ঢাকা ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

প্রযুক্তি শিল্পে কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক কেন?

  • আপডেট সময় : ১০:৪২:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : পুরো প্রযুক্তি শিল্প জুড়েই শোনা যাচ্ছে টুইটার, মেটা, কয়েনবেইজ এবং স্ন্যাপের মতো প্রথমসারির কোম্পানিগুলোর সাবেক কর্মীদের নতুন ‘কাজের সুযোগ’ খোঁজার ঘোষণা। ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন কর্মীদের চাকরি হারানোর খবর প্রথম এসেছে ভুক্তভোগীদের লিংকডইন প্রোফাইল থেকেই।
তার পরপরই কোম্পানির ডিভাইস বিভাগের প্রধান ডেভ লিম্প ঘোষণা দিয়েছেন, “আমার কষ্ট হচ্ছে এটা বলতেৃ ডিভাইস এবং সার্ভিস ব্যবসা থেকে প্রতিভাবান অ্যামাজোনিয়ানদের হারাতে যাচ্ছি আমরা।” সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি প্রযুক্তি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে লেঅফ ডটএফওয়াইআই; সার্বিক প্রযুক্তি খাতে চাকরি খোঁয়ানো কর্মীদের হিসেব রাখে ওয়েবসাইটটি। ব্যবসার ধরনভেদে কর্মী ছাঁটাইয়ের সময় ভিন্ন ভিন্ন কারণ দেখাচ্ছে কোম্পানিগুলো। কিন্তু অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে প্রতিটি কোম্পানির ক্ষেত্রেই কিছু বিষয়ে মিল আছে।
মহামারীর লকডাউনে দৈনন্দিন জীবনের পুরোটাই যখন অনলাইন দুনিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল, তখন ব্যাপক হারে ব্যবসা বেড়েছিল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর; আর সেই সুদিন দীর্ঘস্থায়ী হবে বলেই ধরে নিয়েছিলেন কোম্পানিগুলোর নির্বাহীরা। কিন্তু সেই নির্বাহীদের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি বাস্তবতায়। এ বছরের প্রথম নয় মাসে ১৫ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছিল মেটা। বছর ঘোরার আগেই কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে সোশাল মিডিয়া জায়ান্ট। কোম্পানির নির্বাহীরা বলছেন, হিসেবে ভুল করেছেন তারা। কোম্পানির ১৩ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়ার সময় মার্ক জাকারবার্গ নিজেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, “বিনিয়োগ লক্ষণীয় হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আমিই নিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত আমি যেমনটা প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমনটা হয়নি।”
বাজার পরিবর্তন : বেশিরভাগ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের আয়ের মূল উৎস বিজ্ঞাপন। কিন্ত, বিজ্ঞাপন ব্যবসার আকাশে কালো মেঘ জট বাঁধছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সেবাগ্রাহকের ব্যক্তিগত গোপনতা লঙ্ঘন করে – বিজ্ঞাপন প্রচারের এমন কৌশলগুলো নিয়ে সমালোচনা ও বিরোধীতা বেড়েছে অনেক দিন ধরেই। ফলে, এ ধরনের ব্যবসায়িক কৌশল থেকে সরে আসার চেষ্টাও করছে অনেক প্রতিষ্ঠান।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদাহরণ সম্ভবত আইফোন নির্মাতা অ্যাপল। সেবাগ্রাহদের অনলাইন কর্মকা-ের ওপর নজরদারি এবং সেখান থেকে আসা তথ্য বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বেচার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে কোম্পানিটি। অ্যাপলের নীতিমালা পরিবর্তনের ধাক্কা গিয়ে লেগেছে ফেইসবুক তথা মেটার বিজ্ঞাপনী আয়ে। অন্যদিকে, অর্থ প্রযুক্তি খাতে সুদের হার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন কোম্পানি বিপাকে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে বাজার বিশ্লেষক পিপি ফোরসাইটের কর্মী পাওলো পেসকাতোরের মত, “বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগের জন্যই শেষ প্রান্তিক খুবই হতাশাজনক ছিল। কেউ নিরাপদ নয়।” এমনকি অ্যাপলও সতর্ক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। প্রধান নির্বাহী টিম কুক নিজেই বলেছেন, তার কোম্পানি নতুন কর্মী ‘নিয়োগ্য অব্যাহত’ রাখলেও, তা করা হচ্ছে ‘নেহাত প্রয়োজনের ভিত্তিতে’।

কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে ‘অস্বাভাবিক ও অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি’র কথা বলেছে অ্যামাজন। “বার্ষিক পরিচালনা পরিকল্পনা পুনঃমূল্যায়নের অংশ হিসেবে, আমরা আমাদের প্রতিটি ব্যবসাকে এবং যে বিষয়গুলোতে পরিবর্তন দরকার বলে মনে করি সেগুলোকে বিবেচনায় নেই,” বিবিসিকে বলেছেন অ্যামাজন মুখপাত্র কেলি ন্যানটেল।
“বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনীতিতে কিছু কর্মীদল নতুন ভাবে সমন্বয়ের কাজ করছে। ক্ষেত্রবিশেষে যার মানে দাঁড়াচ্ছে, কিছু পদ প্রয়োজনীয়তা হারাচ্ছে। আমরা এই সিদ্ধান্তগুলো হালকাভাবে নিচ্ছি না। আমাদের যে কর্মীরা এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন তাদের সমর্থন দিতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।”
‘চর্বি’ ছাঁটতে বলছেন বিনিয়োগকারীরা : বিনিয়োগকারীরাও খরচ কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তাদের ওপর। গুগল ও ইউটিউবের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের উদ্দেশ্যে লেখা এক খোলা চিঠিতে কর্মী ছাঁটাই করে অবশিষ্ট কর্মীদরে বেতন কমাতে বলেছেন বিনিয়োগকারী ক্রিপ্টোফার হন। খরচের বেলায় অ্যালফাবেটের আরও মিতব্যয়ী হওয়া উচিত এবং স্বচালিত গাড়ি নির্মাণ উদ্যোগের মত প্রকল্পগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একই দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাসী বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক; টুইটার অধিগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার আগে থেকেই কর্মী ছাঁটাইয়ে আভাস দিচ্ছিলেন তিনি। কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েই বিদায় করেছেন অন্তন তিন হাজার সাতশ কর্মীকে। ব্যবহারকারী সংখ্যা এবং মুনাফার আকার বাড়ানোর ক্ষেত্রে টুইটারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই বেশ কিছুদিন ধরেই। অন্যদিকে, বাজার বিশ্লেষকদের অনেকেরই মত, প্রাপ্যর চেয়ে বেশি দাম দিয়ে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি কিনেছেন মাস্ক। ফলে, বিনিয়োগ ওঠানোর তাগাদাও বেশি তার। অবশিষ্ট টুইটার কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম করতে অথবা ইস্তফা দিতে বলে চলমান নাটকীয়তায় আবারও নতুন মোড় এনেছেন চিফ টুইট।
সুদিন শেষ : বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাজার পর্যবেক্ষক স্কট কেসলারের মত, পুরো প্রযুক্তিখাতেই ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (ভিআর) এবং চালকবিহীন গাড়ি নির্মাণের মতো উচ্চভিলাসী প্রকল্পে বিনিয়োগ নিয়ে সহনশীলতা কমে এসেছে। বিনিয়োগ থেকে অল্প সময়ে মুনাফা পেতে আগ্রহী শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা; যা দীর্ঘমেয়াদী খরুচে প্রকল্প থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। প্রযুক্তি খাতে বেতনের উচ্চহার এবং বাড়তি খরচের বিষয়টিও পছন্দ নয় তাদের। “কিছু কোম্পানিকে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে,” বিবিসিকে বলেছেন কেসলার। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরো প্রযুক্তি শিল্পের দিক পরিবর্তন ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিজিটাল ম্যানেজমেন্ট টুল নির্মাতা ‘ওয়ার্কফোর্স সফটওয়্যার’ কর্মী মাইক মোরিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রযুক্তি শিল্পে কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক কেন?

আপডেট সময় : ১০:৪২:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২

প্রযুক্তি ডেস্ক : পুরো প্রযুক্তি শিল্প জুড়েই শোনা যাচ্ছে টুইটার, মেটা, কয়েনবেইজ এবং স্ন্যাপের মতো প্রথমসারির কোম্পানিগুলোর সাবেক কর্মীদের নতুন ‘কাজের সুযোগ’ খোঁজার ঘোষণা। ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন কর্মীদের চাকরি হারানোর খবর প্রথম এসেছে ভুক্তভোগীদের লিংকডইন প্রোফাইল থেকেই।
তার পরপরই কোম্পানির ডিভাইস বিভাগের প্রধান ডেভ লিম্প ঘোষণা দিয়েছেন, “আমার কষ্ট হচ্ছে এটা বলতেৃ ডিভাইস এবং সার্ভিস ব্যবসা থেকে প্রতিভাবান অ্যামাজোনিয়ানদের হারাতে যাচ্ছি আমরা।” সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি প্রযুক্তি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে লেঅফ ডটএফওয়াইআই; সার্বিক প্রযুক্তি খাতে চাকরি খোঁয়ানো কর্মীদের হিসেব রাখে ওয়েবসাইটটি। ব্যবসার ধরনভেদে কর্মী ছাঁটাইয়ের সময় ভিন্ন ভিন্ন কারণ দেখাচ্ছে কোম্পানিগুলো। কিন্তু অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে প্রতিটি কোম্পানির ক্ষেত্রেই কিছু বিষয়ে মিল আছে।
মহামারীর লকডাউনে দৈনন্দিন জীবনের পুরোটাই যখন অনলাইন দুনিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল, তখন ব্যাপক হারে ব্যবসা বেড়েছিল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর; আর সেই সুদিন দীর্ঘস্থায়ী হবে বলেই ধরে নিয়েছিলেন কোম্পানিগুলোর নির্বাহীরা। কিন্তু সেই নির্বাহীদের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি বাস্তবতায়। এ বছরের প্রথম নয় মাসে ১৫ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছিল মেটা। বছর ঘোরার আগেই কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে সোশাল মিডিয়া জায়ান্ট। কোম্পানির নির্বাহীরা বলছেন, হিসেবে ভুল করেছেন তারা। কোম্পানির ১৩ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়ার সময় মার্ক জাকারবার্গ নিজেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, “বিনিয়োগ লক্ষণীয় হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আমিই নিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত আমি যেমনটা প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমনটা হয়নি।”
বাজার পরিবর্তন : বেশিরভাগ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের আয়ের মূল উৎস বিজ্ঞাপন। কিন্ত, বিজ্ঞাপন ব্যবসার আকাশে কালো মেঘ জট বাঁধছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সেবাগ্রাহকের ব্যক্তিগত গোপনতা লঙ্ঘন করে – বিজ্ঞাপন প্রচারের এমন কৌশলগুলো নিয়ে সমালোচনা ও বিরোধীতা বেড়েছে অনেক দিন ধরেই। ফলে, এ ধরনের ব্যবসায়িক কৌশল থেকে সরে আসার চেষ্টাও করছে অনেক প্রতিষ্ঠান।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদাহরণ সম্ভবত আইফোন নির্মাতা অ্যাপল। সেবাগ্রাহদের অনলাইন কর্মকা-ের ওপর নজরদারি এবং সেখান থেকে আসা তথ্য বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বেচার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে কোম্পানিটি। অ্যাপলের নীতিমালা পরিবর্তনের ধাক্কা গিয়ে লেগেছে ফেইসবুক তথা মেটার বিজ্ঞাপনী আয়ে। অন্যদিকে, অর্থ প্রযুক্তি খাতে সুদের হার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন কোম্পানি বিপাকে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে বাজার বিশ্লেষক পিপি ফোরসাইটের কর্মী পাওলো পেসকাতোরের মত, “বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগের জন্যই শেষ প্রান্তিক খুবই হতাশাজনক ছিল। কেউ নিরাপদ নয়।” এমনকি অ্যাপলও সতর্ক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। প্রধান নির্বাহী টিম কুক নিজেই বলেছেন, তার কোম্পানি নতুন কর্মী ‘নিয়োগ্য অব্যাহত’ রাখলেও, তা করা হচ্ছে ‘নেহাত প্রয়োজনের ভিত্তিতে’।

কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে ‘অস্বাভাবিক ও অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি’র কথা বলেছে অ্যামাজন। “বার্ষিক পরিচালনা পরিকল্পনা পুনঃমূল্যায়নের অংশ হিসেবে, আমরা আমাদের প্রতিটি ব্যবসাকে এবং যে বিষয়গুলোতে পরিবর্তন দরকার বলে মনে করি সেগুলোকে বিবেচনায় নেই,” বিবিসিকে বলেছেন অ্যামাজন মুখপাত্র কেলি ন্যানটেল।
“বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনীতিতে কিছু কর্মীদল নতুন ভাবে সমন্বয়ের কাজ করছে। ক্ষেত্রবিশেষে যার মানে দাঁড়াচ্ছে, কিছু পদ প্রয়োজনীয়তা হারাচ্ছে। আমরা এই সিদ্ধান্তগুলো হালকাভাবে নিচ্ছি না। আমাদের যে কর্মীরা এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন তাদের সমর্থন দিতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।”
‘চর্বি’ ছাঁটতে বলছেন বিনিয়োগকারীরা : বিনিয়োগকারীরাও খরচ কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তাদের ওপর। গুগল ও ইউটিউবের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের উদ্দেশ্যে লেখা এক খোলা চিঠিতে কর্মী ছাঁটাই করে অবশিষ্ট কর্মীদরে বেতন কমাতে বলেছেন বিনিয়োগকারী ক্রিপ্টোফার হন। খরচের বেলায় অ্যালফাবেটের আরও মিতব্যয়ী হওয়া উচিত এবং স্বচালিত গাড়ি নির্মাণ উদ্যোগের মত প্রকল্পগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একই দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাসী বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক; টুইটার অধিগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার আগে থেকেই কর্মী ছাঁটাইয়ে আভাস দিচ্ছিলেন তিনি। কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েই বিদায় করেছেন অন্তন তিন হাজার সাতশ কর্মীকে। ব্যবহারকারী সংখ্যা এবং মুনাফার আকার বাড়ানোর ক্ষেত্রে টুইটারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই বেশ কিছুদিন ধরেই। অন্যদিকে, বাজার বিশ্লেষকদের অনেকেরই মত, প্রাপ্যর চেয়ে বেশি দাম দিয়ে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি কিনেছেন মাস্ক। ফলে, বিনিয়োগ ওঠানোর তাগাদাও বেশি তার। অবশিষ্ট টুইটার কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম করতে অথবা ইস্তফা দিতে বলে চলমান নাটকীয়তায় আবারও নতুন মোড় এনেছেন চিফ টুইট।
সুদিন শেষ : বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাজার পর্যবেক্ষক স্কট কেসলারের মত, পুরো প্রযুক্তিখাতেই ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (ভিআর) এবং চালকবিহীন গাড়ি নির্মাণের মতো উচ্চভিলাসী প্রকল্পে বিনিয়োগ নিয়ে সহনশীলতা কমে এসেছে। বিনিয়োগ থেকে অল্প সময়ে মুনাফা পেতে আগ্রহী শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা; যা দীর্ঘমেয়াদী খরুচে প্রকল্প থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। প্রযুক্তি খাতে বেতনের উচ্চহার এবং বাড়তি খরচের বিষয়টিও পছন্দ নয় তাদের। “কিছু কোম্পানিকে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে,” বিবিসিকে বলেছেন কেসলার। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরো প্রযুক্তি শিল্পের দিক পরিবর্তন ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিজিটাল ম্যানেজমেন্ট টুল নির্মাতা ‘ওয়ার্কফোর্স সফটওয়্যার’ কর্মী মাইক মোরিনি।