ঢাকা ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রান্তিক জনপদে সম্প্রসারিত হচ্ছে বাণিজ্যিক কৃষি

  • আপডেট সময় : ০৪:৪১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

কৃষি ও কৃষক ডেস্ক: মেহেরপুর কৃষিনির্ভর জেলা। যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা চিরন্তন গ্রামীণ কৃষি এবং কৃষিনির্ভর জীবন ও সংস্কৃতি বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। গত দেড় যুগে অলাভবান সব আবাদই হারিয়ে গেছে। এখন আবাদ হচ্ছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা রবিশস্য এখন পারিবারিক প্রয়োজনে শখের বশে কেউ কেউ আবাদ করছেন। জেলায় খেসারি, যব, তিসি, ছোলা, লাউ ইত্যাদি চাষ একেবারেই বিলুপ্ত। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখন সমতল জমিতে আবাদ হচ্ছে ড্রাগন, কমলা, আতা, আখ, আম, পেঁপে, কলা, মাছ ইত্যাদি।

এক সময় কৃষক নিজেই বীজতলা তৈরি করতেন, এখন বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন হচ্ছে। যেসব জমিতে আউশ ও রবিশস্য চাষ হতো; সেসব জমিতে এখন জেনেটিক বীজে ইরি, আউশ, আমন ধান চাষ হচ্ছে। এক যুগ আগেও এ সময় খাল-বিল পানিতে ডুবে থাকতো। এখন এর তলদেশে রবিশস্য চাষ হয়। মেহেরপুরের গাংনীর ষোলটাকা গ্রামের প্রায় ৮০০ পুকুরে মাছের চাষ হয়। প্রতি বছরই শস্য চাষ ছেড়ে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন করছে।
প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সম্প্রসারিত হয়েছে বাণিজ্যিক কৃষি। ঘর-গৃহস্থালি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পারিবারিকভাবে হাঁস-মুরগি পালনের সংস্কৃতি। বেশির ভাগ পরিবারে ছিল হালচাষের গরু। হাল বিক্রি করেই চলতো অনেকের জীবিকা। দুই যুগ আগেও গ্রামীণ ও শহুরে জোতদার পরিবারে ছিল রাখল, কিষান। এখন তা ইতিহাসের পাতায়। শিক্ষিত বেকার ও প্রবাস ফেরত যুবকরা ধানি জমিতে সমন্বিত মাছ চাষ, মুরগি, গবাদিপশুর খামার এবং ফল চাষের প্রকল্প চালু করছে। প্রতিটি গ্রামের মাঠেই হাজার হাজার হেক্টর জমিতে গড়ে উঠেছে আম, লিচু, কলা, মাল্টা, কুল, পেয়ারা ইত্যাদির বাগান। তবে কী পরিমাণ চাষের জমিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে বা পুকুর কিংবা ফল চাষ হচ্ছে, এর সঠিক তথ্য কৃষি বিভাগের হাতে নেই।
ক্রমাগত জমির হাত বদল হয়ে পেশাজীবী, ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাওয়া, প্রধান ফসল ধানের পরিবর্তে ফলের বাগান বৃদ্ধি পাওয়া, ফসলি জমিতে শিল্প-কারখানাসহ ইটভাটা গড়ে ওঠার কারণে জেলার কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে কৃষি কর্মকর্তারা।
গাংনীর ষোলটাকা গ্রামের দেলবার হোসেন জানান, তিনি গ্রামে ৮টি পুকুরে মাছের চাষ করেন। প্রতিটি পুকুর প্রায় এক একর করে। প্রতিদিন মাছের খাবার লাগে ৫০ হাজার টাকার। প্রতিটি পুকুরে বছরে গড়ে ৭০ লাখ টাকার মাছ উৎপাদন হয়। মাছের খাবারের জন্য তিনি একটি মিল স্থাপন করেছেন।

মেহেরপুর জেলা শহরের বেড়পাড়ার শতাধিক পরিবারের বাস। সেখানে ৭০ দশক পর্যন্ত তিনটি পরিবার ছাড়া কোনো পরিবারের স্কুলমুখী ছেলে-মেয়ে ছিল না। এখন সিংহভাগ পরিবারের ছেলে-মেয়ে স্কুলমুখী। সবগুলো পরিবারেই ছিল দেশি হাঁস-মুরগি, হালের বলদ। ব্লাকবেঙ্গল ছাগল পালন ছিল প্রতিটি পরিবারে। কৃষির সঙ্গে জড়িত ছিল এসব পরিবারগুলো। গত আড়াই যুগের ব্যবধানে বর্তমানে একটি পরিবারও আমন ধান চাষ করে না।
বেড়পাড়ার দেল হোসেন জানান, আগে তিনি নিজের জমির চাষ আর হাল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে কেউ হালের চাষ করে না। গরু-মহিষ দিয়ে ধান চাষ এবং মাড়াইয়ের কাজ হতো। সেটাও বন্ধ। এখন জমি চাষ এবং ধান মাড়াইয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে যন্ত্র প্রযুক্তি। বিয়েতে গরুর গাড়ি ছিল যাতায়াতের পরিবহন। এখন প্রাইভেট কার। তাই হালের গরু উঠে গেলেও তিনি নিজের জমি চাষের জন্য এখনো গরু পালন করেন।

একই পাড়ার জরিনা বেগম বলেন, আগে আমাদের হালচাষের জন্য চারটি বলদ গরু ছিল। পারিবারিক দুধের চাহিদা মেটাতে দুটি গাভি ছিল। ছিল রাখাল ও কিষান। বাড়ির পাশে দুই বিঘা জমি ফসল মাড়ার জন্য খোলা হিসেবে ব্যবহার করা হতো সারা বছর। জমি থেকে ধান কেটে এনে আঁটি বেঁধে ওই খোলাতে সাজিয়ে রাখা হতো। পরে হতো ধান মাড়াইয়ের কাজ। শীতের সময় ফজরের আজান থেকে উঠানের পাশে টিনের তৈরি বিশাল কড়াইয়ে হতো ধান সিদ্ধ করার কাজ। সিদ্ধ সেই ধান শুকিয়ে বাড়ির ঢেঁকিতে ছেটে চাল করে সংরক্ষণ করা হতো। এখন উঠান, ফসল মাড়ায়ের খোলা, গোয়ালঘর নেই। ধানের জমি যেটুকু অবশিষ্ট আছে তাতে আর কোনো আমন ধান চাষ নেই। চলে গেছে ইরি চাষের অধীন। তিনি আরো বলেন, ধান চাষ করে আর পোষায় না। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক সময় যারা জোতদার ছিলেন। তাদের শতকরা ৯০ ভাগ এখন জমি বর্গা দিয়েছেন। এখন ভূমিহীন মানুষ জমি বর্গা নিয়ে চাষ করছেন।

জেলায় সরকারি হিসেব মতে কৃষকের সংখ্যা ১ লাখ ৪৬ হজার ২০০ পরিবার জেলার মোট কৃষক। ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬৬ হেক্টর ফসলি জমি। জেলার খাদ্য চাহিদা আছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৫৩ টন। উৎপাদন হয় ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯২ টন। ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৯ টন। অতিরিক্ত খাদ্য জাতীয় খাদ্যভান্ডারে অবদান রাখছে। এ তথ্যের বাইরে জেলায় কী পরিমাণ জমি গত এক যুগে ধান চাষ থেকে সরে গিয়ে ফলের বাগানে পরিণত হয়েছে সে তথ্য নেই জেলা কৃষি বিভাগের কাছে।

উদ্যোক্তা সোহানুর রহমানের মতে কৃষক বছরের পর বছর ধানের দাম পাচ্ছে না। দাম না পেয়ে জমিতে ফলজাতীয় বাগান করছেন। এখানে কোনো ঝুঁকি নেই। যেমন- আমের মুকুল আসার আগেই বাগান বিক্রি করে নগদ টাকা পাওয়া যায়। সার, বিষ, পানিসহ সব পরিচর্যা যিনি বাগান চুক্তিতে কেনেন তার দায়িত্বে থাকে। ফলে বাগান নিয়ে বাড়তি কোনো ভেজাল করতে হয় না। তিনি আরো বলেন ‘কৃষিকাজ মানে শুধুই গ্রাম্য কাজ এই ধারণা বদলে দিতে শিক্ষিত যুবসমাজ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিনন ধরনের আবাদে সংযুক্ত হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, কৃষিতে তরুণ শিক্ষিত যুবসমাজ উদ্যোক্তা হয়ে চাষাবাদে নেমেছে। আরো শিক্ষিত সমাজ কৃষিতে আসলে কৃষি খাতের রূপান্তর হবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রান্তিক জনপদে সম্প্রসারিত হচ্ছে বাণিজ্যিক কৃষি

আপডেট সময় : ০৪:৪১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

কৃষি ও কৃষক ডেস্ক: মেহেরপুর কৃষিনির্ভর জেলা। যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা চিরন্তন গ্রামীণ কৃষি এবং কৃষিনির্ভর জীবন ও সংস্কৃতি বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। গত দেড় যুগে অলাভবান সব আবাদই হারিয়ে গেছে। এখন আবাদ হচ্ছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা রবিশস্য এখন পারিবারিক প্রয়োজনে শখের বশে কেউ কেউ আবাদ করছেন। জেলায় খেসারি, যব, তিসি, ছোলা, লাউ ইত্যাদি চাষ একেবারেই বিলুপ্ত। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখন সমতল জমিতে আবাদ হচ্ছে ড্রাগন, কমলা, আতা, আখ, আম, পেঁপে, কলা, মাছ ইত্যাদি।

এক সময় কৃষক নিজেই বীজতলা তৈরি করতেন, এখন বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন হচ্ছে। যেসব জমিতে আউশ ও রবিশস্য চাষ হতো; সেসব জমিতে এখন জেনেটিক বীজে ইরি, আউশ, আমন ধান চাষ হচ্ছে। এক যুগ আগেও এ সময় খাল-বিল পানিতে ডুবে থাকতো। এখন এর তলদেশে রবিশস্য চাষ হয়। মেহেরপুরের গাংনীর ষোলটাকা গ্রামের প্রায় ৮০০ পুকুরে মাছের চাষ হয়। প্রতি বছরই শস্য চাষ ছেড়ে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন করছে।
প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সম্প্রসারিত হয়েছে বাণিজ্যিক কৃষি। ঘর-গৃহস্থালি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পারিবারিকভাবে হাঁস-মুরগি পালনের সংস্কৃতি। বেশির ভাগ পরিবারে ছিল হালচাষের গরু। হাল বিক্রি করেই চলতো অনেকের জীবিকা। দুই যুগ আগেও গ্রামীণ ও শহুরে জোতদার পরিবারে ছিল রাখল, কিষান। এখন তা ইতিহাসের পাতায়। শিক্ষিত বেকার ও প্রবাস ফেরত যুবকরা ধানি জমিতে সমন্বিত মাছ চাষ, মুরগি, গবাদিপশুর খামার এবং ফল চাষের প্রকল্প চালু করছে। প্রতিটি গ্রামের মাঠেই হাজার হাজার হেক্টর জমিতে গড়ে উঠেছে আম, লিচু, কলা, মাল্টা, কুল, পেয়ারা ইত্যাদির বাগান। তবে কী পরিমাণ চাষের জমিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে বা পুকুর কিংবা ফল চাষ হচ্ছে, এর সঠিক তথ্য কৃষি বিভাগের হাতে নেই।
ক্রমাগত জমির হাত বদল হয়ে পেশাজীবী, ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাওয়া, প্রধান ফসল ধানের পরিবর্তে ফলের বাগান বৃদ্ধি পাওয়া, ফসলি জমিতে শিল্প-কারখানাসহ ইটভাটা গড়ে ওঠার কারণে জেলার কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে কৃষি কর্মকর্তারা।
গাংনীর ষোলটাকা গ্রামের দেলবার হোসেন জানান, তিনি গ্রামে ৮টি পুকুরে মাছের চাষ করেন। প্রতিটি পুকুর প্রায় এক একর করে। প্রতিদিন মাছের খাবার লাগে ৫০ হাজার টাকার। প্রতিটি পুকুরে বছরে গড়ে ৭০ লাখ টাকার মাছ উৎপাদন হয়। মাছের খাবারের জন্য তিনি একটি মিল স্থাপন করেছেন।

মেহেরপুর জেলা শহরের বেড়পাড়ার শতাধিক পরিবারের বাস। সেখানে ৭০ দশক পর্যন্ত তিনটি পরিবার ছাড়া কোনো পরিবারের স্কুলমুখী ছেলে-মেয়ে ছিল না। এখন সিংহভাগ পরিবারের ছেলে-মেয়ে স্কুলমুখী। সবগুলো পরিবারেই ছিল দেশি হাঁস-মুরগি, হালের বলদ। ব্লাকবেঙ্গল ছাগল পালন ছিল প্রতিটি পরিবারে। কৃষির সঙ্গে জড়িত ছিল এসব পরিবারগুলো। গত আড়াই যুগের ব্যবধানে বর্তমানে একটি পরিবারও আমন ধান চাষ করে না।
বেড়পাড়ার দেল হোসেন জানান, আগে তিনি নিজের জমির চাষ আর হাল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে কেউ হালের চাষ করে না। গরু-মহিষ দিয়ে ধান চাষ এবং মাড়াইয়ের কাজ হতো। সেটাও বন্ধ। এখন জমি চাষ এবং ধান মাড়াইয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে যন্ত্র প্রযুক্তি। বিয়েতে গরুর গাড়ি ছিল যাতায়াতের পরিবহন। এখন প্রাইভেট কার। তাই হালের গরু উঠে গেলেও তিনি নিজের জমি চাষের জন্য এখনো গরু পালন করেন।

একই পাড়ার জরিনা বেগম বলেন, আগে আমাদের হালচাষের জন্য চারটি বলদ গরু ছিল। পারিবারিক দুধের চাহিদা মেটাতে দুটি গাভি ছিল। ছিল রাখাল ও কিষান। বাড়ির পাশে দুই বিঘা জমি ফসল মাড়ার জন্য খোলা হিসেবে ব্যবহার করা হতো সারা বছর। জমি থেকে ধান কেটে এনে আঁটি বেঁধে ওই খোলাতে সাজিয়ে রাখা হতো। পরে হতো ধান মাড়াইয়ের কাজ। শীতের সময় ফজরের আজান থেকে উঠানের পাশে টিনের তৈরি বিশাল কড়াইয়ে হতো ধান সিদ্ধ করার কাজ। সিদ্ধ সেই ধান শুকিয়ে বাড়ির ঢেঁকিতে ছেটে চাল করে সংরক্ষণ করা হতো। এখন উঠান, ফসল মাড়ায়ের খোলা, গোয়ালঘর নেই। ধানের জমি যেটুকু অবশিষ্ট আছে তাতে আর কোনো আমন ধান চাষ নেই। চলে গেছে ইরি চাষের অধীন। তিনি আরো বলেন, ধান চাষ করে আর পোষায় না। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক সময় যারা জোতদার ছিলেন। তাদের শতকরা ৯০ ভাগ এখন জমি বর্গা দিয়েছেন। এখন ভূমিহীন মানুষ জমি বর্গা নিয়ে চাষ করছেন।

জেলায় সরকারি হিসেব মতে কৃষকের সংখ্যা ১ লাখ ৪৬ হজার ২০০ পরিবার জেলার মোট কৃষক। ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬৬ হেক্টর ফসলি জমি। জেলার খাদ্য চাহিদা আছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৫৩ টন। উৎপাদন হয় ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯২ টন। ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৯ টন। অতিরিক্ত খাদ্য জাতীয় খাদ্যভান্ডারে অবদান রাখছে। এ তথ্যের বাইরে জেলায় কী পরিমাণ জমি গত এক যুগে ধান চাষ থেকে সরে গিয়ে ফলের বাগানে পরিণত হয়েছে সে তথ্য নেই জেলা কৃষি বিভাগের কাছে।

উদ্যোক্তা সোহানুর রহমানের মতে কৃষক বছরের পর বছর ধানের দাম পাচ্ছে না। দাম না পেয়ে জমিতে ফলজাতীয় বাগান করছেন। এখানে কোনো ঝুঁকি নেই। যেমন- আমের মুকুল আসার আগেই বাগান বিক্রি করে নগদ টাকা পাওয়া যায়। সার, বিষ, পানিসহ সব পরিচর্যা যিনি বাগান চুক্তিতে কেনেন তার দায়িত্বে থাকে। ফলে বাগান নিয়ে বাড়তি কোনো ভেজাল করতে হয় না। তিনি আরো বলেন ‘কৃষিকাজ মানে শুধুই গ্রাম্য কাজ এই ধারণা বদলে দিতে শিক্ষিত যুবসমাজ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিনন ধরনের আবাদে সংযুক্ত হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, কৃষিতে তরুণ শিক্ষিত যুবসমাজ উদ্যোক্তা হয়ে চাষাবাদে নেমেছে। আরো শিক্ষিত সমাজ কৃষিতে আসলে কৃষি খাতের রূপান্তর হবে।