ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

প্রাথমিক শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু, পাঠদান বন্ধ ৬৫ হাজার স্কুলে

  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে আজ (২৭ নভেম্বর) থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু হচ্ছে। এতে করে বার্ষিক পরীক্ষার ঠিক আগ মুহূর্তে দেশের প্রায় ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেলো।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস সত্ত্বেও দাবিগুলোর বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু করার কথা থাকলেও কর্মসূচি এগিয়ে এনে ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।

সংগঠনটি জানায়, গত ৮ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি এবং পরে শাহবাগে কলম সমর্পণ কর্মসূচির পর পুলিশের অতর্কিত হামলায় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরে ৯ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে এবং ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় ৩ দফা দাবির বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়। ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও এ আশ্বাস উল্লেখ ছিল।

সংগঠনটির দাবি, আশ্বাস পাওয়ার পর ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপনসহ তিন দফা দাবির বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। দেশের শিক্ষক সমাজের প্রত্যাশা ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কর্মসূচি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের ঘোষিত ৩ দফা দাবি হলো-

১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ

২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন

৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি

এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) থেকে একই দাবিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ ২৭ নভেম্বর অর্থাৎ আজ পর্যন্ত কর্মবিরতির ডাক দেয়।

সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেরা বেগম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেড প্রদান, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন- এই তিন দফা দাবির বিষয়ে আমরা বহুদিন ধরে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আশ্বাসের বাইরে কোনো বাস্তব অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি, এবং এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ৩ লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০তম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডের শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এতে সহকারী শিক্ষকরা অসন্তুষ্ট।

তাদের ভাষ্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, নার্স, কৃষি কর্মকর্তা, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি নিয়েই দশম গ্রেড পাচ্ছেন। অথচ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি সিএনএড, বিপিএড বা বিটিপিটি কোর্স সম্পন্ন করেও এখনো ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন।

এসি/আপ্র/২৭/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

প্রাথমিক শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু, পাঠদান বন্ধ ৬৫ হাজার স্কুলে

আপডেট সময় : ১১:৪৬:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে আজ (২৭ নভেম্বর) থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু হচ্ছে। এতে করে বার্ষিক পরীক্ষার ঠিক আগ মুহূর্তে দেশের প্রায় ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেলো।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস সত্ত্বেও দাবিগুলোর বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু করার কথা থাকলেও কর্মসূচি এগিয়ে এনে ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।

সংগঠনটি জানায়, গত ৮ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি এবং পরে শাহবাগে কলম সমর্পণ কর্মসূচির পর পুলিশের অতর্কিত হামলায় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরে ৯ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে এবং ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় ৩ দফা দাবির বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়। ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও এ আশ্বাস উল্লেখ ছিল।

সংগঠনটির দাবি, আশ্বাস পাওয়ার পর ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপনসহ তিন দফা দাবির বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। দেশের শিক্ষক সমাজের প্রত্যাশা ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কর্মসূচি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের ঘোষিত ৩ দফা দাবি হলো-

১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ

২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন

৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি

এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) থেকে একই দাবিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ ২৭ নভেম্বর অর্থাৎ আজ পর্যন্ত কর্মবিরতির ডাক দেয়।

সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেরা বেগম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেড প্রদান, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন- এই তিন দফা দাবির বিষয়ে আমরা বহুদিন ধরে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আশ্বাসের বাইরে কোনো বাস্তব অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি, এবং এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ৩ লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০তম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডের শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এতে সহকারী শিক্ষকরা অসন্তুষ্ট।

তাদের ভাষ্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, নার্স, কৃষি কর্মকর্তা, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি নিয়েই দশম গ্রেড পাচ্ছেন। অথচ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি সিএনএড, বিপিএড বা বিটিপিটি কোর্স সম্পন্ন করেও এখনো ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন।

এসি/আপ্র/২৭/১১/২০২৫