নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন চীন সফরে বিনিয়োগ ও বাংলাদেশে ‘শিল্প ‘স্থানান্তরের’ বিষয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রোববার (১৬ মার্চ) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব বলেন, সফরে মূল ফোকাস হবে চীনের সিইওদের (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবে পরিণত করা।
চার দিনের সফর আগামী ২৬ মার্চ চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তার।
সেই সফর নিয়ে কথা বলতে রোববার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
এ সাক্ষাতের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এটা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সফর। দুই দেশ কূটনীতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করছে।
বৈঠকে সফরসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, ২৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। এশিয়ার শীর্ষনেতাদের পাশাপাশি বড় বড় কোম্পানির সিইওরা সেখানে থাকেন।
সাইডলাইনে চীনের বড় কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার মিটিং হতে পারে। এসব মিটিংয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে চীনের কারখানাগুলো ‘রিলোকেট’ করা।
প্রেস সচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ফোকাস থাকবে চীনের কোম্পানিগুলো যেন তাদের কারখানা বাংলাদেশে রিলোকেট করে। প্রধান উপদেষ্টা আগেও চীনের সোলার কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কারণ, বৈশ্বিকভাবে চীন অনেক ট্রেড বেরিয়ারের মধ্যে পড়ে গেছে।
বাংলাদেশে থেকে উৎপাদন করে যদি রপ্তানি করে, তাহলে কোনো বাধার মুখে পড়বে না। দুটি কোম্পানি বাংলাদেশে অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একটি হচ্ছে ‘লংগি’। এটা বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোলার প্যানেল কোম্পানি। বিশ্বের ৭০ ভাগ সোলার তারা তৈরি করে। বাংলাদেশে তারা আসা মানে এ খাতে প্রচুর জব তৈরি হবে এবং এক্সপোর্ট করা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, সফরকালে পিকিং ইউনিভার্সিটিতে বক্তব্য রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা। পিকিং ইউনিভার্সিটি প্রধান উপদেষ্টাকে একটি সম্মানসূচক ডিগ্রি দেবে। এছাড়া তিনি চীনের হাইটেক পার্কে যাবেন। সেখানে ইলেক্ট্রিক ভেহিকল, সোলার প্লান্ট ও চিপস কারখানা পরিদর্শন করবেন।
চীনের কারখানাগুলো কীভাবে বাংলাদেশে স্থানান্তর করা যায় এটা হবে সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য। অন্তর্বর্তী সরকার উৎপাদন শিল্পে বড় ধরনের বিপ্লব ঘটাতে চায়। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা কতটা বাড়ানো যায়, সেদিকেও সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ৫ আগস্টের পর চীনের কোম্পানিগুলো গত সাত মাসে বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। এই সফরের পর প্রচুর বিনিয়োগ আসবে। চীনের যে হাসপাতাল সেবা আছে এর সঙ্গে যত ধরনের আন্তঃসংযোগ করা যায়। চীনের হাসপাতাল চেইনগুলো যেন বাংলাদেশে এসে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে, প্রধান উপদেষ্টা সেটাও চাচ্ছেন।