নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ফুটপাতের শতশত দোকান গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকার হকাররা।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব ও সিটি করপোরেশনের যৌথ অভিযানে ফার্মগেট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। ফার্মগেটের গ্রিনরোড থেকে শুরু করে খামারবাড়ি পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। এতে ফুটপাত ও সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা কয়েকশো দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাবের সদস্য দুপুর ১২টার দিকে ফার্মগেটের গ্রিণ সুপার মার্কেটের সামনে থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। প্রায় চার ঘণ্টা চলা এ অভিযানে আনন্দ সিনেমা হল, ফার্মগেট সুপার মার্কেট, তেজগাঁও কলেজের সামনে ও খামারবাড়ি এলাকায় অবৈধভাবে সড়ক-ফুটপাতে গড়ে তোলা প্রায় হাজারখানেক দোকানপাট সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে বিকাল ৩টার দিকে উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে কয়েকশ’ হকার। হকাররা ফার্মগেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ৩টার দিকে খামারবাড়ি মোড়ে সড়ক অবরোধ করে। সেখানে কয়েটি গাড়ির ওপর হামলা করতে দেখা গেছে। পরে তারা সেখান থেকে আবার তেজগাঁও কলেজের সামনে মিছিল নিয়ে প্রায় আধাঘণ্টা বিক্ষোভ করে আনন্দ সিনেমা হলের সামনে চলে যায়। বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হকাররা আনন্দ সিনেমা হলের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন। এ সময় মো. সিরাজুল ইসলাম নামে এক হকার বলেন, ‘আমরা পেটের দায়ে রাস্তায় দোকান করি। আমাদের সরিয়ে দিলে কোথায় যাবো। কী করে খাবো, কীভাবে সংসার চালাবো।’
চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে মো. শফিক নাম আরেকজন বলেন, ‘আগে ফার্মগেটের প্রতিটা দোকান থেকে পুলিশসহ বিভিন্নজন চাঁদা নিতো। তখন কোনও সমস্যা হতো না। এখন কেউ চাঁদা নিচ্ছে না, এখন আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তাহলে কী তারা আবার চাঁদা নিতে চায়! এটা হতে দেওয়া হবে না। আমাদের পেটে লাঠি দিলে, আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।’ ফুটপাত উচ্ছেদের বিষয়ে ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, ‘শহরের মধ্যে ফার্মগেট অতি ব্যস্ততম একটি এলাকা। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। ফুটপাত ও সড়ক দখলে থাকায় জনসাধারণের চলাচলের ভোগান্তির পাশাপাশি অপরাধ তৎপরতা বাড়ছে। তাই ফার্মগেট এলাকার ফুটপাত উচ্ছেদ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সোমবার (১১ নভেম্বর) ফুটপাত উচ্ছেদের বিষয়ে মাইকিং করা হয়েছিল। তাদের চলে যেতে ঘোষণা দেওয়া হয়। অথচ তারা দোকানপাট সরিয়ে নেয়নি। তাই মঙ্গলবার পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব ও সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালিয়ে সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়।’