নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বর্তমানে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং খাগড়াছড়িতে বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রমে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ও কন্টিনজেন্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর)। আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ও কন্টিনজেন্টসমূহ গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যাকবলিত জেলাসমূহে প্রায় ৫৫টি বোট ও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ৯ হাজার ৫০০ বন্যাদুর্গত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণ করেছে। পাশাপাশি প্রায় পাঁচ হাজার বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্য সামগ্রী সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যাকবলিত জেলাসমূহে চিকিৎসা সহায়তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেডিক্যাল টিম মোতায়েন রয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি গতকাল ফেনীর ফুলগাজী থানা হতে অন্তঃসত্ত্বা মোছাম্মৎ সুমি বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করে কুমিল্লা সিএমএইচ এ প্রেরণ করা হলে তিনি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীর সকল পদবির সদস্যদের এক দিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বন্যার্তদের সহযোগিতায় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমার পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী সদস্য কর্তৃক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জরুরি ত্রাণ সংগ্রহের কার্যক্রমও পরিচালিত হচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী যুগল বিগ্রহ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা দিয়েছে সেনাবাহিনী: দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত কান্তজিউ মন্দিরে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী ‘যুগল বিগ্রহ’ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিতপ্তর (আইএসপিআর)। আইএসপিআর জানায়, সনাতন হিন্দু ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী এ দিন কান্তজিউ মন্দির থেকে রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি নদীপথে দিনাজপুর শহরের রাজবাড়ীতে স্থানান্তর করা হয়। এসময় হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ, জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা এবং সামরিক-আধা সামরিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ‘যুগল মূর্তি’ কান্তজিউ মন্দির ঘাট ত্যাগ করে। মোট ২০টি জলযান ৩৭টি ঘাট অতিক্রম করে ১৯৪০ ঘটিকায় দিনাজপুর শহরের সাধুর ঘাটে পৌঁছায়। পরে মূর্তিটি সড়কপথে দিনাজপুর শহরের রাজবাড়ীতে পৌঁছায়। অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে সম্পন্নের জন্য ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের সেনাসদস্যরা দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে দিনব্যাপী মোতায়েন ছিলেন। বিভিন্ন ঘাটগুলোর নিরাপত্তা বিধান ছাড়াও সেনাসদস্যরা তিনটি স্পিডবোট ও তিনটি ট্রলার যোগে নদীপথে টহলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। অনুষ্ঠান সম্পর্কিত সব স্থানে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে স্বস্তি এবং আস্থা নিশ্চিত করে। ওই অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী ছাড়াও বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নিয়োজিত ছিলেন। উল্লেখ্য, দেশব্যাপী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সবার পাশে দাঁড়াবো- এটাই সেনাবাহিনীর প্রত্যাশা।