প্রত্যাশা ডেস্ক: পেশার তাগিদে বেশির ভাগ সময়ই থাকতেন বাড়ির বাইরে। বন্ধুর মারফত টাকা পৌঁছে দিতেন স্ত্রীর কাছে। আর সেই বন্ধুর সঙ্গেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন স্ত্রী। এদিকে স্ত্রী আবার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। আট মাস ধরে থাকছিলেন বাপের বাড়ি।
গত সোমবার (১০ নভেম্বর) স্ত্রী ও বন্ধুকে একসঙ্গে ঘুরতে দেখেন ওই যুবক। তাই দেরি না করে তাদের নিয়ে যান স্থানীয় মন্দিরে। প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রীর বিয়ে দিলেন তিনি। তবে ৭ বছর বয়সি ছেলেকে নিজের কাছেই রেখে দেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। সাঁইথিয়ার সতীপীঠ নন্দিকেশরীতলায় দুই যুবক-যুবতীর বিয়ে দেখতে ভিড় করলেন স্থানীয়রা। নবদম্পতির সামনে দাঁড়িয়ে কনের প্রথম স্বামীর বক্তব্য, ‘আজ থেকে আমি মুক্ত। আমার বউ এখন বন্ধুর বউ। ওর ভরণপোষণের দায়িত্ব এবার থেকে আমার বন্ধুর।’
৯ বছর আগে বাপি মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় তারাপীঠের সঞ্চারীর। বাপির বন্ধু জিৎ। তারা দুজনই পেশায় লরিচালক।
পেশার তাগিদে বাইরে যেতে হতো বাপিকে। বন্ধুর আবদারে সংসার খরচের টাকা পৌঁছে দিতে সঞ্চারীর কাছে যেতেন জিৎ। এই সময়ের মধ্যেই সঞ্চারী ও জিৎ প্রেমে পড়েন। বাধা দেওয়ারও কেউই ছিল না। আর ক্রমেই বাড়ে ঘনিষ্ঠতা।
বাপি বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই অনুমান করেছিলাম, কিন্তু কিছু বলতে পারছিলাম না। লোকলজ্জা, ছেলের ভবিষ্যৎ— সব মিলিয়ে চুপ ছিলাম।’
এদিকে আবার বাপির বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন সঞ্চারী। সেই মামলা আদালতে বিচারাধীন। স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে যান বাপের বাড়িতে। সেখানেই থাকছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তার বাড়িতে যান প্রেমিক জিৎ। সোমবার বাপি শ্বশুরবাড়ি যান। কিন্তু তার শাশুড়ি জানিয়ে দেন, মেয়ে স্বাধীন। ও যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।
শ্বশুরবাড়ির মতামত বুঝতে পেরে ফিরে আসেন বাপি। নজরদারি শুরু করেন জিতের ওপর। এরই মধ্যে সাঁইথিয়ার বাইপাসে সঞ্চারী-জিতকে একই বাইকে দেখেন তিনি। তাদের একসঙ্গে দেখে নন্দিকেশ্বরীতলায় নিয়ে যান। সেখানে সঞ্চারী জানিয়ে দেন, ‘এখান থেকেই নতুন ঠিকানায় জিতের সঙ্গে তার বাড়ি যাব।’ এরপর বাপিই উদ্যোগ নিয়ে নন্দিকেশ্বরীতলায় দুজনের বিয়ের আয়োজন করেন।
তবে হাতেনাতে ধরা পড়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছিলেন জিৎ। জিৎ বলেন, ‘আট-নয় মাস ধরে আমাদের প্রেম গাঢ় হয়েছিল। বিয়েও করব বলে ঠিক করেছিলাম। বন্ধুকে বলতে পারছিলাম না। যা হলো ভালোই হলো।’
বাপি বলেন, ‘আদালতে আমার ওপর নারী নির্যাতনের মামলা চলছে। আইনি ছাড়পত্র দিতে পারলাম না। তবে পুলিশকে সাক্ষী রেখে তাকে জিতের হাতে তুলে দিলাম। আশা করি, এবার ও মামলা তুলে নেবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সে যখন আমার সঙ্গে সংসারই করবে না এবং আমার সঙ্গে থাকলে আত্মহত্যার হুমকি দেয়, তার চেয়ে এই ভালো। যে যার মতো করে ভালো থাকুক।’
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
ওআ/আপ্র/১৩/১০/২০২৫
























