ঢাকা ০৩:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

প্লাস্টিক-পলিথিন নিষিদ্ধে সমন্বয় সেল গঠনসহ ১৫ দফা দাবি বাপার

  • আপডেট সময় : ১২:০৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুন ২০২৩
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধে সমন্বয় সেল গঠনসহ ১৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে বাপা কর্তৃক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংগঠনের নেতারা এসব দাবি জানান।
সভায় বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, ১৯০৭ সালে প্লাস্টিক আবিষ্কার হলেও এর ব্যবহার বাড়তে থাকে ১৯৫০ সাল থেকে। বর্তমানে প্রকৃতিতে তার আগ্রাসন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইউএনইপির তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯.২ বিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, প্রতিবছর দেশে ১০ লাখ ৯৫ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। তিনি বলেন, প্রকৃতিতে মিশে প্লাস্টিক খাদ্য চক্রের মাধ্যমে উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের দেহে চলে এসেছে। যা জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। প্লাস্টিক সমস্যার সমাধান না করলে প্রাণী ও মানবসমাজ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
বাপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক এম. ফিরোজ আহমেদ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাপার নির্বাহী সদস্য ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাইলোজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব হোসেন, এসডুর হেড অব প্রোগ্রাম, মনোয়ারুল ইসলাম, স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুখ।
প্লাস্টিক-পলিথিন নিষিদ্ধকরণে বাপার ১৫ দফা দাবি:
১। প্লাস্টিক ও পলিথিন জাত পণ্যের নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধকরণ আইনের সঠিক, দ্রুত, নির্মোহ ও কঠোর বাস্তবায়ন করতে হবে।
২। পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ আইনের সফল প্রয়োগের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সমন্বয়ে সেল গঠন করতে হবে।
৩। চকচকে প্যাকেটজাত খাদ্যসহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্যাকেটজাতকরণে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহারের ওপরে উচ্চ কর আরোপের বিধান প্রবর্তন করা।
৪। চক্রাকার অর্থনীতির অধীনে উৎপাদককেই বর্জ্য আহরণের প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার বিষয়ে বাধ্য বা প্রণোদিত করার কার্যক্রমের দাবি জানাচ্ছি।
৫। দূষণকারীর জরিমানার ধারণা কার্যকরের পাশাপাশি উৎপাদকের বেপরোয়া পলিথিন-প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সংযত আচরণও নিশ্চিত হবে।
৬। অবৈধ টিস্যু পলিথিন ও শপিং ব্যাগ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে অবিলম্বে তাদের কারখানা বন্ধ করার জন্য সরকারি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কোনো যুক্তিতেই পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া যাবে না।
৭। পলিব্যাগ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাট, কাপড়জাত সামগ্রীর উৎপাদনে সহযোগিতা ও উৎসাহী করতে হবে।
৮। পণ্য বাজারজাতকরণে প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। প্লাস্টিক ও পলিথিনের কাঁচামাল অপব্যবহার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্লাস্টিকের কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি ও প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধান নির্ভর সামগ্রী/কাঁচামালের ওপর শুল্ক হ্রাস করতে হবে।
৯। পানি ও কোমল পানীয় বাজারজাতকরণে প্লাস্টিক বোতল নিষিদ্ধ করে কাঁচের বোতলের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্লাস্টিক পাত্রের ব্যবহার বন্ধ করে দেশীয় মাটি, কাঁচ ও সিরামিকের পাত্র ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
১০। পলিথিনের বিকল্প পরিবেশ বান্ধব কাগজ, চট ও কাপড়ের শপিং ব্যাগ ব্যবহারে সরকারি ও বেসরকারি জনসচেতনতামূলক প্রচার নিয়মিতকরণ ও বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। পলিথিন প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেডিও, টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায় ব্যাপক ও নিয়মিত প্রচার চালাতে হবে।
১১। চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যতীত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ নিশ্চিত করতে হবে।
১২। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যাগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সরাসরি আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
১৩। দেশের ঐতিহ্যবাহী পাট শিল্প পুনর্জীবিত করতে হবে। পাটশিল্প বিকাশে আরও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
১৪। যত্রতত্র প্লাস্টিক বা পলিথিন জাতীয় বর্জ্য বা আবর্জনা ফেলার ক্ষেত্রে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
১৫। থ্রি আর (রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল) এর প্রতি জোর দিতে হবে। প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য এ সংক্রান্ত অ্যাকশন প্ল্যানের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্লাস্টিক-পলিথিন নিষিদ্ধে সমন্বয় সেল গঠনসহ ১৫ দফা দাবি বাপার

আপডেট সময় : ১২:০৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধে সমন্বয় সেল গঠনসহ ১৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে বাপা কর্তৃক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংগঠনের নেতারা এসব দাবি জানান।
সভায় বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, ১৯০৭ সালে প্লাস্টিক আবিষ্কার হলেও এর ব্যবহার বাড়তে থাকে ১৯৫০ সাল থেকে। বর্তমানে প্রকৃতিতে তার আগ্রাসন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইউএনইপির তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯.২ বিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, প্রতিবছর দেশে ১০ লাখ ৯৫ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। তিনি বলেন, প্রকৃতিতে মিশে প্লাস্টিক খাদ্য চক্রের মাধ্যমে উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের দেহে চলে এসেছে। যা জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। প্লাস্টিক সমস্যার সমাধান না করলে প্রাণী ও মানবসমাজ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
বাপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক এম. ফিরোজ আহমেদ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাপার নির্বাহী সদস্য ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাইলোজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব হোসেন, এসডুর হেড অব প্রোগ্রাম, মনোয়ারুল ইসলাম, স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুখ।
প্লাস্টিক-পলিথিন নিষিদ্ধকরণে বাপার ১৫ দফা দাবি:
১। প্লাস্টিক ও পলিথিন জাত পণ্যের নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধকরণ আইনের সঠিক, দ্রুত, নির্মোহ ও কঠোর বাস্তবায়ন করতে হবে।
২। পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ আইনের সফল প্রয়োগের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সমন্বয়ে সেল গঠন করতে হবে।
৩। চকচকে প্যাকেটজাত খাদ্যসহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্যাকেটজাতকরণে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহারের ওপরে উচ্চ কর আরোপের বিধান প্রবর্তন করা।
৪। চক্রাকার অর্থনীতির অধীনে উৎপাদককেই বর্জ্য আহরণের প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার বিষয়ে বাধ্য বা প্রণোদিত করার কার্যক্রমের দাবি জানাচ্ছি।
৫। দূষণকারীর জরিমানার ধারণা কার্যকরের পাশাপাশি উৎপাদকের বেপরোয়া পলিথিন-প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সংযত আচরণও নিশ্চিত হবে।
৬। অবৈধ টিস্যু পলিথিন ও শপিং ব্যাগ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে অবিলম্বে তাদের কারখানা বন্ধ করার জন্য সরকারি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কোনো যুক্তিতেই পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া যাবে না।
৭। পলিব্যাগ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাট, কাপড়জাত সামগ্রীর উৎপাদনে সহযোগিতা ও উৎসাহী করতে হবে।
৮। পণ্য বাজারজাতকরণে প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। প্লাস্টিক ও পলিথিনের কাঁচামাল অপব্যবহার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্লাস্টিকের কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি ও প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধান নির্ভর সামগ্রী/কাঁচামালের ওপর শুল্ক হ্রাস করতে হবে।
৯। পানি ও কোমল পানীয় বাজারজাতকরণে প্লাস্টিক বোতল নিষিদ্ধ করে কাঁচের বোতলের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্লাস্টিক পাত্রের ব্যবহার বন্ধ করে দেশীয় মাটি, কাঁচ ও সিরামিকের পাত্র ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
১০। পলিথিনের বিকল্প পরিবেশ বান্ধব কাগজ, চট ও কাপড়ের শপিং ব্যাগ ব্যবহারে সরকারি ও বেসরকারি জনসচেতনতামূলক প্রচার নিয়মিতকরণ ও বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। পলিথিন প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেডিও, টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায় ব্যাপক ও নিয়মিত প্রচার চালাতে হবে।
১১। চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যতীত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ নিশ্চিত করতে হবে।
১২। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যাগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সরাসরি আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
১৩। দেশের ঐতিহ্যবাহী পাট শিল্প পুনর্জীবিত করতে হবে। পাটশিল্প বিকাশে আরও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
১৪। যত্রতত্র প্লাস্টিক বা পলিথিন জাতীয় বর্জ্য বা আবর্জনা ফেলার ক্ষেত্রে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
১৫। থ্রি আর (রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল) এর প্রতি জোর দিতে হবে। প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য এ সংক্রান্ত অ্যাকশন প্ল্যানের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।