বগুড়া সংবাদদাতা :শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় সহিংস ঘটনায় জেলার দুটি থানায় ১৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। বগুড়া সদর ও শেরপুর থানায় দায়ের করা মামলায় ২৯৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত অনেককে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়া পুলিশ সুপার জাকির হাসান। পুলিশ সূ্ত্ের জানা গেছে, নাশকতা, সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের উপর হামলা সংক্রান্ত বিষয়ে মামলাগুলো দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি মামলার বাদী পুলিশ। এছাড়া আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর এবং অগ্নি সংযোগ, এসিল্যান্ড অফিস ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ, পোস্ট অফিসে ভাঙচুর ও রেলওয়েতে নাশকতার ঘটনায় বাকি চারটি মামলা স্ব স্ব দপ্তর থেকে করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, মামলায় ইতোমধ্যে দুই থানার ১১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা রয়েছেন। এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগের মতো সহিংস ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার মতো ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। রেলওয়েকে একটি তদন্ত কমিটি করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। থানা থেকে একটি রিপোর্ট দেবে। আর জেলা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আমরা একটি রিপোর্ট চেয়েছি।’ কোটা সংস্কারের দাবিতে গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) থেকে বগুড়ায় শিক্ষার্থীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করতে থাকেন। ওই দিন সকালে প্রথমে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় চারজন আহত হন। পরবর্তীতে ওই দিন বিকাল তিনটার দিকে শহরের সাতমাথায় ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণ, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে ছাত্রলীগ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, টাউন ক্লাব, প্রধান ডাকঘর, মুজিবমঞ্চসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বগুড়ায় শহরজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করে আন্দোলনকারীরা। বেলা ১১টার পর থেকে শহরের সাতমাথা, বনানী, আজিজুল হক কলেজ, সেউজগাড়ী, মফিজ পাগলার মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারীরা সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চালায়। এছাড়া ১৯ জুলাই (শুক্রবার) বগুড়ার সেউজগাড়ী এলাকায় আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বিদ্যুতের পোল ফেলে ব্যারিকেড দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিন সন্ধ্যায় পুলিশের ছোররা গুলিতে সিয়াম শুভ নামে এক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়।
বগুড়ায় ১৩ মামলায় আসামি বহু, গ্রেপ্তার ১১১
জনপ্রিয় সংবাদ