ঢাকা ০৮:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ফ্যাসিস্টের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন সভ্য জগতে দণ্ডনীয় অপরাধ

  • আপডেট সময় : ০৫:১৮:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

মাসকাওয়াথ আহসান : পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত একটি ডাস্টবিনকে কেন্দ্র করে রীতিমতো রুচি শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। যারা ইউরোপের এনলাইটেনমেন্টের সংস্কৃতির পলিটিক্যাল স্যাটায়ার, গ্রাফিতি ও পাপেট্রির সঙ্গে পরিচিত; যারা হলিউডের মুভির সঙ্গে পরিচিত; তারা নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন; কীভাবে সেখানে নিয়মিত ফ্যাসিস্ট শাসকদের প্রতি অপছন্দ প্রকাশ করা হয়। কেমন করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ফ্যাসিস্টদের প্রতি অসম্মান জারি রাখা হয়; যাতে এই গণধিকৃতি দেখে; ভবিষ্যতে কেউ ফ্যাসিস্ট কিংবা ফ্যাসিজমের দোসর হয়ে না ওঠে। এ হচ্ছে পশ্চিমের সমাজের শিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ। সোভিয়েত কৌতুক পড়েছেন যারা; তারা জানেন ফ্যাসিজম বিরোধী বার্তা আসলে গণতান্ত্রিক শিক্ষা।
আমাদের দেশেই ধরুন, হুমায়ূন আহমেদের নাটকে তোতার মুখে ‘তুই রাজাকার’ কিংবা আহমেদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রে ইয়াহিয়া খানের ছবিতে থুতু দেওয়ার দৃশ্যটির প্রতীকী গুরুত্ব কত বেশি। আবার পটুয়া কামরুল হাসানের স্বৈরশাসক এরশাদকে নিয়ে দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে একটি ক্লাসিক স্কেচ ওয়ার্ক।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সমাজেও ফ্যাসিস্ট শাসকদের নিয়ে, তাদের কোলাবরেটরদের নিয়ে ক্যারিকেচার; ডাস্টবিনে, ডোর ম্যাটে এমবুশ করা ফটো; এগুলো পলিটিক্যাল স্যাটায়ারের অংশ। কিন্তু শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত একটি ডাস্টবিন ঘিরে হাসিনার ফ্যাসিজমের দোসরদের বাইরে যারা রুচি জ্ঞানের পসরা সাজিয়ে বসলেন; তারা কি শেখ হাসিনার অপরাধের ভয়াবহতা সম্পর্কে আদৌ অবহিত!
সাম্প্রতিক পৃথিবীতে শেখ হাসিনা নিকৃষ্টতম ফ্যাসিজম সৃষ্টি করেছেন। সাড়ে পনেরো বছর ধরে তিনি ভিন্নমতের মানুষের ক্লিনসিং করেছেন; সবশেষে জুলাই-আগস্টে ছাত্রগণহত্যা করে দিল্লি পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে তাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করা ও শাস্তি দেবার ক্ষমতা বাংলাদেশ সাধারণ মানুষের নেই। আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধব হত্যার ন্যায়বিচার না পেয়ে সাধারণ মানুষ কমপক্ষে দেশের ডাস্টবিনগুলোকে হাসিনা বিন নাম দিয়ে তাদের ক্ষোভ ও শোক প্রশমন করতে পারে।
ইউরোপে তো ফ্যাসিস্টদের হত্যা করে প্রতিশোধ নেবার পরেও সাধারণ মানুষ ফ্যাসিস্টদের ছবি ও ক্যাচিকেচার দিয়ে ফ্যাসিজমের ওইসব প্রতীকী ব্যক্তির বিরুদ্ধের ক্ষোভ ও অপছন্দ জারি রাখে। এনলাইটেনমেন্ট ও রেনেসাঁর এই মহাদেশের কোনো দেশে লিবেরেল বাম নেতা, লেখক, দার্শনিক, চিত্রকর, চলচ্চিত্র নির্মাতা কখনো বলেন না, মুসোলিনির ছবিযুক্ত ডাস্টবিন অত্যন্ত অভদ্র ও অশ্লীল, ছিহ!
এসথেটিকস, কার্টেসি, সেন্স অফ প্রপোরশন ইউরোপের লোকের দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি; সেটি উল্লেখ না করলেও চলে। তাহলে গত দুই দিন ধরে বাংলাদেশের মানুষকে অমন নন্দনজ্ঞান বা রুচিবোধ শেখাচ্ছেন কারা! এরা ঠিক কোন নৈতিকতার দণ্ডে হাসিনাকে এখনো সম্মানের পাত্রী মনে করছেন! ব্যাপারটা আসলে কি!
ধরুন, কেউ যদি সারাজীবন এনালগ ঢাকাতেই থেকে যায়; টিকাটুলি থেকে বইমেলা করে বিদগ্ধদের দলে জোর করে এঁটে যেতে চায়, তাহলে না হয় কালচারের পেডাগগদের কাছ থেকে, রুচি, বিশুদ্ধ সংস্কৃতি, লিবেরেলিজম, নৈতিকতা ইত্যাদি অন্ধের হাতি দর্শনের মতো করে শিখে; আর তা নিয়ে ফেসবুকে আশুরার কান্না জুড়ে দিতে পারতো; ফ্যাসিস্ট হাসিনার কথিত অসম্মানে! কিন্তু ইন্টারনেট যুগের ঢাকা গোটা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। জেন-জি গোটা পৃথিবীতে একই রকম। তাদের সামনে এসব কী অলীক রুচি আর নৈতিকতার গল্প দিচ্ছেন সংস্কৃতি পুরোহিতেরা। এসব ফতোয়া তো আউটডেটেড ধর্ম হুজুরের মতোই আকাশ কুসুম ও অযৌক্তিক।
এত ভং না ধরে স্পষ্ট করে বললেই তো; বাংলাদেশে ছোট স্বৈরাচার এরশাদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, ড ইউনূসসহ সবাইকে অপমান করা যাবে; শুধু শেখ হাসিনাকে ও তার পৃষ্ঠপোষকদের অপমান করা যাবে না! কোনো অজ্ঞাত কারণে শেখ হাসিনা ও তার পৃষ্ঠপোষকদের আর্য আর বাকি সবাইকে অনার্য মনে হয় নাকি!
হাসিনা-তার পারিষদ-পৃষ্ঠপোষকেরা খুব সম্ভব আয়নার সামনে দাঁড়ান না! কী বেরিয়েছে এই কুখ্যাত খুনে হাসিনা ও খুনে দোসরদের যে; তাদের মানসম্মানের দাবি নিয়ে হাজির হয়েছে কিছু ধূসর পাণ্ডুলিপি!
যে হাসিনার গণহত্যার রক্ত এখনো ছোপ ছোপ লেগে আছে বাংলাদেশের জমিনে, যে হাসিনার খুনে বাহিনীর গুলির চিহ্ন নিয়ে আহতরা জীবন্মৃত হয়ে আছে; সামান্য একটা ডাস্টবিনে সেই খুনির ছবি দেখে যাদের সুরুচিতে লেগেছে, তাদের জুলাই-আগস্টের কোনো মৃত্যু কোনো আঘাত ছুয়ে যায়নি নিশ্চিতভাবেই।
আবহমান বাংলাদেশের মানুষ ঘৃণা শব্দটি সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে কাস্ট সিস্টেম দেখে। আর সমকালে আওয়ামী লীগই ঘৃণা শিক্ষা দিয়ে নিজেদের আপার কাস্ট ও বাকিদের লোয়ারকাস্ট হিসেবে প্রতিপন্ন করতে চেষ্টা করেছিল। এ বাদ দিলে বাংলাদেশের মানুষ সতত বন্ধুভাবাপন্ন, সাম্যদর্শনের মানুষ। তাদের এই সরলতা ও অহিংস মনোভাবের সুযোগ নিয়েই শেখ হাসিনা ভারতের সহযোগিতা নিয়ে গজদন্তের মিনার গড়ে তুলেছিলেন।
সে গজদন্তের মিনার ধসে হাসিনা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। তবু তিনি হিটলার, মুসোলিনি, ইয়াহিয়ার মতো বেঁচে থাকবেন জনমানুষের অপছন্দের জগতে। কাজেই দেশে হাসিনার সম্মান দাবি করেছেন ঠিকাছে; ইউরোপে গিয়ে আবার হিটলারের সম্মান দাবি করবেন না; ডাইরেক্ট জেলে ভরে দেবে। ফ্যাসিস্টের প্রতি সহানুভূতি ও সম্মান প্রদর্শন সভ্য জগতে দণ্ডনীয় অপরাধ।

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও শিক্ষক

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ফ্যাসিস্টের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন সভ্য জগতে দণ্ডনীয় অপরাধ

আপডেট সময় : ০৫:১৮:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মাসকাওয়াথ আহসান : পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত একটি ডাস্টবিনকে কেন্দ্র করে রীতিমতো রুচি শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। যারা ইউরোপের এনলাইটেনমেন্টের সংস্কৃতির পলিটিক্যাল স্যাটায়ার, গ্রাফিতি ও পাপেট্রির সঙ্গে পরিচিত; যারা হলিউডের মুভির সঙ্গে পরিচিত; তারা নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন; কীভাবে সেখানে নিয়মিত ফ্যাসিস্ট শাসকদের প্রতি অপছন্দ প্রকাশ করা হয়। কেমন করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ফ্যাসিস্টদের প্রতি অসম্মান জারি রাখা হয়; যাতে এই গণধিকৃতি দেখে; ভবিষ্যতে কেউ ফ্যাসিস্ট কিংবা ফ্যাসিজমের দোসর হয়ে না ওঠে। এ হচ্ছে পশ্চিমের সমাজের শিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ। সোভিয়েত কৌতুক পড়েছেন যারা; তারা জানেন ফ্যাসিজম বিরোধী বার্তা আসলে গণতান্ত্রিক শিক্ষা।
আমাদের দেশেই ধরুন, হুমায়ূন আহমেদের নাটকে তোতার মুখে ‘তুই রাজাকার’ কিংবা আহমেদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রে ইয়াহিয়া খানের ছবিতে থুতু দেওয়ার দৃশ্যটির প্রতীকী গুরুত্ব কত বেশি। আবার পটুয়া কামরুল হাসানের স্বৈরশাসক এরশাদকে নিয়ে দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে একটি ক্লাসিক স্কেচ ওয়ার্ক।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সমাজেও ফ্যাসিস্ট শাসকদের নিয়ে, তাদের কোলাবরেটরদের নিয়ে ক্যারিকেচার; ডাস্টবিনে, ডোর ম্যাটে এমবুশ করা ফটো; এগুলো পলিটিক্যাল স্যাটায়ারের অংশ। কিন্তু শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত একটি ডাস্টবিন ঘিরে হাসিনার ফ্যাসিজমের দোসরদের বাইরে যারা রুচি জ্ঞানের পসরা সাজিয়ে বসলেন; তারা কি শেখ হাসিনার অপরাধের ভয়াবহতা সম্পর্কে আদৌ অবহিত!
সাম্প্রতিক পৃথিবীতে শেখ হাসিনা নিকৃষ্টতম ফ্যাসিজম সৃষ্টি করেছেন। সাড়ে পনেরো বছর ধরে তিনি ভিন্নমতের মানুষের ক্লিনসিং করেছেন; সবশেষে জুলাই-আগস্টে ছাত্রগণহত্যা করে দিল্লি পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে তাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করা ও শাস্তি দেবার ক্ষমতা বাংলাদেশ সাধারণ মানুষের নেই। আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধব হত্যার ন্যায়বিচার না পেয়ে সাধারণ মানুষ কমপক্ষে দেশের ডাস্টবিনগুলোকে হাসিনা বিন নাম দিয়ে তাদের ক্ষোভ ও শোক প্রশমন করতে পারে।
ইউরোপে তো ফ্যাসিস্টদের হত্যা করে প্রতিশোধ নেবার পরেও সাধারণ মানুষ ফ্যাসিস্টদের ছবি ও ক্যাচিকেচার দিয়ে ফ্যাসিজমের ওইসব প্রতীকী ব্যক্তির বিরুদ্ধের ক্ষোভ ও অপছন্দ জারি রাখে। এনলাইটেনমেন্ট ও রেনেসাঁর এই মহাদেশের কোনো দেশে লিবেরেল বাম নেতা, লেখক, দার্শনিক, চিত্রকর, চলচ্চিত্র নির্মাতা কখনো বলেন না, মুসোলিনির ছবিযুক্ত ডাস্টবিন অত্যন্ত অভদ্র ও অশ্লীল, ছিহ!
এসথেটিকস, কার্টেসি, সেন্স অফ প্রপোরশন ইউরোপের লোকের দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি; সেটি উল্লেখ না করলেও চলে। তাহলে গত দুই দিন ধরে বাংলাদেশের মানুষকে অমন নন্দনজ্ঞান বা রুচিবোধ শেখাচ্ছেন কারা! এরা ঠিক কোন নৈতিকতার দণ্ডে হাসিনাকে এখনো সম্মানের পাত্রী মনে করছেন! ব্যাপারটা আসলে কি!
ধরুন, কেউ যদি সারাজীবন এনালগ ঢাকাতেই থেকে যায়; টিকাটুলি থেকে বইমেলা করে বিদগ্ধদের দলে জোর করে এঁটে যেতে চায়, তাহলে না হয় কালচারের পেডাগগদের কাছ থেকে, রুচি, বিশুদ্ধ সংস্কৃতি, লিবেরেলিজম, নৈতিকতা ইত্যাদি অন্ধের হাতি দর্শনের মতো করে শিখে; আর তা নিয়ে ফেসবুকে আশুরার কান্না জুড়ে দিতে পারতো; ফ্যাসিস্ট হাসিনার কথিত অসম্মানে! কিন্তু ইন্টারনেট যুগের ঢাকা গোটা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। জেন-জি গোটা পৃথিবীতে একই রকম। তাদের সামনে এসব কী অলীক রুচি আর নৈতিকতার গল্প দিচ্ছেন সংস্কৃতি পুরোহিতেরা। এসব ফতোয়া তো আউটডেটেড ধর্ম হুজুরের মতোই আকাশ কুসুম ও অযৌক্তিক।
এত ভং না ধরে স্পষ্ট করে বললেই তো; বাংলাদেশে ছোট স্বৈরাচার এরশাদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, ড ইউনূসসহ সবাইকে অপমান করা যাবে; শুধু শেখ হাসিনাকে ও তার পৃষ্ঠপোষকদের অপমান করা যাবে না! কোনো অজ্ঞাত কারণে শেখ হাসিনা ও তার পৃষ্ঠপোষকদের আর্য আর বাকি সবাইকে অনার্য মনে হয় নাকি!
হাসিনা-তার পারিষদ-পৃষ্ঠপোষকেরা খুব সম্ভব আয়নার সামনে দাঁড়ান না! কী বেরিয়েছে এই কুখ্যাত খুনে হাসিনা ও খুনে দোসরদের যে; তাদের মানসম্মানের দাবি নিয়ে হাজির হয়েছে কিছু ধূসর পাণ্ডুলিপি!
যে হাসিনার গণহত্যার রক্ত এখনো ছোপ ছোপ লেগে আছে বাংলাদেশের জমিনে, যে হাসিনার খুনে বাহিনীর গুলির চিহ্ন নিয়ে আহতরা জীবন্মৃত হয়ে আছে; সামান্য একটা ডাস্টবিনে সেই খুনির ছবি দেখে যাদের সুরুচিতে লেগেছে, তাদের জুলাই-আগস্টের কোনো মৃত্যু কোনো আঘাত ছুয়ে যায়নি নিশ্চিতভাবেই।
আবহমান বাংলাদেশের মানুষ ঘৃণা শব্দটি সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে কাস্ট সিস্টেম দেখে। আর সমকালে আওয়ামী লীগই ঘৃণা শিক্ষা দিয়ে নিজেদের আপার কাস্ট ও বাকিদের লোয়ারকাস্ট হিসেবে প্রতিপন্ন করতে চেষ্টা করেছিল। এ বাদ দিলে বাংলাদেশের মানুষ সতত বন্ধুভাবাপন্ন, সাম্যদর্শনের মানুষ। তাদের এই সরলতা ও অহিংস মনোভাবের সুযোগ নিয়েই শেখ হাসিনা ভারতের সহযোগিতা নিয়ে গজদন্তের মিনার গড়ে তুলেছিলেন।
সে গজদন্তের মিনার ধসে হাসিনা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। তবু তিনি হিটলার, মুসোলিনি, ইয়াহিয়ার মতো বেঁচে থাকবেন জনমানুষের অপছন্দের জগতে। কাজেই দেশে হাসিনার সম্মান দাবি করেছেন ঠিকাছে; ইউরোপে গিয়ে আবার হিটলারের সম্মান দাবি করবেন না; ডাইরেক্ট জেলে ভরে দেবে। ফ্যাসিস্টের প্রতি সহানুভূতি ও সম্মান প্রদর্শন সভ্য জগতে দণ্ডনীয় অপরাধ।

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও শিক্ষক