ঢাকা ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধাক্কা

  • আপডেট সময় : ০২:২৮:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বেশ কয়েক মাস ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও এবার তা কমেছে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে দেশে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি বছর জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) ৮ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪০১ কোটি ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৩৪৩ কেটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ে ৫৭ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২৪ কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। অন্যান্য সময়ের মতো এবারও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২ কোটি ৩১ লাখ ডলার। এরপরেই অগ্রণী ব্যাংকের অবস্থান। ব্যাংকটির মাধ্যমে ১৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ১৯ লাখ ডলার, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৫ লাখ ডলার, সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলার এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছর ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রবাসীদের উদ্দেশে জানায়, বৈধপথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করুন, প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর জন্য এভাবে আহ্বান জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধপথে) প্রেরণ করা আইনত দ-নীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রবাসীদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধপথে না পাঠিয়ে বৈধপথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। অবৈধপথে রেমিট্যান্স প্রেরণের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বিএফআইইউ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এছাড়া রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে- বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, সরকার রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজীকরণ পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সাথে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধকরণ এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল এবং ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার ডলার বা সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার জন্য উদ্যোক্তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধাক্কা

আপডেট সময় : ০২:২৮:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বেশ কয়েক মাস ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও এবার তা কমেছে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে দেশে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি বছর জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) ৮ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪০১ কোটি ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৩৪৩ কেটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ে ৫৭ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২৪ কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। অন্যান্য সময়ের মতো এবারও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২ কোটি ৩১ লাখ ডলার। এরপরেই অগ্রণী ব্যাংকের অবস্থান। ব্যাংকটির মাধ্যমে ১৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ১৯ লাখ ডলার, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৫ লাখ ডলার, সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলার এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছর ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রবাসীদের উদ্দেশে জানায়, বৈধপথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করুন, প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর জন্য এভাবে আহ্বান জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধপথে) প্রেরণ করা আইনত দ-নীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রবাসীদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধপথে না পাঠিয়ে বৈধপথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। অবৈধপথে রেমিট্যান্স প্রেরণের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বিএফআইইউ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এছাড়া রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে- বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, সরকার রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজীকরণ পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সাথে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধকরণ এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল এবং ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার ডলার বা সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার জন্য উদ্যোক্তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।