ঞানিক অনুমান। শুধু একজন নারী ১২২ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচেছেন।
ওলশানস্কি বলেন, বার্ধক্য থামানোর বর্তমানে কোনো উপায় নেই। এটি আপনার কোষ, টিস্যু ও অঙ্গের ক্ষয় করছে যা বর্তমানে বন্ধ করার উপায় নেই।
গত ৩০ বছরে স্থূলতা ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মতো রোগগুলো ব্যাপক হারে দেখা যাচ্ছে। সিএনএন-এর পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, আয়ু বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এগুলো কি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে?
মানুষ ১৫০ বছর কিংবা এর চেয়েও বেশি বয়স বাঁচবেÑ এমন কথাগুলো বলা হয় নানা প্রাণীর ওপর গবেষণা করে। ইঁদুর তো আর মানুষ না, এই কথা সত্য। তবুও ওশানেস্কির কাছে জানতে চাওয়া হয়, এসব গবেষণা কী আপনাকে আশাবাদী করে?
ওলশানস্কি বলেন, বার্ধক্য নিয়ে কাজ করার বিষয়টি অনেকটা এমনই। এক্ষেত্রে মৌলিক জৈবিক প্রক্রিয়া পরিবর্তনের দরজা আমাদের জন্য উন্মুক্ত। যাই হোক, কিছু গবেষক এই প্রাণীর মডেলগুলোর ফলাফল হিসেবে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা ধরে নিয়েছেন, আপনি যদি একটি ইঁদুরের আয়ুষ্কাল দ্বিগুণ বা তিনগুণ করতে পারেন, তবে আপনি মানুষের জীবনকালও দ্বিগুণ বা তিনগুণ করতে পারবেন। আমার কোনো সন্দেহ নেই, আমরা এই স্বল্পকাল জীবিত প্রজাতির আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারছি। তবে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, এটি একইভাবে মানুষের আয়ুও সমান গতিতে বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন যে, এটি কি আমাদের আয়ু দীর্ঘ করতে পারে? তিনি বলেন, উত্তর হবে হ্যাঁ, পারে। তবে তা কতটুকু সেটি আমরা জানি না।