প্রত্যাশা ডেস্ক: প্রায় ৫০ বছর আগে লাইব্রেরি থেকে একটি বই নিয়েছিলেন চাক হিল্ডেব্র্যান্ড। এত বছর বই ফিরিয়ে না দেওয়ার চার হাজার ডলারের বেশি জরিমানা হতে পারতো। সেটা তো মওকুফ হলোই, উল্টো বইটি তাকে লাইব্রেরি রেখে দেওয়ার অনুমতিও দিলো। যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রোয়েট শহরের ঘটনা এটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ডেট্রয়েটের উপকণ্ঠে ওয়ারেন নামক এলাকায় বড় হয়েছেন হিল্ডেব্রান্ড। ৬৩ বছর বয়সী এই বেজবল ভক্ত এখন শিকাগোর বাসিন্দা। ১৯৭৪ সালে ১৩ বছর বয়সী হিল্ডেব্র্যান্ড ওয়ারেন লাইব্রেরি থেকে বেজবল বিষয়ক একটি বই নিয়েছিলেন। এত বছর বাদে থ্যাংসগিভিং-এ বইটি ফিরিয়ে দিতে গেলে কর্তৃপক্ষ জবাব দেয়, আপনি বইটি রেখে দিতে পারেন। আর আপনার কোনও জরিমানা নেই। হিল্ডেব্রান্ট বলেছেন, বাড়ি বদলানোর সময় প্রতিটি বই পরীক্ষা করা হয়ে ওঠে না। সব বই কেবল বাক্সে রেখে দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, পাঁচ-ছয় বছর আগে আমি একটি বই দেখলাম, তাতে ডিউই ডেসিমাল লাইব্রেরি নম্বর লেখা ছিল। সেটা দেখেই বুঝলাম, এটা আমার ছেলেবেলায় লাইব্রেরি থেকে নেওয়া বই।
বইয়ের ভেতরের একটি কাগজে ফেরত দেওয়ার তারিখ লেখা ছিল ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৪। ৫০তম বার্ষিকীতে বইটি ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনার কথা করেছিলেন হিল্ডেব্র্যান্ড। তিনি সম্প্রতি ওয়ারেন পাবলিক লাইব্রেরির পরিচালক, ওক্সানা আরবানের সঙ্গে দেখা করে তার পরিকল্পনার কথা বলেন। তবে আরবান বলেন, লাইব্রেরির রেকর্ডে হিল্ডেব্র্যান্ডের নাম আর ওই বইটির রেকর্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। আরবান বলেছেন, অনেকেই ফিরে এসে এ ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চান না। কিন্তু এখানে কোনও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি ছিল না। কারণ, হিল্ডেব্র্যান্ড ও ওই বই- দুটোই আমাদের সিস্টেম থেকে মুছে গেছে।
দিনশেষে ছেলেবেলার বইটি হিল্ডেব্র্যান্ডের শেলফেই রয়ে গেছে। বইটি রেখে দেওয়ায় নিজ উদ্যোগে আরেকটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন তিনি। রিডিং ইজ ফান্ডামেন্টাল (বই পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ) নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য চার হাজার ৫৬৪ মার্কিন ডলার তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন হিল্ডেব্র্যান্ড। লাইব্রেরির বই ফেরত দিতে ৫০ বছর বিলম্বের আনুমানিক জরিমানার সমান এই অর্থ। তিনি নিজেই ৪৫৭ ডলার তহবিলে দেওয়ার মাধ্যমে এই উদ্যোগের সূচনা করেছেন।
বই ফেরত দিতে ৫০ বছর পর এলেন লাইব্রেরিতে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ