ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

প্লাস্টিকের ‘টেকসই বিকল্প’ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে কাঠ

  • আপডেট সময় : ১১:০৫:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : বনের ফেলে দেওয়া বস্তুকে জৈব প্লাস্টিকে রূপান্তর করার নতুন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে সুইডিশ এক স্টার্টআপ কোম্পানি, যা ব্যবহার করা যেতে পারে শপিং ব্যাগ এমনকি স্মার্টফোনেও। জৈবভিত্তিক নতুন এই উপাদানে ব্যবহার করা হয়েছে ‘লিগনিন’, যা কাঠের মূল উপাদান হিসেবে বিবেচিত। সাধারণত এটি কাঠ থেকে আলাদা করে কাগজ ও মন্ড কারখানায় পোড়ানো হয়। লিগনিন হল এক শ্রেণীর জটিল জৈব পলিমার, যা বেশিরভাগ উদ্ভিদের সহায়ক টিস্যুতে মূল কাঠামোগত উপাদান তৈরি করে।
নিজেদেরকে ‘লিগনিন ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামে ডাকা সুইডিশ কোম্পানিটি যে পদ্ধতিটি বিকাশ করেছে, তার মাধ্যমে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় লিগনিনের গুড়াকে ‘রেনোল’ নামের জৈবভিত্তিক উপাদানে রূপান্তর করা সম্ভব। রেনোলের রং ও গন্ধ কাঠের মতো হলেও এতে প্লাস্টিকের মতো বৈচিত্র্য থাকায় জৈবভিত্তিক বিভিন্ন উপাদান, যেগুলো এখন প্লাস্টিক শিল্পে রাজত্ব করছে, তার টেকসই বিকল্প হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে এটি।
“আমরা কাঁচামাল হিসেবে তেল ব্যবহার করছি,” ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন ড. ক্রিস্টোফার ক্যারিক, যিনি ২০১৮ সালে লিগনিন ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি বর্তমানে কোম্পানিটির প্রযুক্তি প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। “আমাদের এ উপাদানের বৈচিত্র্যই একে সামনের সারিতে তুলে আনে। সাধারণত বিভিন্ন জৈবভিত্তিক উপাদান এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে এটি বিশেষ কোনো চাহিদা মেটাতে পারে। তবে, আমাদেরটা সকল ধরনের প্লাস্টিকেই ব্যবহার করা যেতে পারে – শপিং ব্যাগ এমনকি গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশেও।”
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ফ্রেডরিক মালফর্স যোগ করেন, “আমরা দেখছি, অনেকেই কাগজের ব্যাগ ব্যবহারের দিকে চলে যাচ্ছেন। আর কাগজ তো ভালোই। আমরা কাগজ পছন্দ করি।”

“তবে আমাদের উপাদান কাগজ ও প্লাস্টিকের মাঝামাঝি কিছু একটা। ফলে, আপনি এর মধ্যে কাগজ দিয়ে তৈরি ব্যাগের পরিবেশ-বান্ধবতার পাশাপাশি প্লাস্টিকের সুবিধাও পাবেন।”
রেনোল থেকে বাণিজ্যিকভাবে টেকসই পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হল এর পঁচা ডিমের গন্ধ দূর করা, যা মূলত আসে লিগিনিন গুড়াকে থার্মোপ্লাস্টিক রেনোলে রূপান্তর করার সময় ঘটিত রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে। পাঁচ বছর এ বিষয়ে কাজ করার পর স্টার্টআপ কোম্পানিটি এমন একটি উপায় খুঁজে পেয়েছে, যার মাধ্যমে লিগনিনের আসল গন্ধ সমুন্নত রাখা যাবে। ফলে, উপাদানটির গন্ধও এখন ‘বন থেকে সংগ্রহ করা কাঠের মতো’ অনুভূত হচ্ছে। কোম্পানিটি এখন নিজেদের জৈবপ্লাস্টিক বাণিজ্যিকীকরণের দিকে এগোচ্ছে, যেখানে তারা যুক্তরাজ্যের এমন এক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করেছে, যারা ইভি চার্জার, হিট পাম্প ও ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের জন্য প্লাস্টিক তৈরি করে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্লাস্টিকের ‘টেকসই বিকল্প’ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে কাঠ

আপডেট সময় : ১১:০৫:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : বনের ফেলে দেওয়া বস্তুকে জৈব প্লাস্টিকে রূপান্তর করার নতুন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে সুইডিশ এক স্টার্টআপ কোম্পানি, যা ব্যবহার করা যেতে পারে শপিং ব্যাগ এমনকি স্মার্টফোনেও। জৈবভিত্তিক নতুন এই উপাদানে ব্যবহার করা হয়েছে ‘লিগনিন’, যা কাঠের মূল উপাদান হিসেবে বিবেচিত। সাধারণত এটি কাঠ থেকে আলাদা করে কাগজ ও মন্ড কারখানায় পোড়ানো হয়। লিগনিন হল এক শ্রেণীর জটিল জৈব পলিমার, যা বেশিরভাগ উদ্ভিদের সহায়ক টিস্যুতে মূল কাঠামোগত উপাদান তৈরি করে।
নিজেদেরকে ‘লিগনিন ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামে ডাকা সুইডিশ কোম্পানিটি যে পদ্ধতিটি বিকাশ করেছে, তার মাধ্যমে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় লিগনিনের গুড়াকে ‘রেনোল’ নামের জৈবভিত্তিক উপাদানে রূপান্তর করা সম্ভব। রেনোলের রং ও গন্ধ কাঠের মতো হলেও এতে প্লাস্টিকের মতো বৈচিত্র্য থাকায় জৈবভিত্তিক বিভিন্ন উপাদান, যেগুলো এখন প্লাস্টিক শিল্পে রাজত্ব করছে, তার টেকসই বিকল্প হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে এটি।
“আমরা কাঁচামাল হিসেবে তেল ব্যবহার করছি,” ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন ড. ক্রিস্টোফার ক্যারিক, যিনি ২০১৮ সালে লিগনিন ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি বর্তমানে কোম্পানিটির প্রযুক্তি প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। “আমাদের এ উপাদানের বৈচিত্র্যই একে সামনের সারিতে তুলে আনে। সাধারণত বিভিন্ন জৈবভিত্তিক উপাদান এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে এটি বিশেষ কোনো চাহিদা মেটাতে পারে। তবে, আমাদেরটা সকল ধরনের প্লাস্টিকেই ব্যবহার করা যেতে পারে – শপিং ব্যাগ এমনকি গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশেও।”
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ফ্রেডরিক মালফর্স যোগ করেন, “আমরা দেখছি, অনেকেই কাগজের ব্যাগ ব্যবহারের দিকে চলে যাচ্ছেন। আর কাগজ তো ভালোই। আমরা কাগজ পছন্দ করি।”

“তবে আমাদের উপাদান কাগজ ও প্লাস্টিকের মাঝামাঝি কিছু একটা। ফলে, আপনি এর মধ্যে কাগজ দিয়ে তৈরি ব্যাগের পরিবেশ-বান্ধবতার পাশাপাশি প্লাস্টিকের সুবিধাও পাবেন।”
রেনোল থেকে বাণিজ্যিকভাবে টেকসই পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হল এর পঁচা ডিমের গন্ধ দূর করা, যা মূলত আসে লিগিনিন গুড়াকে থার্মোপ্লাস্টিক রেনোলে রূপান্তর করার সময় ঘটিত রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে। পাঁচ বছর এ বিষয়ে কাজ করার পর স্টার্টআপ কোম্পানিটি এমন একটি উপায় খুঁজে পেয়েছে, যার মাধ্যমে লিগনিনের আসল গন্ধ সমুন্নত রাখা যাবে। ফলে, উপাদানটির গন্ধও এখন ‘বন থেকে সংগ্রহ করা কাঠের মতো’ অনুভূত হচ্ছে। কোম্পানিটি এখন নিজেদের জৈবপ্লাস্টিক বাণিজ্যিকীকরণের দিকে এগোচ্ছে, যেখানে তারা যুক্তরাজ্যের এমন এক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করেছে, যারা ইভি চার্জার, হিট পাম্প ও ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের জন্য প্লাস্টিক তৈরি করে।