ঢাকা ০২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আন্দোলন

প্রতীকী ফাঁসি শেষে প্রতিবাদ র‌্যালি নিয়োগ প্রত্যাশীদের

  • আপডেট সময় : ০৮:৩৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

নিয়োগের দাবি মেনে না নেওয়ায় শনিবার শাহবাগে প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা- ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সুপারিশপ্রাপ্তরা। এখনও পর্যন্ত দাবি মেনে না নেওয়ায় শনিবার প্রতীকী ফাঁসি, কাফনের কাপড় পরে অবস্থান, হাতে শিকল বেঁধে প্রতিবাদসহ র‌্যালি করেছেন তারা।

শনিবার (১ মার্চ) বিকালে সাড়ে ৩টা থেকে শাহবাগে পর পর কর্মসূচি পালন করেন চাকরিতে সুপারিশপ্রাপ্ত আন্দোলনকারীরা।

এসময় তারা প্রথমে প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করেন, কাফনের কাপড় পরে অবস্থান করার পাশাপাশি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রতিবাদ র‌্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উদ্দেশে যাত্রা করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তারা পুনরায় র‌্যালি নিয়ে ফিরে এসে শাহবাগে অবস্থান নেন।

আন্দোলনকারীদের প্রধান সমন্বয়কারী মহিবউল্লাহ বলেন, আমরা যখন সুপারিশপ্রাপ্ত হই তখন আগের নীতিমালা অনুযায়ী কোটাসহ ফলাফল দেয় এই সরকার। কারণ আমাদের পরীক্ষা হয়েছিল আগের নীতিমালা অনুযায়ী গত বছর (২০২৪)। এই সরকার সেই নীতিমালা অনুযায়ী সুপারিশপ্রাপ্ত করলেও কয়েকজনের রিটের কারণে নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা তো কোটার বিপক্ষে অবশ্যই, কিন্তু যে নীতিমালা অনুযায়ী আমাদেরকে সুপারিশ করা হয়েছে— সেই নীতিমালা অনুযায়ী আমাদেরকে নিয়োগ কেন দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমাদের যে সুপারিশপ্রাপ্ত করা হয়েছে— সেখানে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্যারের সই আছে। তারা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলেও একটা রিটের কারণে তারা আমাদের নিয়োগ আটকে দিয়েছেন।

হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে তিনি বলেন, হাইকোর্টও ৯৩ শতাংশ মেধার পক্ষে রায় দিয়েছেন। আমরা সেই রায়কে সম্মান করি। আমরাও কোটার পক্ষে না। কিন্তু আমাদের এই নিয়োগ তো আগের বিধিমালা অনুযায়ী। সেই বিধিমালায় আন্দোলন পরবর্তী সময়েও তো অনেকে চাকরিতে জয়েন করতে পেরেছেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচিতে ছয়জন আন্দোলনকারী অংশ নেন। যদি তাঁদের দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তবে তাঁরা প্রতীকী নয়, ফাঁসির মাধ্যমে আত্মাহুতি দেবেন। প্রায় এক ঘণ্টা তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেন। পরে সাড়ে বিকেল চারটার দিকে র‌্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান তাঁরা।

আন্দোলনকারীদের একজন আসাদুজ্জামান বলেন, টানা ২৪তম দিনের মতো তাঁরা আন্দোলন করছেন। তাঁদের দাবি মেনে না নেওয়ায় আজ প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে, দাবি মানা না হলে এটি আর প্রতীকী কর্মসূচি থাকবে না। তাঁরা ফাঁসির মাধ্যমে আত্মাহুতি দেবেন।

তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন।

নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফলাফল ও নিয়োগপত্র প্রদান-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট চূড়ান্ত ফলাফল ও নির্বাচিতদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যে ভাইকে জেল থেকে বের করেছি, সেই আমার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করল…

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আন্দোলন

প্রতীকী ফাঁসি শেষে প্রতিবাদ র‌্যালি নিয়োগ প্রত্যাশীদের

আপডেট সময় : ০৮:৩৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সুপারিশপ্রাপ্তরা। এখনও পর্যন্ত দাবি মেনে না নেওয়ায় শনিবার প্রতীকী ফাঁসি, কাফনের কাপড় পরে অবস্থান, হাতে শিকল বেঁধে প্রতিবাদসহ র‌্যালি করেছেন তারা।

শনিবার (১ মার্চ) বিকালে সাড়ে ৩টা থেকে শাহবাগে পর পর কর্মসূচি পালন করেন চাকরিতে সুপারিশপ্রাপ্ত আন্দোলনকারীরা।

এসময় তারা প্রথমে প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করেন, কাফনের কাপড় পরে অবস্থান করার পাশাপাশি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রতিবাদ র‌্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উদ্দেশে যাত্রা করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তারা পুনরায় র‌্যালি নিয়ে ফিরে এসে শাহবাগে অবস্থান নেন।

আন্দোলনকারীদের প্রধান সমন্বয়কারী মহিবউল্লাহ বলেন, আমরা যখন সুপারিশপ্রাপ্ত হই তখন আগের নীতিমালা অনুযায়ী কোটাসহ ফলাফল দেয় এই সরকার। কারণ আমাদের পরীক্ষা হয়েছিল আগের নীতিমালা অনুযায়ী গত বছর (২০২৪)। এই সরকার সেই নীতিমালা অনুযায়ী সুপারিশপ্রাপ্ত করলেও কয়েকজনের রিটের কারণে নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা তো কোটার বিপক্ষে অবশ্যই, কিন্তু যে নীতিমালা অনুযায়ী আমাদেরকে সুপারিশ করা হয়েছে— সেই নীতিমালা অনুযায়ী আমাদেরকে নিয়োগ কেন দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমাদের যে সুপারিশপ্রাপ্ত করা হয়েছে— সেখানে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্যারের সই আছে। তারা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলেও একটা রিটের কারণে তারা আমাদের নিয়োগ আটকে দিয়েছেন।

হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে তিনি বলেন, হাইকোর্টও ৯৩ শতাংশ মেধার পক্ষে রায় দিয়েছেন। আমরা সেই রায়কে সম্মান করি। আমরাও কোটার পক্ষে না। কিন্তু আমাদের এই নিয়োগ তো আগের বিধিমালা অনুযায়ী। সেই বিধিমালায় আন্দোলন পরবর্তী সময়েও তো অনেকে চাকরিতে জয়েন করতে পেরেছেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচিতে ছয়জন আন্দোলনকারী অংশ নেন। যদি তাঁদের দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তবে তাঁরা প্রতীকী নয়, ফাঁসির মাধ্যমে আত্মাহুতি দেবেন। প্রায় এক ঘণ্টা তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেন। পরে সাড়ে বিকেল চারটার দিকে র‌্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান তাঁরা।

আন্দোলনকারীদের একজন আসাদুজ্জামান বলেন, টানা ২৪তম দিনের মতো তাঁরা আন্দোলন করছেন। তাঁদের দাবি মেনে না নেওয়ায় আজ প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে, দাবি মানা না হলে এটি আর প্রতীকী কর্মসূচি থাকবে না। তাঁরা ফাঁসির মাধ্যমে আত্মাহুতি দেবেন।

তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন।

নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফলাফল ও নিয়োগপত্র প্রদান-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট চূড়ান্ত ফলাফল ও নির্বাচিতদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।