ঢাকা ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকে জীবিকা

  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১০২ বার পড়া হয়েছে

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : প্রয়োজনীয় কাজ শেষে সাধারণত আমরা নষ্ট প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলে দিই। কিন্তু এখন আর সেই প্লাস্টিকের তৈরি নষ্ট জিনিস ফেলনা নয়। পুরাতন নষ্ট প্লাস্টিক কাটিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে চেয়ার, টেবিল, বোতল, পানির পটসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র। নষ্ট প্লাস্টিককে কাটিং করার জন্য সিরাজগঞ্জে গড়ে উঠেছে ‘মেসার্স জিব্রাইল ট্রেডার্স প্লাস্টিক কাটিং অ্যান্ড রিপেয়ারিং ফ্যাক্টরি’। এটির মাধ্যমে কারখানার মালিক নিজের ভাগ্যবদলের পাশাপাশি তৈরি করেছেন একশ’ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান। জানা যায়, ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাট, বাজার ও গ্রামে ঘুরে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ৪০ টাকা কেজি দরে কিনে এনে বিক্রি করেন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চক শিয়ালকোলে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা এ প্লাস্টিক কাটিং কারখানায় পুরাতন প্লাস্টিক কেনা হয়। সরেজমিনে সিরাজগঞ্জ শহর-নলকা সড়কের চক শিয়ালকোলে গড়ে ওঠা মেসার্স জিব্রাইল ট্রেডার্স প্লাস্টিক কাটিং অ্যান্ড রিপেয়ারিং ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখা যায়, নিজের কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। কেউ পুরাতন প্লাস্টিকের বোতল পানিতে ধুয়ে কাটিং করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন। আবার কেউ বোতলগুলোর ছিপি খুলছেন। সেগুলো আবার কাটিং মেশিনে দিয়ে কাটছেন। প্রতিদিন ১০০ জন শ্রমিক ২৭০ থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পেয়ে থাকেন। এই প্লাস্টিক কাটিং কারখানায় কাজ করেন মনোয়ারা খাতুন (৬০)। তিনি পুরাতন প্লাস্টিক বোতল কাটিং করার পর পানিতে ধোয়ার কাজ করে দিনে ২৭০ টাকা মজুরি পান। শুধু মনোয়ারা নয়, তার মতো অনেক শ্রমজীবী নারী এ কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কথা হয় কারখানাটির টেকনিশিয়ান মায়দুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, তার পরিবারে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। এখানে কাজ করে তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছে। তিনি আরও বলেন, কাটিং প্লাস্টিক ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়। রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়ে চেয়ার, টেবিল, বোতল, পানির পট, মুরগির পানির টবসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী আবার নতুন করে তৈরি করা হয়। বিদেশে এগুলো দিয়ে তুলাও তৈরি হয়ে থাকে। কারখানার আরও কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আমরা প্লাস্টিক বাছাই করে মেশিনে দিয়ে কাটিং করাসহ নানা ধরনের কাজ করি। এতেই আমাদের সংসার চলে। কারখানার মালিক জিনহার আলী (৫২) বলেন, পুরাতন বোতলের ব্যবসা বাবার কাছ থেকে শিখেছি। আগে ছোট পরিসরে ছিল। এখন আস্তে আস্তে বেশ বড় হচ্ছে। আমরা মূলত ফেলে দেওয়া পুরাতন প্লাস্টিক কাটিং করি। তারপর ঢাকায় বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করি। এগুলো দেশের বাইরেও চলে যায়। তবে সরকারি সহায়তা পেলে ফেলে দেওয়া বোতলেই অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নিয়ম না মেনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ১৫ গাড়িচালকের নামে ঝিলমিলে প্লট বরাদ্দ

ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকে জীবিকা

আপডেট সময় : ১২:৫৬:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : প্রয়োজনীয় কাজ শেষে সাধারণত আমরা নষ্ট প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলে দিই। কিন্তু এখন আর সেই প্লাস্টিকের তৈরি নষ্ট জিনিস ফেলনা নয়। পুরাতন নষ্ট প্লাস্টিক কাটিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে চেয়ার, টেবিল, বোতল, পানির পটসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র। নষ্ট প্লাস্টিককে কাটিং করার জন্য সিরাজগঞ্জে গড়ে উঠেছে ‘মেসার্স জিব্রাইল ট্রেডার্স প্লাস্টিক কাটিং অ্যান্ড রিপেয়ারিং ফ্যাক্টরি’। এটির মাধ্যমে কারখানার মালিক নিজের ভাগ্যবদলের পাশাপাশি তৈরি করেছেন একশ’ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান। জানা যায়, ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাট, বাজার ও গ্রামে ঘুরে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ৪০ টাকা কেজি দরে কিনে এনে বিক্রি করেন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চক শিয়ালকোলে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা এ প্লাস্টিক কাটিং কারখানায় পুরাতন প্লাস্টিক কেনা হয়। সরেজমিনে সিরাজগঞ্জ শহর-নলকা সড়কের চক শিয়ালকোলে গড়ে ওঠা মেসার্স জিব্রাইল ট্রেডার্স প্লাস্টিক কাটিং অ্যান্ড রিপেয়ারিং ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখা যায়, নিজের কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। কেউ পুরাতন প্লাস্টিকের বোতল পানিতে ধুয়ে কাটিং করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন। আবার কেউ বোতলগুলোর ছিপি খুলছেন। সেগুলো আবার কাটিং মেশিনে দিয়ে কাটছেন। প্রতিদিন ১০০ জন শ্রমিক ২৭০ থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পেয়ে থাকেন। এই প্লাস্টিক কাটিং কারখানায় কাজ করেন মনোয়ারা খাতুন (৬০)। তিনি পুরাতন প্লাস্টিক বোতল কাটিং করার পর পানিতে ধোয়ার কাজ করে দিনে ২৭০ টাকা মজুরি পান। শুধু মনোয়ারা নয়, তার মতো অনেক শ্রমজীবী নারী এ কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কথা হয় কারখানাটির টেকনিশিয়ান মায়দুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, তার পরিবারে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। এখানে কাজ করে তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছে। তিনি আরও বলেন, কাটিং প্লাস্টিক ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়। রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়ে চেয়ার, টেবিল, বোতল, পানির পট, মুরগির পানির টবসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী আবার নতুন করে তৈরি করা হয়। বিদেশে এগুলো দিয়ে তুলাও তৈরি হয়ে থাকে। কারখানার আরও কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আমরা প্লাস্টিক বাছাই করে মেশিনে দিয়ে কাটিং করাসহ নানা ধরনের কাজ করি। এতেই আমাদের সংসার চলে। কারখানার মালিক জিনহার আলী (৫২) বলেন, পুরাতন বোতলের ব্যবসা বাবার কাছ থেকে শিখেছি। আগে ছোট পরিসরে ছিল। এখন আস্তে আস্তে বেশ বড় হচ্ছে। আমরা মূলত ফেলে দেওয়া পুরাতন প্লাস্টিক কাটিং করি। তারপর ঢাকায় বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করি। এগুলো দেশের বাইরেও চলে যায়। তবে সরকারি সহায়তা পেলে ফেলে দেওয়া বোতলেই অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব।