ঢাকা ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর কার্যকর পন্থা

  • আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: মশা এক যন্ত্রণাদায়ক পতঙ্গের নাম। বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি তারা রোগজীবাণু সংক্রামণ করে। এই মশা অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, পীত জ্বর, জিকা ভাইরাস প্রভৃতি মারাত্মক রোগ সংক্রমিত হয়ে থাকে। স্প্রে, কয়েল, অ্যারোসল কোনো কিছুতেই মশা তাড়ানো সহজ নয়। আবার এসব দিয়ে মশা তাড়ালেও আমাদের স্বাস্থ্য এতে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা করা জরুরি। আগেকার যুগে মশার কয়েল, স্প্রে তো কিছুই ছিল না। তখনকার মানুষ কীভাবে মশার হাত থেকে রক্ষা পেতেন? একনজরে জেনে নিন মশা তাড়ানোর কার্যকর উপায়গুলোÑ
লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার: লেবু খণ্ড করে কেটে ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা ঢোকাবেন না। শুধু লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোণায় রেখে দিন। ব্যস, এতে বেশ কয়েকদিন মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে ঘরের মশা একেবারেই দূর হয়ে যাবে। আপনি চাইলে লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে জানালার গ্রিলেও রাখতে পারেন। এতে করে মশা ঘরেই ঢুকবে না।
নিমের তেলের ব্যবহার: নিমের মশা তাড়ানোর বিশেষ একটি গুণ রয়েছে। নিমের তেল ত্বকের জন্যও বেশ ভালো। তাই একসাথে দুটি উপকার পেতে ব্যবহার করতে পারেন নিমের তেল। সমপরিমাণ নিমের তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। দেখবেন মশা আপনার ধারে কাছে ভিড়বে না এবং সেই সাথে ত্বকের অ্যালার্জি, ইনফেকশন জনিত নানা সমস্যাও দূর হবে।
পুদিনার ব্যবহার: ছোট গ্লাসে একটু পানি নিয়ে তাতে ৫ থেকে ৬ গাছি পুদিনা রেখে দিন খাবার টেবিলে। ৩ দিন অন্তর পানি বদলে দেবেন। জার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলোজির গবেষণা মতে তুলসির মতো পুদিনা পাতারও রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। শুধু মশাই নয় পুদিনার গন্ধ অনেক ধরণের পোকামাকড়কে ঘর থেকে দূরে রাখে। পুদিনা পাতা ছেঁচে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানির ভাপ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন ঘরের সব মশা পালিয়েছে। চাইলে পুদিনার তেলও গায়ে মাখতে পারেন।
টবে লেমন গ্রাস লাগান: থাই লেমন গ্রাসে আছে ‘সাইট্রোনেলা অয়েল’ যা থেকে বের হয় একধরনের শক্তিশালী সুগন্ধ। এই সুগন্ধ কিন্তু মশাদের যম। মশারা এর কাছেও ঘেঁষে না। ফলে আপনার আশেপাশে লেমন গ্রাসের ঝাঁড় থাকলে মশারা আপনাকে খুঁজে পাবে না। আর লেমন গ্রাস দেখতেও কিন্তু মন্দ নয়। এমনসব স্থানে এসব গাছের টব রাখুন যেখানে সকাল বিকাল কিংবা রাতে পরিবারের অন্যদের নিয়ে কিংবা বন্ধু বান্ধব নিয়ে আড্ডা বা সময় কাটান। এভাবে থাকুন মশা মুক্ত।
ধুনোর সঙ্গে নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়া: প্রতিদিন নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো ধুনোর সঙ্গে ব্যবহার করলে মশার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
হলুদ বৈদ্যুতিক আলো: ঘরের মধ্যে মশার উৎপাত কমাতে চাইলে ঘরের বৈদ্যুতিক আলোটি হলুদ সেলোফেনে জড়িয়ে দিন। ফলে হলুদ আলো হবে। দেখবেন মশা কমে গেছে, কারণ মশা হলুদ আলো থেকে দূরে থাকতে চায়। এছাড়া ঘরে এবং ঘরের বাইরে লাইট বাল্বগুলো পরিবর্তন করুন। মশারা সাধারণত সব লাইটের প্রতি আকৃষ্ট হয় না। এলইডি লাইট, হলুদ ‘বাগ লাইট’, বা সোডিয়াম লাইট এক্ষেত্রে উপকারী। এগুলো জ্বালালে সন্ধ্যাবেলা ঘরে বাইরে মশাদের আক্রমন অনেকটাই কমে যাবে।
চা-পাতা পোড়ান: ব্যবহৃত চা-পাতা ফেলে না দিয়ে ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিন। এইভাবে ওই চা-পাতা ধুনোর বদলে ব্যবহার করুন। শুকনো চা-পাতা পোড়ানো ধোঁয়ায় ঘরের সমস্ত মশা, মাছি পালিয়ে যাবে।
নিমপাতা পোড়ান: কয়লা বা কাঠ-কয়লার আগুনে নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হবে তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর।
ক্যাটনিপ অয়েল: ক্যাটনিপ অয়েলের হবঢ়বঃধষধপঃড়হব নামক পদার্থ মশা তাড়াতে উঊঊঞ (উরবঃযুষব-গবঃধ-ঃড়ষঁধসরফব) থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী। ক্যাটনিপ অয়েল মাখালে মশারা ধারে কাছেও ঘেঁষবে না।
বারান্দায় চামচিকার বাক্স রাখুন: ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চামচিকারারা এক ঘন্টায় কয়েকশত পোকা-মাকড় খায়। তাই মশা তাড়াতে ব্যাট হাউস বানাতে পারেন। বারান্দায় কিংবা ভেন্টিলেটরের কাছে রাখুন আর চামচিকাদের কাজ করতে দিন।
ফ্যান চালু রাখুন: মশারা খুবই হালকা। অন্যদিকে একটি ফ্যানের স্পীড ঘন্টায় প্রায় দুই মাইল। মশাদের উড়বার গতিবেগের চাইতে ফ্যানের ঘুরবার গতি অনেক বেশি হওয়ায় সহজেই মশাদের ব্লেডের কাছে টেনে নেয়। আপনার বসার স্থান কিংবা ডেক বা যেসব স্থান থেকে মশারা খুব সহজে আপনার গৃহে প্রবেশ করতে পারে, এমনসব স্থানে মশাদের আগমন সময়ে আপনার টেবিল ফ্যান বা পেডাল ফ্যানটি চালু রাখুন। মশাদের হাত থেকেও যেমন নিস্কৃতি পাবেন তেমনি গরমেও পাবেন আরাম।
কালো, নীল ও লাল কাপড় এড়িয়ে চলুন: মশার পছন্দের রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন। কি অবাক হচ্ছেন! হ্যাঁ কিছু কিছু প্রজাতির মশারা কয়েকটি গাঢ় রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয় যেমন কালো, নীল আর লাল। আর তারা গরমের প্রতিও সংবেদনশীল। তাই ঠান্ডা রাখুন ঘর আর পোষাক পড়ুন হালকা রঙের।
কর্পূরের ব্যবহার: মশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। আপনি যে কোন ফার্মেসিতে গিয়ে কর্পূরের ট্যাবলেট কিনে নিতে পারেন। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবেই মশা গায়েব হয়ে যাবে। দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। আগের পানিটুকু ফেলে দিবেন না। এই পানি ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করলে ঘরে পিঁপড়ের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন।
সুগন্ধি ব্যবহার করুন: মশা সুগন্ধি থেকে দূরে থাকে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে আতর, সুগন্ধি, কিংবা লোসন মেখে শুতে পারেন। নিশ্চিত করে বলা যায় এতে মশা সাধারণ থেকে অনেক কম দেখা যাবে।
রসুনের স্প্রে করুন: রসুনের স্প্রে মশা তাড়াতে খুবই কার্যকর প্রাকৃতিক উপায়। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে মশারা কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন। এতে করে যে কোন ধরণের রক্ত চোষারা আপনার ধারে কাছেও আসবে না।
জমানো জল থেকে দূরে থাকুন: খেয়াল রাখুন যেন কোথাও জল জমে না থাকে। ঘরের আনাচে-কানাচে কিংবা উঠোনে জল জমে থাকলে সেখানে মশারা বংশবিস্তার করতে পারে। তাই যেখানেই জল জমুক না কেন, তা সরিয়ে ফেলুন। মশার বংশবিস্তার রোধ করুন।
নারিকেলের আঁশ পোড়ান: নারিকেলের গায়ে থাকা আঁশের সাহায্য দূর করতে পারেন মশা। নারিকেলের আঁশ শুকিয়ে টুকরা করুন। একটি কাঠের পাত্রে রেখে জ্বলন্ত ম্যাচের কাঠি ধরুন। ৫-৬ মিনিটের মধ্যেই মশা দূর হবে।
কেরোসিন তেল স্প্রে: কেরোসিন তেল স্প্রে বোতলে নিন। কয়েক টুকরা কর্পূর মেশান। ভালো করে ঝাঁকিয়ে স্প্রে করুন রুমে। মশা থাকবে না।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর কার্যকর পন্থা

আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

লাইফস্টাইল ডেস্ক: মশা এক যন্ত্রণাদায়ক পতঙ্গের নাম। বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি তারা রোগজীবাণু সংক্রামণ করে। এই মশা অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, পীত জ্বর, জিকা ভাইরাস প্রভৃতি মারাত্মক রোগ সংক্রমিত হয়ে থাকে। স্প্রে, কয়েল, অ্যারোসল কোনো কিছুতেই মশা তাড়ানো সহজ নয়। আবার এসব দিয়ে মশা তাড়ালেও আমাদের স্বাস্থ্য এতে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা করা জরুরি। আগেকার যুগে মশার কয়েল, স্প্রে তো কিছুই ছিল না। তখনকার মানুষ কীভাবে মশার হাত থেকে রক্ষা পেতেন? একনজরে জেনে নিন মশা তাড়ানোর কার্যকর উপায়গুলোÑ
লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার: লেবু খণ্ড করে কেটে ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা ঢোকাবেন না। শুধু লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোণায় রেখে দিন। ব্যস, এতে বেশ কয়েকদিন মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে ঘরের মশা একেবারেই দূর হয়ে যাবে। আপনি চাইলে লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে জানালার গ্রিলেও রাখতে পারেন। এতে করে মশা ঘরেই ঢুকবে না।
নিমের তেলের ব্যবহার: নিমের মশা তাড়ানোর বিশেষ একটি গুণ রয়েছে। নিমের তেল ত্বকের জন্যও বেশ ভালো। তাই একসাথে দুটি উপকার পেতে ব্যবহার করতে পারেন নিমের তেল। সমপরিমাণ নিমের তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। দেখবেন মশা আপনার ধারে কাছে ভিড়বে না এবং সেই সাথে ত্বকের অ্যালার্জি, ইনফেকশন জনিত নানা সমস্যাও দূর হবে।
পুদিনার ব্যবহার: ছোট গ্লাসে একটু পানি নিয়ে তাতে ৫ থেকে ৬ গাছি পুদিনা রেখে দিন খাবার টেবিলে। ৩ দিন অন্তর পানি বদলে দেবেন। জার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলোজির গবেষণা মতে তুলসির মতো পুদিনা পাতারও রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। শুধু মশাই নয় পুদিনার গন্ধ অনেক ধরণের পোকামাকড়কে ঘর থেকে দূরে রাখে। পুদিনা পাতা ছেঁচে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানির ভাপ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন ঘরের সব মশা পালিয়েছে। চাইলে পুদিনার তেলও গায়ে মাখতে পারেন।
টবে লেমন গ্রাস লাগান: থাই লেমন গ্রাসে আছে ‘সাইট্রোনেলা অয়েল’ যা থেকে বের হয় একধরনের শক্তিশালী সুগন্ধ। এই সুগন্ধ কিন্তু মশাদের যম। মশারা এর কাছেও ঘেঁষে না। ফলে আপনার আশেপাশে লেমন গ্রাসের ঝাঁড় থাকলে মশারা আপনাকে খুঁজে পাবে না। আর লেমন গ্রাস দেখতেও কিন্তু মন্দ নয়। এমনসব স্থানে এসব গাছের টব রাখুন যেখানে সকাল বিকাল কিংবা রাতে পরিবারের অন্যদের নিয়ে কিংবা বন্ধু বান্ধব নিয়ে আড্ডা বা সময় কাটান। এভাবে থাকুন মশা মুক্ত।
ধুনোর সঙ্গে নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়া: প্রতিদিন নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো ধুনোর সঙ্গে ব্যবহার করলে মশার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
হলুদ বৈদ্যুতিক আলো: ঘরের মধ্যে মশার উৎপাত কমাতে চাইলে ঘরের বৈদ্যুতিক আলোটি হলুদ সেলোফেনে জড়িয়ে দিন। ফলে হলুদ আলো হবে। দেখবেন মশা কমে গেছে, কারণ মশা হলুদ আলো থেকে দূরে থাকতে চায়। এছাড়া ঘরে এবং ঘরের বাইরে লাইট বাল্বগুলো পরিবর্তন করুন। মশারা সাধারণত সব লাইটের প্রতি আকৃষ্ট হয় না। এলইডি লাইট, হলুদ ‘বাগ লাইট’, বা সোডিয়াম লাইট এক্ষেত্রে উপকারী। এগুলো জ্বালালে সন্ধ্যাবেলা ঘরে বাইরে মশাদের আক্রমন অনেকটাই কমে যাবে।
চা-পাতা পোড়ান: ব্যবহৃত চা-পাতা ফেলে না দিয়ে ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিন। এইভাবে ওই চা-পাতা ধুনোর বদলে ব্যবহার করুন। শুকনো চা-পাতা পোড়ানো ধোঁয়ায় ঘরের সমস্ত মশা, মাছি পালিয়ে যাবে।
নিমপাতা পোড়ান: কয়লা বা কাঠ-কয়লার আগুনে নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হবে তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর।
ক্যাটনিপ অয়েল: ক্যাটনিপ অয়েলের হবঢ়বঃধষধপঃড়হব নামক পদার্থ মশা তাড়াতে উঊঊঞ (উরবঃযুষব-গবঃধ-ঃড়ষঁধসরফব) থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী। ক্যাটনিপ অয়েল মাখালে মশারা ধারে কাছেও ঘেঁষবে না।
বারান্দায় চামচিকার বাক্স রাখুন: ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চামচিকারারা এক ঘন্টায় কয়েকশত পোকা-মাকড় খায়। তাই মশা তাড়াতে ব্যাট হাউস বানাতে পারেন। বারান্দায় কিংবা ভেন্টিলেটরের কাছে রাখুন আর চামচিকাদের কাজ করতে দিন।
ফ্যান চালু রাখুন: মশারা খুবই হালকা। অন্যদিকে একটি ফ্যানের স্পীড ঘন্টায় প্রায় দুই মাইল। মশাদের উড়বার গতিবেগের চাইতে ফ্যানের ঘুরবার গতি অনেক বেশি হওয়ায় সহজেই মশাদের ব্লেডের কাছে টেনে নেয়। আপনার বসার স্থান কিংবা ডেক বা যেসব স্থান থেকে মশারা খুব সহজে আপনার গৃহে প্রবেশ করতে পারে, এমনসব স্থানে মশাদের আগমন সময়ে আপনার টেবিল ফ্যান বা পেডাল ফ্যানটি চালু রাখুন। মশাদের হাত থেকেও যেমন নিস্কৃতি পাবেন তেমনি গরমেও পাবেন আরাম।
কালো, নীল ও লাল কাপড় এড়িয়ে চলুন: মশার পছন্দের রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন। কি অবাক হচ্ছেন! হ্যাঁ কিছু কিছু প্রজাতির মশারা কয়েকটি গাঢ় রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয় যেমন কালো, নীল আর লাল। আর তারা গরমের প্রতিও সংবেদনশীল। তাই ঠান্ডা রাখুন ঘর আর পোষাক পড়ুন হালকা রঙের।
কর্পূরের ব্যবহার: মশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। আপনি যে কোন ফার্মেসিতে গিয়ে কর্পূরের ট্যাবলেট কিনে নিতে পারেন। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবেই মশা গায়েব হয়ে যাবে। দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। আগের পানিটুকু ফেলে দিবেন না। এই পানি ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করলে ঘরে পিঁপড়ের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন।
সুগন্ধি ব্যবহার করুন: মশা সুগন্ধি থেকে দূরে থাকে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে আতর, সুগন্ধি, কিংবা লোসন মেখে শুতে পারেন। নিশ্চিত করে বলা যায় এতে মশা সাধারণ থেকে অনেক কম দেখা যাবে।
রসুনের স্প্রে করুন: রসুনের স্প্রে মশা তাড়াতে খুবই কার্যকর প্রাকৃতিক উপায়। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে মশারা কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন। এতে করে যে কোন ধরণের রক্ত চোষারা আপনার ধারে কাছেও আসবে না।
জমানো জল থেকে দূরে থাকুন: খেয়াল রাখুন যেন কোথাও জল জমে না থাকে। ঘরের আনাচে-কানাচে কিংবা উঠোনে জল জমে থাকলে সেখানে মশারা বংশবিস্তার করতে পারে। তাই যেখানেই জল জমুক না কেন, তা সরিয়ে ফেলুন। মশার বংশবিস্তার রোধ করুন।
নারিকেলের আঁশ পোড়ান: নারিকেলের গায়ে থাকা আঁশের সাহায্য দূর করতে পারেন মশা। নারিকেলের আঁশ শুকিয়ে টুকরা করুন। একটি কাঠের পাত্রে রেখে জ্বলন্ত ম্যাচের কাঠি ধরুন। ৫-৬ মিনিটের মধ্যেই মশা দূর হবে।
কেরোসিন তেল স্প্রে: কেরোসিন তেল স্প্রে বোতলে নিন। কয়েক টুকরা কর্পূর মেশান। ভালো করে ঝাঁকিয়ে স্প্রে করুন রুমে। মশা থাকবে না।