ঢাকা ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

প্রধান বিচারপতিকে তরবারি দেয়া নজিরবিহীন, বললেন রিজভী

  • আপডেট সময় : ০১:৩৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১২২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রধান বিচারপতিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধানের তরবারি উপহার দেয়াকে নজিরবিহীন ঘটনা উল্লেখ করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন অনুযায়ী কোনো অস্ত্রদাতা বা গ্রহীতা যদি অস্ত্র দেন বা নেন, যিনি দেবেন এবং যিনি গ্রহণ করবেন তাদের সাজা হবে। আমরা কয়েকদিন আগে দেখলাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যিনি প্রধান তিনি তরবারি দিচ্ছেন দেশের যিনি আইনের অভিভাবক, প্রধান বিচারপতি, তাকে। এই যে তরবারি দিয়েছেন তার কি কোনো লাইসেন্স আছে বলেছেন আপনাদের কাছে? এর ন্যূনতম সাজা ৭ বছর কারাদ-।’
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ওলামা দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। সেই সময়ে ইরাকের রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন একটি অস্ত্র দিয়েছিল, যেটি তার বাসায় ছিল। এটার কারণে এরশাদের সাজা হয়েছিল। তখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন। এই যে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান তিনি যে তরবারি দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতিকে এটা কোন আইনে দিলেন? আসলে ওরা দেশের প্রচলিত কোনো আইনকানুন তোয়াক্কা করে না, আমি আগেও বলেছি। তারা মনে করে শেখ হাসিনার কথাই আইন।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘যারা শেখ হাসিনার তল্পি বহন করে, যারা শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসন এবং ফ্যাসিজমকে সমর্থন করে তারা যা কিছু করে এটাই হচ্ছে বৈধ। পৃথিবীতে কোনো দৃষ্টান্ত আছে এ ধরনের ঘটনার, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান, যিনি দেশের প্রধান বিচারপতিকে তরবারি দিচ্ছেন? প্রধান বিচারপতি যিনি থাকেন ন্যায়বিচার করার জন্য নীরবে নিভৃতে কেউ যাতে তাকে পক্ষপাতিত্বের দিকে না নিতে পারেন সেটাই হচ্ছে ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত।’
‘এত বড় অন্যায় করলেন এর সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদ-। সর্বনি¤œ সাজা হবে ৭ বছর জেল। এরশাদ তার উদাহরণ’- বলেন রিজভী। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন ডিসি-এসপিরা নৌকার পক্ষে ভোট চায়। তারা কাউকে পছন্দ করতে পারেন, ভোট দিতে পারেন। কিন্তু প্রকাশ্যে কোনো দলের পক্ষে ভোট চাইতে পারেন না।’
‘নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন ডিসি, তাহলে কীভাবে একজন ডিসি নৌকার পক্ষ ভোট চান’- এই প্রশ্ন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনার আগামী নির্বাচন কত একতরফা ও গণবিরোধী হবে তার নমুনা এখনই ফুটে উঠেছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রী কত অন্যায় কথা বলেছেন কত ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার করেছেন। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সম্পর্কেও অনেক আজেবাজে কথা বলেছেন অপপ্রচার চালিয়েছেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার পর একটিও প্রমাণ করতে পারেননি। তখন তিনি যে মিথ্যাচার করেছিলেন তারপরও তাকে কিন্তু তখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। শেখ হাসিনা এবং তাদের নেতাকর্মীদেরকে জুলুম নির্যাতন করা হয়নি।’ ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ও তারা তাদের স্বাধীনতা ভোগ করেছে’ বলেন রিজভী। খালেদা জিয়া অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি, সরকার তাকে মুক্তি দেবে। তিনি যেখানে উন্নত চিকিৎসা চান, নাগরিক অধিকার হিসেবে সেই দাবি পূরণ করবে।’ এসময় ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা কাজী সেলিম রেজা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা কাজী আলমগীর হোসেন, মাওলানা কাজী আবুল হোসেন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান শামীম, মাওলানা মফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান বিচারপতিকে তরবারি দেয়া নজিরবিহীন, বললেন রিজভী

আপডেট সময় : ০১:৩৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রধান বিচারপতিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধানের তরবারি উপহার দেয়াকে নজিরবিহীন ঘটনা উল্লেখ করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন অনুযায়ী কোনো অস্ত্রদাতা বা গ্রহীতা যদি অস্ত্র দেন বা নেন, যিনি দেবেন এবং যিনি গ্রহণ করবেন তাদের সাজা হবে। আমরা কয়েকদিন আগে দেখলাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যিনি প্রধান তিনি তরবারি দিচ্ছেন দেশের যিনি আইনের অভিভাবক, প্রধান বিচারপতি, তাকে। এই যে তরবারি দিয়েছেন তার কি কোনো লাইসেন্স আছে বলেছেন আপনাদের কাছে? এর ন্যূনতম সাজা ৭ বছর কারাদ-।’
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ওলামা দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। সেই সময়ে ইরাকের রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন একটি অস্ত্র দিয়েছিল, যেটি তার বাসায় ছিল। এটার কারণে এরশাদের সাজা হয়েছিল। তখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন। এই যে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান তিনি যে তরবারি দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতিকে এটা কোন আইনে দিলেন? আসলে ওরা দেশের প্রচলিত কোনো আইনকানুন তোয়াক্কা করে না, আমি আগেও বলেছি। তারা মনে করে শেখ হাসিনার কথাই আইন।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘যারা শেখ হাসিনার তল্পি বহন করে, যারা শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসন এবং ফ্যাসিজমকে সমর্থন করে তারা যা কিছু করে এটাই হচ্ছে বৈধ। পৃথিবীতে কোনো দৃষ্টান্ত আছে এ ধরনের ঘটনার, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান, যিনি দেশের প্রধান বিচারপতিকে তরবারি দিচ্ছেন? প্রধান বিচারপতি যিনি থাকেন ন্যায়বিচার করার জন্য নীরবে নিভৃতে কেউ যাতে তাকে পক্ষপাতিত্বের দিকে না নিতে পারেন সেটাই হচ্ছে ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত।’
‘এত বড় অন্যায় করলেন এর সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদ-। সর্বনি¤œ সাজা হবে ৭ বছর জেল। এরশাদ তার উদাহরণ’- বলেন রিজভী। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন ডিসি-এসপিরা নৌকার পক্ষে ভোট চায়। তারা কাউকে পছন্দ করতে পারেন, ভোট দিতে পারেন। কিন্তু প্রকাশ্যে কোনো দলের পক্ষে ভোট চাইতে পারেন না।’
‘নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন ডিসি, তাহলে কীভাবে একজন ডিসি নৌকার পক্ষ ভোট চান’- এই প্রশ্ন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনার আগামী নির্বাচন কত একতরফা ও গণবিরোধী হবে তার নমুনা এখনই ফুটে উঠেছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রী কত অন্যায় কথা বলেছেন কত ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার করেছেন। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সম্পর্কেও অনেক আজেবাজে কথা বলেছেন অপপ্রচার চালিয়েছেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার পর একটিও প্রমাণ করতে পারেননি। তখন তিনি যে মিথ্যাচার করেছিলেন তারপরও তাকে কিন্তু তখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। শেখ হাসিনা এবং তাদের নেতাকর্মীদেরকে জুলুম নির্যাতন করা হয়নি।’ ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ও তারা তাদের স্বাধীনতা ভোগ করেছে’ বলেন রিজভী। খালেদা জিয়া অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি, সরকার তাকে মুক্তি দেবে। তিনি যেখানে উন্নত চিকিৎসা চান, নাগরিক অধিকার হিসেবে সেই দাবি পূরণ করবে।’ এসময় ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা কাজী সেলিম রেজা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা কাজী আলমগীর হোসেন, মাওলানা কাজী আবুল হোসেন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান শামীম, মাওলানা মফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।