ঢাকা ০৮:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ফায়ার ফাইটারদের ওপর যেন আক্রমণ না হয়: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২২
  • ১৩১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোথাও আগুন লাগলে যারা নেভানোর দায়িত্ব পালন করতে যান, তারা যেন হামলার শিকার না হন, সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল রোববার দেশের বিভিন্ন স্থানে নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আগুন লাগল, সেখানে গেল ফায়ার ফাইটাররা গাড়ি নিয়ে। ওমনি গাড়ির উপর আক্রমণ, গাড়িতেই আগুন ধরিয়ে দিল। এই ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে।
“যারা এই রকম করবে সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে। কারণ আমি…বহু ঘটনা এমন ঘটে বলেই আজকে আমি এই কথাগুলো বললাম।”
অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, “উদ্ধার কাজে যারা যাবে, তাদের ওপর আক্রমণ যারা করতে আসে, তারা তো আসলে মানুষের শত্রু হয়ে যায়। “কাজেই সেই দিকটাও আপনাদের বিশেষভাবে দেখতে হবে এবং এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।”
যখনই কোনো অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা বা প্রকল্প নেওয়া হবে, অগ্নি নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত করতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং প্রকৌশলীদের তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।
“অর্থাৎ তাদের গাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা এবং পানি পাওয়ার ব্যবস্থা। এই পানির প্রাপ্যতা যেন নিশ্চিত হয়, সেটার ব্যবস্থা করতে হবে। জলাধার ও বৃষ্টির পানি যাতে সংরক্ষণ করা থাকে, সেই ব্যবস্থাটা সংরক্ষণ করতে হবে এবং রক্ষা করতে হবে।”
বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনা দেখা দিলে সেখান থেকে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা রয়েছে কিনা সেটা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরামর্শ দেন তিনি। প্রতিটি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাটা একান্তভাবে জরুরি। “আমাদের দেশে এমনও দেখা যাচ্ছে যে লঞ্চে বা স্টিমারে আগুন লেগে যাচ্ছে। কাজেই এই যে আমাদের জলযানগুলো, এত বড় বড় বিশাল জলযান, কিন্তু সেখানেও অগ্নি নির্বাপনের তেমন কোন সুযোগ থাকে না।”
ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও জলাধার যেন থাকে, সেই ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই একান্তভাবে দরকার। সেখানে পানির অভাবে বা এমনভাবে তৈরি করা হল যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারছে না…।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানায় আগুন লাগলে সেখানে তাদের কী করণীয় বা আগুন নেভানোর কী ব্যবস্থা আছে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
আগুন লাগলে যারা নেভানোর দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষ ধরনের মোটর সাইকেলসহ আধুনিক ও উন্নত যন্ত্রপাতি কিনে দিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে সেগুলোরও যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আপনারা ব্যবস্থাটা নেবেন। এটাই আমার অনুরোধ থাকবে।”
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনগুলো দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করবে এবং তাদের জীবনের নিরাপত্তা দেবে।
“যারা দুঃসময়ে দুর্যোগে আপনাদের পাশে দাঁড়ায়, তাদের ভালো মন্দ দেখা এবং এই সমস্ত যত গাড়ি, ঘোড়া, যন্ত্রপাতি যা-ই আমরা কিনেছি এগুলো সুরক্ষিত রাখা, সেগুলোর যতœ করা এটা কিন্তু সকলের দায়িত্ব।”
সরকারপ্রধান বলেন, “যারা এখানে কাজ করবেন, কর্মরত আছেন তাদেরও যেমন দায়িত্ব, পাশপাশি এটা জনগণেরও দায়িত্ব।
“কারণ হচ্ছে, এটা জনগণের মঙ্গলের জন্য ব্যবহার হয়, নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার হয়। কাজেই সেদিকে সবাই যতœবান হবেন সেই আশা আমি পোষণ করি।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ফায়ার ফাইটারদের ওপর যেন আক্রমণ না হয়: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোথাও আগুন লাগলে যারা নেভানোর দায়িত্ব পালন করতে যান, তারা যেন হামলার শিকার না হন, সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল রোববার দেশের বিভিন্ন স্থানে নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আগুন লাগল, সেখানে গেল ফায়ার ফাইটাররা গাড়ি নিয়ে। ওমনি গাড়ির উপর আক্রমণ, গাড়িতেই আগুন ধরিয়ে দিল। এই ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে।
“যারা এই রকম করবে সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে। কারণ আমি…বহু ঘটনা এমন ঘটে বলেই আজকে আমি এই কথাগুলো বললাম।”
অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, “উদ্ধার কাজে যারা যাবে, তাদের ওপর আক্রমণ যারা করতে আসে, তারা তো আসলে মানুষের শত্রু হয়ে যায়। “কাজেই সেই দিকটাও আপনাদের বিশেষভাবে দেখতে হবে এবং এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।”
যখনই কোনো অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা বা প্রকল্প নেওয়া হবে, অগ্নি নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত করতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং প্রকৌশলীদের তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।
“অর্থাৎ তাদের গাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা এবং পানি পাওয়ার ব্যবস্থা। এই পানির প্রাপ্যতা যেন নিশ্চিত হয়, সেটার ব্যবস্থা করতে হবে। জলাধার ও বৃষ্টির পানি যাতে সংরক্ষণ করা থাকে, সেই ব্যবস্থাটা সংরক্ষণ করতে হবে এবং রক্ষা করতে হবে।”
বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনা দেখা দিলে সেখান থেকে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা রয়েছে কিনা সেটা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরামর্শ দেন তিনি। প্রতিটি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাটা একান্তভাবে জরুরি। “আমাদের দেশে এমনও দেখা যাচ্ছে যে লঞ্চে বা স্টিমারে আগুন লেগে যাচ্ছে। কাজেই এই যে আমাদের জলযানগুলো, এত বড় বড় বিশাল জলযান, কিন্তু সেখানেও অগ্নি নির্বাপনের তেমন কোন সুযোগ থাকে না।”
ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও জলাধার যেন থাকে, সেই ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই একান্তভাবে দরকার। সেখানে পানির অভাবে বা এমনভাবে তৈরি করা হল যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারছে না…।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানায় আগুন লাগলে সেখানে তাদের কী করণীয় বা আগুন নেভানোর কী ব্যবস্থা আছে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
আগুন লাগলে যারা নেভানোর দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষ ধরনের মোটর সাইকেলসহ আধুনিক ও উন্নত যন্ত্রপাতি কিনে দিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে সেগুলোরও যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আপনারা ব্যবস্থাটা নেবেন। এটাই আমার অনুরোধ থাকবে।”
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনগুলো দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করবে এবং তাদের জীবনের নিরাপত্তা দেবে।
“যারা দুঃসময়ে দুর্যোগে আপনাদের পাশে দাঁড়ায়, তাদের ভালো মন্দ দেখা এবং এই সমস্ত যত গাড়ি, ঘোড়া, যন্ত্রপাতি যা-ই আমরা কিনেছি এগুলো সুরক্ষিত রাখা, সেগুলোর যতœ করা এটা কিন্তু সকলের দায়িত্ব।”
সরকারপ্রধান বলেন, “যারা এখানে কাজ করবেন, কর্মরত আছেন তাদেরও যেমন দায়িত্ব, পাশপাশি এটা জনগণেরও দায়িত্ব।
“কারণ হচ্ছে, এটা জনগণের মঙ্গলের জন্য ব্যবহার হয়, নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার হয়। কাজেই সেদিকে সবাই যতœবান হবেন সেই আশা আমি পোষণ করি।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।