ঢাকা ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

ফি’র ভাগ না পাওয়ায় ২ মাস বন্ধ জন্মনিবন্ধন, নাগরিকেরা জিম্মি

  • আপডেট সময় : ০১:৪৫:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০২৩
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :দুই বছরের শিশু আব্দুর রহমান। ‘টিউবারকুলার মেনিনজাইটিস’ রোগে আক্রান্ত। এ রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে টানা ২৩ দিন আইসিইউতে থাকতে হয়েছে। এখন ছেলেকে উন্নত চিকিৎসা দিতে বিদেশে নিয়ে যেতে চান বাবা ইমাম হাসান। কিন্তু সিটি করপোরেশনে জন্মনিবন্ধন করাতে না পারায় ছেলের পাসপোর্ট করাতে পারছেন না তিনি। ইমাম হাসানের বাসা রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া এলাকায়। এ এলাকাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন। ইমান হাসান বলেন, দুই মাস আগে ছেলে আব্দুর রহমানের মাথায় টিউবারকুলার মেনিনজাইটিস রোগ ধরা পড়ে। তখন থেকেই ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। কিন্তু ছেলের জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। দুই মাস ধরে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে ডিএসসিসি। তাদের অনেক অনুরোধ করলেও জন্মনিবন্ধন করে দেয়নি। এখন ছেলের চিকিৎসা নিয়ে দিশেহারা।
জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধের অভিযোগ স্বীকারও করেছেন ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, আগে জন্মনিবন্ধনের ফি হাতে নেওয়া হতো এবং সপ্তাহ শেষে চালান আকারে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতো ডিএসসিসি। আর ফির আরেকাংশ সিটি করপোরেশনের তফসিলভুক্ত আয় হিসেবেই গণ্য করা হতো। গত এপ্রিলে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের ফি পরিশোধে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন)। এ ই-পেমেন্ট চালু হওয়ায় সব অর্থ সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। তখন এই খাতে ডিএসসিসির আয় বন্ধ হয়ে যায়। এই আয় বা অর্থ আদায়ে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের ওপর চাপ বাড়াতে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দেন ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। এখন জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য কেউ ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে গেলে নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে বলে তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
সম্প্রতি ডিএসসিসির অঞ্চল-১ এর কার্যালয় (নগর ভবনে), অঞ্চল-৩ (লালবাগ) ও অঞ্চল-৫ (সায়েদাবাদ) গিয়ে বহু মানুষকে জন্মনিবন্ধন করতে না পেরে ফেরত যেতে দেখা যায়। তাদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন একটি সেবা সংস্থা। অথচ তারা নাগরিকদের জিম্মি করে তফসিলভুক্ত আয় বা রাজস্ব আয় করার চেষ্টা করছে।
গত ৩০ জুলাই দুপুর ১২টায় অঞ্চল-৫ এর কার্যালয়ে এক বছরের মেয়ের জন্মনিবন্ধন করাতে যান গোলাপবাগের আসমা বেগম। কিন্তু জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ অজুহাতে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসমা বেগম জানান, এর আগেও তিনি মেয়ের জন্মনিবন্ধন করতে এই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তখন বলা হয়েছিল, সার্ভার নষ্ট। এখন গেলে বলছে, জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমই বন্ধ। এটি নাগরিকদের হয়রানি ছাড়া আর কিছুই নয়।
ডিএসসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার বলেন, জন্মনিবন্ধন বন্ধের বিষয়টির সমাধানে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কথা বলেছেন। এখন বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশাকরি শিগগির নাগরিকদের জন্মনিবন্ধন সেবা দিতে পারবো।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফি নিয়ে জটিলতা: ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজে সিটি করপোরেশনের আয়ের চেয়ে অনেক বেশি ব্যয় হয়। জনবল, কার্যালয়, সনদের জন্য কাগজ, প্রিন্টিংসহ বিভিন্ন খাতে বছরে এক কোটি টাকার বেশি খরচ রয়েছে। তাই এতদিন জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন ফি বাবদ আয়ের একাংশ সিটি করপোরেশনের তফসিলভুক্ত আয় হিসেবেই গণ্য করা হতো। কিন্তু ই-পেমেন্ট চালু হওয়ার পর থেকে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য যারা আবেদন করেন, তাদের ফি অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। এখন এই খাত থেকে যদি সিটি করপোরেশনের কোনো আয় না হয়, তাহলে এ খাতে সিটি করপোরেশন খরচ করবে কেন। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন) এবং ডিএসসিসি দুটোই স্থানীয় সরকার বিভাগের সংস্থা। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় সূত্র জানায়, ডিএসসিসির আলাদা ১০টি অঞ্চল থেকে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি অঞ্চল থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০টি জন্মনিবন্ধন করা হতো। এই হিসাবে ১০টি অঞ্চলে দিনে চারশ জনের জন্মনিবন্ধন সেবা দেওয়া হয়। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে স্কুলে ভর্তির সময় জন্মনিবন্ধনের আবেদনের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। তবে গত দুই মাস ধরে এ সেবা বন্ধ থাকায় বহু লোক ফিরে যাচ্ছে। অনেকে নিরুপায় হয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে যোগাযোগ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ই-পেমেন্টে সব অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস আগেই স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের কাছে আপত্তি জানিয়েছেন ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। পরে মন্ত্রী তার একান্ত সচিব মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকীকে এ সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। এ নিয়ে তারা কয়েকবার বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান করতে পারেননি। যদিও জন্ম এবং মৃত্যুনিবন্ধনের ফি সিটি করপোরেশন তফসিলভুক্ত আয় হিসেবেই গণ্য করার আইনগত সুযোগ নেই।
মোহাম্মদ নূর আলম সিদ্দিকীর টেলিফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি। তবে রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান জাগো নিউজকে জানান, বিষয়টি নিয়ে ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা তাদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। এখন এটি সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তিনি বলেন, নাগরিকদের সুবিধার জন্য আমরা অনলাইন সেবা চালু করেছি। দেশের সব সিটি করপোরেশন (১২টি), পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন ফি অনলাইনেই নেওয়া হচ্ছে। একমাত্র ডিএসসিসি তা মানতে নারাজ। তারা আগের মতোই চালান আকারে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে চায়।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

ফি’র ভাগ না পাওয়ায় ২ মাস বন্ধ জন্মনিবন্ধন, নাগরিকেরা জিম্মি

আপডেট সময় : ০১:৪৫:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :দুই বছরের শিশু আব্দুর রহমান। ‘টিউবারকুলার মেনিনজাইটিস’ রোগে আক্রান্ত। এ রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে টানা ২৩ দিন আইসিইউতে থাকতে হয়েছে। এখন ছেলেকে উন্নত চিকিৎসা দিতে বিদেশে নিয়ে যেতে চান বাবা ইমাম হাসান। কিন্তু সিটি করপোরেশনে জন্মনিবন্ধন করাতে না পারায় ছেলের পাসপোর্ট করাতে পারছেন না তিনি। ইমাম হাসানের বাসা রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া এলাকায়। এ এলাকাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন। ইমান হাসান বলেন, দুই মাস আগে ছেলে আব্দুর রহমানের মাথায় টিউবারকুলার মেনিনজাইটিস রোগ ধরা পড়ে। তখন থেকেই ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। কিন্তু ছেলের জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। দুই মাস ধরে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে ডিএসসিসি। তাদের অনেক অনুরোধ করলেও জন্মনিবন্ধন করে দেয়নি। এখন ছেলের চিকিৎসা নিয়ে দিশেহারা।
জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধের অভিযোগ স্বীকারও করেছেন ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, আগে জন্মনিবন্ধনের ফি হাতে নেওয়া হতো এবং সপ্তাহ শেষে চালান আকারে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতো ডিএসসিসি। আর ফির আরেকাংশ সিটি করপোরেশনের তফসিলভুক্ত আয় হিসেবেই গণ্য করা হতো। গত এপ্রিলে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের ফি পরিশোধে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন)। এ ই-পেমেন্ট চালু হওয়ায় সব অর্থ সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। তখন এই খাতে ডিএসসিসির আয় বন্ধ হয়ে যায়। এই আয় বা অর্থ আদায়ে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের ওপর চাপ বাড়াতে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দেন ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। এখন জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য কেউ ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে গেলে নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে বলে তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
সম্প্রতি ডিএসসিসির অঞ্চল-১ এর কার্যালয় (নগর ভবনে), অঞ্চল-৩ (লালবাগ) ও অঞ্চল-৫ (সায়েদাবাদ) গিয়ে বহু মানুষকে জন্মনিবন্ধন করতে না পেরে ফেরত যেতে দেখা যায়। তাদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন একটি সেবা সংস্থা। অথচ তারা নাগরিকদের জিম্মি করে তফসিলভুক্ত আয় বা রাজস্ব আয় করার চেষ্টা করছে।
গত ৩০ জুলাই দুপুর ১২টায় অঞ্চল-৫ এর কার্যালয়ে এক বছরের মেয়ের জন্মনিবন্ধন করাতে যান গোলাপবাগের আসমা বেগম। কিন্তু জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ অজুহাতে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসমা বেগম জানান, এর আগেও তিনি মেয়ের জন্মনিবন্ধন করতে এই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তখন বলা হয়েছিল, সার্ভার নষ্ট। এখন গেলে বলছে, জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমই বন্ধ। এটি নাগরিকদের হয়রানি ছাড়া আর কিছুই নয়।
ডিএসসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার বলেন, জন্মনিবন্ধন বন্ধের বিষয়টির সমাধানে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কথা বলেছেন। এখন বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশাকরি শিগগির নাগরিকদের জন্মনিবন্ধন সেবা দিতে পারবো।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফি নিয়ে জটিলতা: ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজে সিটি করপোরেশনের আয়ের চেয়ে অনেক বেশি ব্যয় হয়। জনবল, কার্যালয়, সনদের জন্য কাগজ, প্রিন্টিংসহ বিভিন্ন খাতে বছরে এক কোটি টাকার বেশি খরচ রয়েছে। তাই এতদিন জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন ফি বাবদ আয়ের একাংশ সিটি করপোরেশনের তফসিলভুক্ত আয় হিসেবেই গণ্য করা হতো। কিন্তু ই-পেমেন্ট চালু হওয়ার পর থেকে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য যারা আবেদন করেন, তাদের ফি অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। এখন এই খাত থেকে যদি সিটি করপোরেশনের কোনো আয় না হয়, তাহলে এ খাতে সিটি করপোরেশন খরচ করবে কেন। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন) এবং ডিএসসিসি দুটোই স্থানীয় সরকার বিভাগের সংস্থা। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় সূত্র জানায়, ডিএসসিসির আলাদা ১০টি অঞ্চল থেকে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি অঞ্চল থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০টি জন্মনিবন্ধন করা হতো। এই হিসাবে ১০টি অঞ্চলে দিনে চারশ জনের জন্মনিবন্ধন সেবা দেওয়া হয়। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে স্কুলে ভর্তির সময় জন্মনিবন্ধনের আবেদনের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। তবে গত দুই মাস ধরে এ সেবা বন্ধ থাকায় বহু লোক ফিরে যাচ্ছে। অনেকে নিরুপায় হয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে যোগাযোগ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ই-পেমেন্টে সব অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস আগেই স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের কাছে আপত্তি জানিয়েছেন ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। পরে মন্ত্রী তার একান্ত সচিব মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকীকে এ সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। এ নিয়ে তারা কয়েকবার বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান করতে পারেননি। যদিও জন্ম এবং মৃত্যুনিবন্ধনের ফি সিটি করপোরেশন তফসিলভুক্ত আয় হিসেবেই গণ্য করার আইনগত সুযোগ নেই।
মোহাম্মদ নূর আলম সিদ্দিকীর টেলিফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি। তবে রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান জাগো নিউজকে জানান, বিষয়টি নিয়ে ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা তাদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। এখন এটি সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তিনি বলেন, নাগরিকদের সুবিধার জন্য আমরা অনলাইন সেবা চালু করেছি। দেশের সব সিটি করপোরেশন (১২টি), পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন ফি অনলাইনেই নেওয়া হচ্ছে। একমাত্র ডিএসসিসি তা মানতে নারাজ। তারা আগের মতোই চালান আকারে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে চায়।