নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্ধুর জন্মদিন উদযাপন করতে বেরিয়ে রাজধানীর উত্তরায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক তরুণ দম্পতির মৃত্যু হয়েছে।
গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানাধীন বিএনএস সেন্টারের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে কোন গাড়ির ধাক্কায় স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন সে বিষয়টি এখনো জানা যায়নি।
নিহতরা হলেন- আব্দুর রহমান রাব্বি (২৫) ও তার স্ত্রী কারিমা আক্তার মিম (২০)।
নিহতের বন্ধু মানিক জানান, আজ (সোমবার) আমার জন্মদিন ছিল। আমার বাসা এবং রাব্বির বাসা পাশাপাশি। রাতে বাসায় কেক কাটা শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নিই মিরপুরে স্টেডিয়ামের পাশে খেতে যাব। এরপর আমার বাসা থেকে রাব্বি ও তার স্ত্রী তাদের বাসায় চলে যান এবং আমাকে রেডি হয়ে ফোন দেন। পরে আমি আমার স্ত্রী তানজিলা এবং বন্ধু রাব্বি ও তার স্ত্রী মিম আমরা দুই মোটরসাইকেল নিয়ে টঙ্গী থেকে মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করি। কয়েকদিন আগেই রাব্বি নতুন একটি মোটরসাইকেল কিনেছেন। জোরে চালানো যায় না। আমি তেল নেওয়ার জন্য একটি মোটরসাইকেল পাম্পে ঢুকি। এর কিছুক্ষণ পরে আমার মোবাইলে রাব্বির মোবাইল থেকে পুলিশের একজন এসআই আমাকে ফোন করে এবং বিএনএস সেন্টারের বিপরীত পাশে আমাকে দ্রুত আসতে বলেন। সেখানে রাব্বি এক্সিডেন্ট করেছে বলে জানায়। আমি এসে দেখি আমার বন্ধু এবং তার স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে কেউই তাদের ধরছেনা; সবাই ছবি তুলছে ভিডিও করছে। অনেককে অনুরোধ করলাম কেউ তুললো না। পরে একটি ট্রাকে করে পুলিশ ও একটি মেয়ের সহায়তায় তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় বন্ধুর স্ত্রী আর বেঁচে নেই। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার বন্ধু সকালে মারা যান। আজকে যদি আমি খেতে না যেতাম তাহলে আমার বন্ধুর এই অবস্থা হতো না বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
নিহত রাব্বির বাবা আব্দুর রব বলেন, আমার একটাই ছেলে। রাতে আমাকে বলেছিল আমার বন্ধুর জন্মদিন আছে আমি সেখানে যাব। তবে সেটা কোন বন্ধুর জন্মদিনে যাবে আমি জানতাম না। ভোর ৫টার দিকে তার বন্ধু মানিক এসে কলিং বেল দেন এবং দরজা খুলে দিলে আমাকে বিষয়টি জানায়। আমার তো কিছুই রইল না আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। আমার তো একটাই ছেলে ছিল। কোন গাড়িতে আমার ছেলে ও আমার পুত্রবধূকে মেরে ফেলেছে সেটি এখনো জানতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, তিন বছর আগে রাব্বির সঙ্গে মিমের বিয়ে হয়। আমরা গাজীপুরের টঙ্গীর পশ্চিম রসুলবাগ এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করি। আমাদের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়।
উত্তরা পূর্ব থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে আমরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠালে তারা দুজনেই মারা যান। তবে কি গাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়টি এখনো জানা যায়নি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি পরিবার বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দুটিকে নিয়ে যেতে চান।