ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক : প্রশাসনের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও আন্দোলন স্থগিত করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আয়োজিত ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় সোমবার দুপুরে। এতে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং ও ‘ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ অংশ নেয়। খেলার মাঠে স্লেজিংকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিত-া ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও হেনস্তা করার অভিযোগ তোলে উভয়পক্ষ। পরে প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান হয়ে পুনরায় খেলা শুরু হলেও আলোক স্বল্পতার কারণে খেলা বন্ধ করে পরদিন খেলার সময় নির্ধারিত হয়।
বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিম জানান, খেলা শেষে আমরা সবাই চলে আসি। হঠাৎ শুনি বঙ্গবন্ধু হলের পুকুর পাড় থেকে চিৎকার-চেচামেচি। কাছে যেতেই দেখি শিহাব নামে আমাদের এক ছাত্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনটি আঘাত করা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী শিহাব জানান, তাকে আলাদা কথা বলার জন্য বঙ্গবন্ধু হলের পুকুরপাড়ে নিয়ে যান মামুন নামে আরেক শিক্ষার্থী। সেখানে কথা বলার একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মামুন। এসময় আরও বেশ কয়েকজন ধাওয়া করলে আমি পালিয়ে বড় ভাইদের কাছে আশ্রয় নিই। পরে তারা আমাকে মেডিকেলে নিয়ে যায়।
তবে ‘ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন জানান, তিনি খেলার মাঠের বিষয়টি সমাধানের জন্য শিহাবের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলতে যান। এসময় একটা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিত-া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় বায়োটেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ছুটে আসতে দেখে তিনি পালিয়ে যান।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে রাত সাড়ে আটটায় মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষাথীরা। এছাড়া বিভাগের পক্ষ থেকে ‘ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মামুন, সাগর, নাহিদসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীর নামোল্লেখ করে বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রশাসন বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে।
পরে বিভাগের শিক্ষক মিজানুর রহমান ও রেজাউল করিম শিক্ষার্থীদের এসে জানান, মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে প্রক্টর বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে বসবেন। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাত ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া আহত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে দেখতে যান।
এসময় উপ-উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত বুদ্ধিচর্চার ক্ষেত্র। এখানে এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়া দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা যেনো ভবিষ্যতে না ঘটে, এরকম পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করবো। আর যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।