ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

ফের বাড়ছে পানি, বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

  • আপডেট সময় : ০২:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

সিলেটের উজানে থাকা ভারতের আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে আবারও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এসব বৃষ্টির পানি ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। এতে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ফলে দীর্ঘ হচ্ছে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। গত ৪/৫ দিনে বন্যার পানি নামতে শুরু করায় অনেকেই নতুন করে ঘরে ফেরার যে আশা করছিলেন তা আবারও শঙ্কার মধ্যে পড়লো। বন্যা কবলিত মানুষরা এখন আবারও বিপদের মুখে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের ৭ জেলার ৯ নদীর ১০ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে আছে। কয়েকদিন আগে ৭ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারির বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জে ১৮৫ মিলিমিটার। এছাড়া সিলেটের ছাতকে ১০০, জাফলংয়ে ৯৩, কানাইঘাটে এবং সুনামগঞ্জের লরেরগড়ে ৮৫, সিলেটের শেওলা ও দক্ষিণবাগে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১২১ এবং জলপাইগুড়িতে ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ছাড়া দেশের সকল প্রধান নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি সিকিম) বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে ওই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী যেমন, তিস্তা, আত্রাই, ধরলা, দুধকুমার, করতোয়া, টাঙ্গন, পুনর্ভবা ও কুলিখ নদীর পানি সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে এবং দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় সিলেট জেলা ও মহানগরে ৪১ হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এসব ঘরবাড়ির তালিকা প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এদিকে সারাদেশে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে সিলেট বিভাগে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ১৭ মে থেকে ২৮ জুন দুপুর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৯২ জন হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ঘটনা এবং বিভিন্ন রোগে এদের মৃত্যু হয়। এছাড়া বন্যার কারণে নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে নয় হাজার ৪৯৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ১৫২ জন। এতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরটিআই (চোখের রোগ) রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮১ জন। এক্ষেত্রে কারও মৃত্যুর খবর নেই। অন্যদিকে বজ্রপাতে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ১২ জন। এতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৬৬ জনের। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৭ মে থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত বন্যায় রংপুর বিভাগে পাঁচ, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩১ ও সিলেট বিভাগে ৫৫ এবং ঢাকা বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়। জেলাভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে সুনামগঞ্জ।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ফের বাড়ছে পানি, বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

আপডেট সময় : ০২:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২

সিলেটের উজানে থাকা ভারতের আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে আবারও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এসব বৃষ্টির পানি ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। এতে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ফলে দীর্ঘ হচ্ছে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। গত ৪/৫ দিনে বন্যার পানি নামতে শুরু করায় অনেকেই নতুন করে ঘরে ফেরার যে আশা করছিলেন তা আবারও শঙ্কার মধ্যে পড়লো। বন্যা কবলিত মানুষরা এখন আবারও বিপদের মুখে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের ৭ জেলার ৯ নদীর ১০ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে আছে। কয়েকদিন আগে ৭ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারির বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জে ১৮৫ মিলিমিটার। এছাড়া সিলেটের ছাতকে ১০০, জাফলংয়ে ৯৩, কানাইঘাটে এবং সুনামগঞ্জের লরেরগড়ে ৮৫, সিলেটের শেওলা ও দক্ষিণবাগে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১২১ এবং জলপাইগুড়িতে ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ছাড়া দেশের সকল প্রধান নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি সিকিম) বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে ওই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী যেমন, তিস্তা, আত্রাই, ধরলা, দুধকুমার, করতোয়া, টাঙ্গন, পুনর্ভবা ও কুলিখ নদীর পানি সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে এবং দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় সিলেট জেলা ও মহানগরে ৪১ হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এসব ঘরবাড়ির তালিকা প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এদিকে সারাদেশে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে সিলেট বিভাগে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ১৭ মে থেকে ২৮ জুন দুপুর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৯২ জন হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ঘটনা এবং বিভিন্ন রোগে এদের মৃত্যু হয়। এছাড়া বন্যার কারণে নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে নয় হাজার ৪৯৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ১৫২ জন। এতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরটিআই (চোখের রোগ) রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮১ জন। এক্ষেত্রে কারও মৃত্যুর খবর নেই। অন্যদিকে বজ্রপাতে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ১২ জন। এতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৬৬ জনের। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৭ মে থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত বন্যায় রংপুর বিভাগে পাঁচ, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩১ ও সিলেট বিভাগে ৫৫ এবং ঢাকা বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়। জেলাভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে সুনামগঞ্জ।