কারিমা ফেরদৌসী কেকা : বছর জুড়ে পারিবারিক ভ্রমণ, শিক্ষা সফর, স্কুলের ক্রীড়া অনুষ্ঠান, বনভোজনসহ কতকিছুই শিশুদের ঘিরে থাকে। তবে ফেলে আসা বছরকে স্মৃতিতে আনলে কেবলই বন্দি দশার কথা মনে হয়।
দুই বছর বয়সী নামিরা প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরেই বন্দি চার দেয়ালের মাঝে। ময়মনসিংহে বাবা মায়ের সঙ্গেই থাকে সে। বাইরের পৃথিবীটা সে জানালা দিয়েই দেখেছে বেশি।
নামিরার মা মাহবুবা নিশাত হ্যালোকে বলেন, “নামিরা বাইরে যেতে চায় প্রায়ই। বেশ কিছুদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম, তখন ভাই-বোনদের সাথে খেলেছে সে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমায় এখন মাঝে মাঝে বাইরে বেড়াতে নিয়ে যাই।”
একইভাবে ঘরবন্দি দিন কেটেছে তিন বছর বয়সী ধৃতিরও। তার মা রিক্তা ম-ল হ্যালোকে বলছিল, “সব সময় ঘরেই থাকত ও। বাইরে যেতে চাইলেও ভয়ে নিয়ে যেতাম না।”
মহামারি শুরুর পর খুব একটা ঘরের বাইরে যায় না বলে জানিয়েছে পাঁচ বছর বয়সী সানভীর। সে বলে, “বসে বসে বল, লুডু দিয়ে খেলেছি।”
চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া নুসরাত জাহান সাবিহা পরিবারের সঙ্গে রাজধানীতে বসবাস করে। সে হ্যালোকে বলে, “ঘরে বসে ভাইয়ের সাথে গল্প করে সময় কেটেছে। খেলাধুলা করেছি ঘরে বসেই। স্কুলে তো যেতাম না। বাসাতেই ছবি আঁকতাম।” আট বছর বয়সী তিনার কাছে বন্দি সময়টা ভালোই লেগেছে। ভাই-বোনদের সাথে খেলাধুলা করে, গল্প করেই বেশিরভাগ সময় কেটেছে তার। তিনার বাড়ি জামালপুরের একটি গ্রামে। বাড়ির আঙিনাতে ভাই-বোনেরা মিলে খেলেছে লুকোচুরি, গানের কলি, কান কথার মতো নানা মজার খেলা। তিনা হ্যালোকে বলে, “আমাদের পরিবারে অনেক ছোটো ছেলেমেয়ে আছে, যাদের সাথে আমি খেলাধুলা করি। মাঝে মাঝে পিকনিকও করি।” সাবিহা আর তিনার মতো শিশুরা পৃথিবী দেখেছে, মাঠে গিয়ে খেলারও সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু, নামিরাহ, ধৃতি আর সানভীরের মতো শিশুদের মাঠে খেলতে যাওয়াটা শুধুই বড়দের মুখে শোনা গল্প যেন। তাদের শৈশবের দীর্ঘ একটা সময় শুধু কেটে গেল বন্দি হয়েই।
ফেলে আসা বছরে শুধুই বন্দিত্বের স্মৃতি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ