ক্রীড়া ডেস্ক: দেশ থেকে পালিয়ে যেতে পারেন- এমন গুঞ্জনে বিপিএলে রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক শফিকুর রহমানকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই সময় তিনি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিন কিস্তিতে সমস্ত টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার করেছেন।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সকালে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। গতকাল পর্যন্ত ২৫ শতাংশ টাকা পরিশোধের কথা ছিল রাজশাহীর। সেটি করতে না পারায় তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করার খবর কানে আসলে, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি আরো গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের পালিয়ে যাবার গুঞ্জন উঠলে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সরকার।’
বিজ্ঞপ্তির শুরুতে বলা হয়, ‘বিপিএল ২০২৫ কে ঘিরে বিসিবি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ আয়োজনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে আন্তরিক প্রয়াস প্রতীয়মান হলেও, টুর্নামেন্টটির ফ্রাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহী তার দলের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একের পর এক চুক্তি লঙ্ঘন করে টুর্নামেন্ট তথা রাষ্ট্রের সম্মান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাদের এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রচার হলে বিষয়টি নিষ্পত্তিকল্পে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।’
দুই দিন আগে ক্রীড়া উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাওনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে সরকার। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই তাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘উপদেষ্টা মহোদয়কে ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দলের ৫০ শতাংশ পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি; বরং গণমাধ্যমে উঠে এসেছে অনিয়মের নানান অভিযোগ। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করার খবরও কানে আসলে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি আরও গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের পালিয়ে যাবার গুঞ্জন উঠলে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সরকার। এমতাবস্থায়, দলটির এমন টালমাটাল অবস্থা সামাল দিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের পাওনা বুঝিয়ে দিতে ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দলটির বিতর্কিত মালিক শফিকুর রহমানকে। সংকট নিরসনে সমাধান জানতে চাইলে, নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে ২৫ শতাংশ হারে ৩, ৭ এবং ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তথা তিন কিস্তিতে দলের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
দলটির মালিক পারিশ্রমিক পাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে, এ ছাড়া প্রতি কিস্তিতে খেলোয়াড় ছাড়াও দল সংশ্লিষ্ট সকলেই অর্থ বুঝে পাবেন বলেও নিশ্চয়তা দেন শফিক। অন্যথায়, তার বিরুদ্ধে যে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে মর্মে জানিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া বিপিএলে নানা অনিয়মের আদ্যপান্ত অনুসন্ধানে কাজ করছে একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।