নিজস্ব প্রতিবেদক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শনিবার রাতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহল কবির রিজভী বলেছেন, ‘অবৈধ সরকার ছাত্রলীগকে এক কুৎসিত সংগঠনের পরিণত করেছেন। তারা নারীর শ্লীলতাহানিকে অবাধ করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের জন্য।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের দেশের মধ্যে ইন্টার্নাল নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি করেছে। তার নাম ছাত্রলীগ। তাদেরকে অবাধ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে যে তোমরা যা ইচ্ছা তাই করো কিন্তু বিএনপি যুবদল ছাত্রদলের মিছিল দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। বেআইনি অস্ত্র দিয়ে ধাওয়া করবে এই লাইসেন্স তাদেরকে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জিয়া পরিষদের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে ভয় পান শেখ হাসিনা। কিন্তু ছাত্রলীগ নারী নির্যাতন করলে তিনি শেখ হাসিনা কোন কথা বলেন না। শেখ হাসিনা নারীর শ্লীলতাহানিকে অবাধ করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের জন্য। ২০২০ সালে সিলেটে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে নির্যাতন করা হয়েছে তার কোন বিচার হয় নাই কারণ কোর্ট তাদের পুলিশ তাদের। তাদের বিচার হবে কেন?
রিজভী বলেন, বিচার হয় গণতন্ত্রের কথা বললে মিছিল বের করলে তাদেরকে ধরে নিয়ে বন্দী করে রাখা হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল তারা আজ জেলে কারণ তারা বক্তৃতায় গণতন্ত্রের কথা বলেছিল। আর যুবলীগ ছাত্রলীগ ক্যাসিনো খুলবে সুন্দরী নারীদেরকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করবে গত রবিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে জঘন্য ঘটনা ঘটেছে তারপরও কি প্রধানমন্ত্রী আপনার টনক নড়েনি? আপনি শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে এক কুৎসিত সংগঠনের পরিণত করেছেন। তাদেরকে দিয়ে আপনি বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছেন আবরার কে হত্যা করিয়েছেন। আর এই কারণে তারা আস্কারা পেয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে শ্রীলতাহানি করেছে। এদেশের কাছে কোন নারী শিশু সাধারণ জনগণের কোন নিরাপত্তা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার অন্যায় অত্যাচারের কারণেই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আনতে হবে।গণতন্ত্র ফিরে আসলে ছাত্রলীগ যুবলীগের যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার হবে। রিজভী আরও বলেন, আমরা এখন দেখছি দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব জলাঞ্জলি দিয়ে মায়ানমারের মর্টার শেলে বাংলাদেশের জনগণ মারা যাচ্ছে কিন্তু তারা একটি বিবৃতি দেয়নি। একটু প্রতিবাদও করে না প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কারণ মাথাতো আগেই বিক্রি করে দিয়েছে যারা মাথা বিক্রি করে তারা কিছুই বলতে পারে না। এ সময় বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া পরিষদের সভাপতি প্রফেসর আব্দুল কুদ্দুস, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, যুবদলের সাহিত্য প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত,ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার প্রমুখ উপস্থিত ছিল।
আজ বিএনপির বিশেষ সংবাদ সম্মেলন: নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডেকেছে বিএনপি। আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। বিশেষ এ সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের পরে এটাই বিএনপির বড় সংবাদ সম্মেলন। এই সংবাদ সম্মেলন থেকে কারাগারে থাকা দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির নেতা এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের জামিন না পাওয়াসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হবে। এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্তে হত্যা, দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়গুলোও তুলে ধরা হবে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।