ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

ফেসবুকে প্রেম, সময় কাটানোর ছলে অপহরণ

  • আপডেট সময় : ০১:৩৩:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

মহানগর প্রতিবেদন : ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। সেই পরিচয় প্রেমের সম্পর্কের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাব। এরপর প্রেমিককে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় সাভারের কবিরপুর এলাকায়। এভাবে বেশ কয়েকবার দেখা-সাক্ষাত করে ফিরেও এসেছেন প্রেমিক সাজ্জাদ।
হঠাৎ আবার দেখা করার কথা বলেন প্রেমিকা লাবিবা দৃষ্টি। এবার দেখা করতে গেলে একান্তে সময় কাটানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় একটি বাসায়। সেই বাসায় ঢুকতেই জিম্মি করা হয় সাজ্জাদকে। আটকে রেখে চাওয়া হয় মুক্তিপণ। প্রেমিকা রুপী এই তরুণীর ফাঁদে পা দিয়ে যে বড় ভুল করেছেন সেটি বুঝতে পারেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাজ্জাদ। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়েছে।
প্রেমিকা দৃষ্টি সাজ্জাদকে বলেন, তোমার বাবার বড় ব্যবসা আছে। কর্মচারীদের অনেক টাকা বেতন দেয়। তার মানে তোমার বাবা অনেক টাকার মালিক। দুই লাখ টাকা না দিলে তোমাকে ছাড়া হবে না। এরপরই পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়।
রাজধানীর নিউমার্কেটের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে সাভার থানার কবিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে কথিত প্রেমিক লুবাবা ও তার স্বামী আকাশ ওরফে পিচ্চি আকাশসহ এই অপরাধ চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিকভাবে অপহরণের দায় স্বীকার করেছে।
প্রতারক চক্রের মূল হোতা লাবিবা দৃষ্টি জানিয়েছে, সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুন্দর সুন্দর ছবি দিয়ে বন্ধুত্বের আহবান জানাতো সে। এমন কি টিকটক অ্যাপেও আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতেন দৃষ্টি। এভাবেই তরুণ সাজ্জাদের সাথে ফেসবুকে পরিচয়। বন্ধুত্ব তৈরি এরপর দেখা করা। এরপর হয়ে যায় প্রেমের সম্পর্ক।
পুলিশ জানিয়েছে সাভার ও গাজীপুরের কালিয়াকৌর থানায় হত্যা, মাদক ও আপহরণের মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রাথমিকভাবে অপরাধের কথা স্বীকারও করেছেন।
প্রেমের পরিচয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স ম কাউয়ুম বলেন, সাভারের কবিরপুর থেকে গ্রেপ্তার এই চক্রের মূলহোতা লুবাবা দৃষ্টি ও তার স্বামী আকাশ ওরফে পিচ্চি আকাশ। তাদের নেতৃত্বে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে এমন অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় চলতো। তিনি আরো বলেন, দৃষ্টির সঙ্গে এই ঘটনার ভিক্টিম সাজ্জাদ আরো বেশ কয়েক বার দেখা করেছে। দেখা করার মধ্য দিয়ে বিশ্বাস অর্জন ও সাজ্জাদের পরিবার সম্পর্কে ধারণা নেয় দৃষ্টি। তিন থেকে চার বার সাজ্জাদ সাভারের কবিরপুরের ওই বাসায় গিয়ে দৃষ্টির সঙ্গে দেখা করে এসেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।
ওসি কাউয়ুম বলেন, চক্রের মূলহোতা আকাশ ও দৃষ্টি তিন মাস আগে বিয়ে করেছে বলে দাবি করেছে। তবে বিয়ের বিষয়টি সঠিক কি না তা যাচাই চলছে। এই চক্রটি এর আগেও একই কায়দায় প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বেশ কয়েকটি অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। বর্তমানে আমাদের কাছে চক্রের একজন রিমান্ডে আছে। তাদের বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। পুলিশ বলছে, এরা একটা অপরাধী চক্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্পর্ক তৈরি করে একটা ফাঁদ তৈরি করছে একটি চক্র। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকার আহবান পুলিশের।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ফেসবুকে প্রেম, সময় কাটানোর ছলে অপহরণ

আপডেট সময় : ০১:৩৩:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

মহানগর প্রতিবেদন : ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। সেই পরিচয় প্রেমের সম্পর্কের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাব। এরপর প্রেমিককে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় সাভারের কবিরপুর এলাকায়। এভাবে বেশ কয়েকবার দেখা-সাক্ষাত করে ফিরেও এসেছেন প্রেমিক সাজ্জাদ।
হঠাৎ আবার দেখা করার কথা বলেন প্রেমিকা লাবিবা দৃষ্টি। এবার দেখা করতে গেলে একান্তে সময় কাটানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় একটি বাসায়। সেই বাসায় ঢুকতেই জিম্মি করা হয় সাজ্জাদকে। আটকে রেখে চাওয়া হয় মুক্তিপণ। প্রেমিকা রুপী এই তরুণীর ফাঁদে পা দিয়ে যে বড় ভুল করেছেন সেটি বুঝতে পারেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাজ্জাদ। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়েছে।
প্রেমিকা দৃষ্টি সাজ্জাদকে বলেন, তোমার বাবার বড় ব্যবসা আছে। কর্মচারীদের অনেক টাকা বেতন দেয়। তার মানে তোমার বাবা অনেক টাকার মালিক। দুই লাখ টাকা না দিলে তোমাকে ছাড়া হবে না। এরপরই পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়।
রাজধানীর নিউমার্কেটের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে সাভার থানার কবিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে কথিত প্রেমিক লুবাবা ও তার স্বামী আকাশ ওরফে পিচ্চি আকাশসহ এই অপরাধ চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিকভাবে অপহরণের দায় স্বীকার করেছে।
প্রতারক চক্রের মূল হোতা লাবিবা দৃষ্টি জানিয়েছে, সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুন্দর সুন্দর ছবি দিয়ে বন্ধুত্বের আহবান জানাতো সে। এমন কি টিকটক অ্যাপেও আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতেন দৃষ্টি। এভাবেই তরুণ সাজ্জাদের সাথে ফেসবুকে পরিচয়। বন্ধুত্ব তৈরি এরপর দেখা করা। এরপর হয়ে যায় প্রেমের সম্পর্ক।
পুলিশ জানিয়েছে সাভার ও গাজীপুরের কালিয়াকৌর থানায় হত্যা, মাদক ও আপহরণের মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রাথমিকভাবে অপরাধের কথা স্বীকারও করেছেন।
প্রেমের পরিচয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স ম কাউয়ুম বলেন, সাভারের কবিরপুর থেকে গ্রেপ্তার এই চক্রের মূলহোতা লুবাবা দৃষ্টি ও তার স্বামী আকাশ ওরফে পিচ্চি আকাশ। তাদের নেতৃত্বে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে এমন অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় চলতো। তিনি আরো বলেন, দৃষ্টির সঙ্গে এই ঘটনার ভিক্টিম সাজ্জাদ আরো বেশ কয়েক বার দেখা করেছে। দেখা করার মধ্য দিয়ে বিশ্বাস অর্জন ও সাজ্জাদের পরিবার সম্পর্কে ধারণা নেয় দৃষ্টি। তিন থেকে চার বার সাজ্জাদ সাভারের কবিরপুরের ওই বাসায় গিয়ে দৃষ্টির সঙ্গে দেখা করে এসেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।
ওসি কাউয়ুম বলেন, চক্রের মূলহোতা আকাশ ও দৃষ্টি তিন মাস আগে বিয়ে করেছে বলে দাবি করেছে। তবে বিয়ের বিষয়টি সঠিক কি না তা যাচাই চলছে। এই চক্রটি এর আগেও একই কায়দায় প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বেশ কয়েকটি অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। বর্তমানে আমাদের কাছে চক্রের একজন রিমান্ডে আছে। তাদের বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। পুলিশ বলছে, এরা একটা অপরাধী চক্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্পর্ক তৈরি করে একটা ফাঁদ তৈরি করছে একটি চক্র। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকার আহবান পুলিশের।