নিজস্ব প্রতিবেদক : কিছু মানুষের জন্য’ নির্বাচন কমিশনের সুনাম নষ্ট হচ্ছে মন্তব্য করে কর্মকর্তাদের জনগণের ‘সেবক’ হিসাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে এক কর্মশালায় তিনি বলেন, “আমরা কাজে যোগ দিই জনগণের ভৃত্য হিসেবে; আর কাজে যোগ দিয়ে প্রভুর মতো আচরণ করি। “কিন্তু আমাদের প্রভুর মত আচরণ করলে চলবে না। আমাদেরকে অন্তর দিয়ে জনগণের সেবক হিসেবে, ভৃত্য হিসেবে নিজেদেরকে মেনে নিতে হবে।”
মঙ্গলবার ‘এনআইডি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমস্যা নিরসনের উপায় নির্ধারণ’ শীর্ষক এক কর্মশালার উদ্বোধন করেন সিইসি।
জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে কেউ যেন ভোগান্তির শিকার না হয়, সে বিষয়ে জোর দিয়ে সিইসি বলেন, “সব দিক থেকে আমাদের নৈতিক অধঃপতন হয়েছে। আমাদের সব কাজে তদবির করতে হয়।ৃকিছু কিছু মানুষের জন্য সুনাম বিঘিœত হচ্ছে। এ নিয়ে সবার সতর্ক থাতে হবে।”
এনআইডি সংশোধনের কাজে নাগরিকদের ভোগান্তির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই দুর্ভোগ কমাতে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে দ্বৈত ভোটার সংক্রান্ত কার্যক্রম, অন্য কারও সঙ্গে তথ্য মিলে যাওয়ার ক্ষেত্রে করণীয় নির্ধারণ; দ্বৈত নাগরিকদের এনআইডি দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন এবং মৃত ভোটার সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্ধারণের সুপারিশ তৈরি করা হয় কর্মশালায়। আঞ্চলিক/জেলা/উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিটিউটের কর্মকর্তারা এ কর্মশালায় অংশ নেন। সিইসি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন ‘অপরিসীম’। এতে বিভিন্ন কারণে ভুল হতে পারে। ভুল সংশোধন নিয়ে অনেকেই আসছেন, ফলে এটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
“পরিচয়পত্র দৈনিনন্দিন কার্যক্রম সহজ করে দিয়েছে। এখন সমস্যাগুলো আইডেন্টিফাই করতে হবে। কারেকশনের ক্ষেত্রে কিন্তু ‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’ তা নয়। আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়।”
আউয়াল বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা যদি দক্ষতার সাথে এবং সততার সাথে দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে পুরো নির্বাচন কমিশনকে সেই বদনামের দায়ভার নিতে হয়। এ বিষয়টি নজরে রাখতে হবে।”
বর্তমানে ১১ কোটি ৩২ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছেন। ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর নাগরিকদের এনআইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি স্মার্ট কার্ড দেওয়াও চলমান রয়েছে। এনআইডি সেবাকে কেন্দ্র করে নাগরিকদের আস্থা অর্জনের কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান। কোনোভাবেই নাগরিকরা যাতে দুর্ভোগের শিকার না হন সে বিষয়ে তৎপর থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিচয়পত্রে ছোটোখাটো ভুল সংশোধনে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ নেওয়ার পক্ষে মত দেন এ নির্বাচন কমিশনার। মাঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “প্রতি মাসে এনআইডি সেবা নিতে কত আবেদন পড়েছে, সেই সঙ্গে যেসব আবেদন নিষ্পত্তি করা যায়নি, তার কারণ উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে।” দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ ও অসাধু কর্মকা-ে ইসির কোনো কর্মী সম্পৃক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান এ নির্বাচন কমিশনার। ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
‘প্রভুর মত’ আচরণে ইসির সুনাম নষ্ট হচ্ছে: সিইসি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ