ঢাকা ০৮:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

বছরে ১০০ কোটি টাকার জুতা রপ্তানি

  • আপডেট সময় : ০২:৩৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক ; লালমাই ফুটওয়্যার থেকে প্রতি বছর জুতা রপ্তানি হচ্ছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। এই কারখানায় বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রাঙ্কোসার্টো ও ন্যাচারালাইজার, জার্মানির লিডেল, ইতালির চিকো, স্পেনের ডাস্টিন টিজাস, ফ্রান্সের ডামার্ট ও অ্যারাম ইত্যাদি। এ ছাড়া জেসিপেনি, এবিসি মার্ট, ম্যাসিস, কোলসের মতো বিশ্বখ্যাত মেগাশপেও কুমিল্লার লালমাই ফুটওয়ারের জুতা পাওয়া যায়। লালমাই ফুটওয়্যার শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিতে নারী ও পুরুষ শ্রমিক জুতা তৈরি করেন। এই কারখানায় মাত্র ৮ ঘণ্টায় ৫ হাজার জোড়া জুতা বানানোর সক্ষমতা রয়েছে। স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত লালমাই গ্রুপেরই প্রতিষ্ঠান ‘লালমাই ফুটওয়্যার’। প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানির ৯০ শতাংশের বেশি চামড়ার জুতা। আর বাকি জুতা পাটজাত পণ্য থেকে তৈরি হয়। কুমিল্লা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ধনপুর গ্রামে ১৯৯২ সালে প্রায় ৩০ বিঘা জমির ওপর লালমাই ফুটওয়্যারের কারখানার যাত্রা শুরু হয়। ৩০ বিঘা জমির মাত্র ১০ বিঘায় আছে কয়েকটি কারখানা ভবন। বাকি জমি গাছপালায় ভরা। কারখানার ভেতরে রয়েছে বিশাল এক পুকুর। তিন দশকের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জুতা রপ্তানিতে প্রথম সারির একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এটি। কয়েক বছর ধরে চামড়া খাতে দেশের শীর্ষ তিন করদাতা প্রতিষ্ঠানের একটি লালমাই ফুটওয়্যার।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লালমাই ফুটওয়্যারে এখন সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩২৫ জন কর্মী কাজ করছেন। তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই নারী। সব কর্মীর দুপুরের খাবার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া নারী কর্মীদের জন্য রয়েছে শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র। সেখানে একটি চিকিৎসাকেন্দ্রও রয়েছে, যেখানে সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক থাকেন। করোনার মধ্যে লালমাই ফুটওয়্যার একজন কর্মীও ছাঁটাই করেনি। কারখানা ২ মাস বন্ধ থাকলেও কর্মীরা নিয়মিত বেতন ভাতা পেয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে জুতা তৈরির শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের পর লালমাই ফুটওয়্যারের দৈনিক জুতা বানানোর সক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। শিশুদের জুতার জন্য বিখ্যাত ইতালির ব্র্যান্ড চিকোর জুতা বানানো হয় লালমাইয়ের কারখানায়। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি বাচ্চাদের জুতা ইউরোপের শোরুমে প্রতি জোড়া ৬৫ থেকে ১২০ ইউরোতে বিক্রি হয়। ফ্রান্সের ডামার্ট জনপ্রিয় নারীদের জুতার জন্য। তারা লালমাই থেকে নেওয়া প্রতি জোড়া জুতার ৮০ থেকে ১২০ ইউরোতে বিক্রি করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রাঙ্কোসার্টো ব্র্যান্ডের বুট জুতার দাম ৭৫ ডলার থেকে ১৮০ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাচারালাইজার ব্র্যান্ডের জুতার দাম ১০০ ডলারের বেশি। আর জার্মানির লিডেলের জুতাও ৭০-৮০ ইউরোর কমে বিক্রি হয় না। এসব দামি জুতা এ দেশের শ্রমিকের হাতে তৈরি। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা জুতার মানের বিষয়ে কখনো ছাড় দেই না। প্রায় তিন দশক ধরে বিদেশি ক্রেতারাও আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। বিশ্বের খ্যাতনামা অনেক ব্র্যান্ডের জুতা আমরা তৈরি করি। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের। ’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে ‘অবদান’ অস্বীকারেই নাখোশ ট্রাম্প

বছরে ১০০ কোটি টাকার জুতা রপ্তানি

আপডেট সময় : ০২:৩৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক ; লালমাই ফুটওয়্যার থেকে প্রতি বছর জুতা রপ্তানি হচ্ছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। এই কারখানায় বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রাঙ্কোসার্টো ও ন্যাচারালাইজার, জার্মানির লিডেল, ইতালির চিকো, স্পেনের ডাস্টিন টিজাস, ফ্রান্সের ডামার্ট ও অ্যারাম ইত্যাদি। এ ছাড়া জেসিপেনি, এবিসি মার্ট, ম্যাসিস, কোলসের মতো বিশ্বখ্যাত মেগাশপেও কুমিল্লার লালমাই ফুটওয়ারের জুতা পাওয়া যায়। লালমাই ফুটওয়্যার শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিতে নারী ও পুরুষ শ্রমিক জুতা তৈরি করেন। এই কারখানায় মাত্র ৮ ঘণ্টায় ৫ হাজার জোড়া জুতা বানানোর সক্ষমতা রয়েছে। স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত লালমাই গ্রুপেরই প্রতিষ্ঠান ‘লালমাই ফুটওয়্যার’। প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানির ৯০ শতাংশের বেশি চামড়ার জুতা। আর বাকি জুতা পাটজাত পণ্য থেকে তৈরি হয়। কুমিল্লা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ধনপুর গ্রামে ১৯৯২ সালে প্রায় ৩০ বিঘা জমির ওপর লালমাই ফুটওয়্যারের কারখানার যাত্রা শুরু হয়। ৩০ বিঘা জমির মাত্র ১০ বিঘায় আছে কয়েকটি কারখানা ভবন। বাকি জমি গাছপালায় ভরা। কারখানার ভেতরে রয়েছে বিশাল এক পুকুর। তিন দশকের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জুতা রপ্তানিতে প্রথম সারির একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এটি। কয়েক বছর ধরে চামড়া খাতে দেশের শীর্ষ তিন করদাতা প্রতিষ্ঠানের একটি লালমাই ফুটওয়্যার।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লালমাই ফুটওয়্যারে এখন সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩২৫ জন কর্মী কাজ করছেন। তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই নারী। সব কর্মীর দুপুরের খাবার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া নারী কর্মীদের জন্য রয়েছে শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র। সেখানে একটি চিকিৎসাকেন্দ্রও রয়েছে, যেখানে সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক থাকেন। করোনার মধ্যে লালমাই ফুটওয়্যার একজন কর্মীও ছাঁটাই করেনি। কারখানা ২ মাস বন্ধ থাকলেও কর্মীরা নিয়মিত বেতন ভাতা পেয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে জুতা তৈরির শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের পর লালমাই ফুটওয়্যারের দৈনিক জুতা বানানোর সক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। শিশুদের জুতার জন্য বিখ্যাত ইতালির ব্র্যান্ড চিকোর জুতা বানানো হয় লালমাইয়ের কারখানায়। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি বাচ্চাদের জুতা ইউরোপের শোরুমে প্রতি জোড়া ৬৫ থেকে ১২০ ইউরোতে বিক্রি হয়। ফ্রান্সের ডামার্ট জনপ্রিয় নারীদের জুতার জন্য। তারা লালমাই থেকে নেওয়া প্রতি জোড়া জুতার ৮০ থেকে ১২০ ইউরোতে বিক্রি করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রাঙ্কোসার্টো ব্র্যান্ডের বুট জুতার দাম ৭৫ ডলার থেকে ১৮০ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাচারালাইজার ব্র্যান্ডের জুতার দাম ১০০ ডলারের বেশি। আর জার্মানির লিডেলের জুতাও ৭০-৮০ ইউরোর কমে বিক্রি হয় না। এসব দামি জুতা এ দেশের শ্রমিকের হাতে তৈরি। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা জুতার মানের বিষয়ে কখনো ছাড় দেই না। প্রায় তিন দশক ধরে বিদেশি ক্রেতারাও আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। বিশ্বের খ্যাতনামা অনেক ব্র্যান্ডের জুতা আমরা তৈরি করি। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের। ’