ঢাকা ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে বদলে গেছে শেফালীর জীবন

  • আপডেট সময় : ১১:২৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে পাল্টে গেছে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার একমাত্র নারী নরসুন্দর শেফালী রানী’র জীবন। এক যুগ ধরে তিনি উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় দোগনা বাজারে সেলুনের কাজ করে ৫ সন্তানকে লেখা পড়া করাচ্ছেন। শেফালী রানীর স্বামী যাদব শীল নর সুন্দরের কাজ করতেন। তাই দিয়ে ভালোই চলতো তাদের সংসার। হঠাৎ ২০১২ সালে স্বামী যাদব শীল মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে নিরুদ্দেশ হন। এরপর শেফালীর জীবনে নেমে আসে দুর্দিন। ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে অসহায় হয়ে পরেন তিনি। এক সময় অন্যের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘর করে সেখানে থাকা শুরু করেন তিনি। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে কোনো উপায় না পেয়ে সংসারের হাল ধরেন শেফালী রানী নিজেই। বেছে নেন স্বামীর পেশা। জীবন যুদ্ধে হার না মানা সেফালী রানী অদম্য সাহস নিয়ে এক যুগ ধরে স্থানীয় দোগনা বাজারে রাস্তার পাশে অন্যের একটি ঘরের বারান্দায় নিজেই সেলুনের কাজ শুরু করেন। তার উপার্জিত অর্থ দিয়েই ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজে লেখাপড়া করান। তার নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বাঁশের তৈরি একটি ঝুপড়ি ঘরে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে তাকে বলতলা গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৪ শতাংশ জমিসহ একটি সেমি পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। আর এতেই পাল্টে যায় নারী নরসুন্দর শেফালী রানীর জীবন। এরপর তিনি ঢাকা গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেন। তাকে জমিসহ পাকা বাড়ি করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি ও স্থানীয়রা। নর সুন্দর শেফালী রানী বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি সন্তানদের নিয়ে আমি পাকা বাড়িতে থাকতে পারবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মা হয়ে আমাকে ঘর বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। আমার মাও এ রকমের করে দিতে পারেনি। আমাদের জন্য এমন করতে পারেনি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।’
শেফালী রানীর সন্তানরা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের কি সুন্দর একটা বাড়ি করে দিয়েছেন। এখন আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। এখন তার দেওয়া পাকা বাড়িতে বসবাস করতে পারি। এর জন্য তাকে আমরা অনেক ধন্যবাদ জানাই।’
স্থানীয়রা বলেন, ‘শেফালী জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছেন। বাজারে সেলুনের কাজ করে তার সংসার চালিয়েছেন। এখন শেফালী রানীকে প্রধানমন্ত্রী একখানা ঘর তুলে দিয়েছেন। এখন তিনি পরিবার নিয়ে সুন্দরভাবে বসবাস করছেন। তাদের স্থায়ীভাবে থাকার একটা ব্যবস্থা হয়েছে। সন্তানদের নিয়ে এখন তিনি সুখে আছেন।’
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, শেফালীর জীবিকা নির্বাহের জন্য স্থানীয় দোগনা বাজারে খুব শিগগিরই একটি দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। যার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এবং তার বাড়িতে টিউবল ও অন্যান্য যেসব সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে বদলে গেছে শেফালীর জীবন

আপডেট সময় : ১১:২৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ ডিসেম্বর ২০২১

নারী ও শিশু ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে পাল্টে গেছে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার একমাত্র নারী নরসুন্দর শেফালী রানী’র জীবন। এক যুগ ধরে তিনি উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় দোগনা বাজারে সেলুনের কাজ করে ৫ সন্তানকে লেখা পড়া করাচ্ছেন। শেফালী রানীর স্বামী যাদব শীল নর সুন্দরের কাজ করতেন। তাই দিয়ে ভালোই চলতো তাদের সংসার। হঠাৎ ২০১২ সালে স্বামী যাদব শীল মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে নিরুদ্দেশ হন। এরপর শেফালীর জীবনে নেমে আসে দুর্দিন। ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে অসহায় হয়ে পরেন তিনি। এক সময় অন্যের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘর করে সেখানে থাকা শুরু করেন তিনি। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে কোনো উপায় না পেয়ে সংসারের হাল ধরেন শেফালী রানী নিজেই। বেছে নেন স্বামীর পেশা। জীবন যুদ্ধে হার না মানা সেফালী রানী অদম্য সাহস নিয়ে এক যুগ ধরে স্থানীয় দোগনা বাজারে রাস্তার পাশে অন্যের একটি ঘরের বারান্দায় নিজেই সেলুনের কাজ শুরু করেন। তার উপার্জিত অর্থ দিয়েই ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজে লেখাপড়া করান। তার নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বাঁশের তৈরি একটি ঝুপড়ি ঘরে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে তাকে বলতলা গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৪ শতাংশ জমিসহ একটি সেমি পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। আর এতেই পাল্টে যায় নারী নরসুন্দর শেফালী রানীর জীবন। এরপর তিনি ঢাকা গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেন। তাকে জমিসহ পাকা বাড়ি করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি ও স্থানীয়রা। নর সুন্দর শেফালী রানী বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি সন্তানদের নিয়ে আমি পাকা বাড়িতে থাকতে পারবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মা হয়ে আমাকে ঘর বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। আমার মাও এ রকমের করে দিতে পারেনি। আমাদের জন্য এমন করতে পারেনি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।’
শেফালী রানীর সন্তানরা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের কি সুন্দর একটা বাড়ি করে দিয়েছেন। এখন আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। এখন তার দেওয়া পাকা বাড়িতে বসবাস করতে পারি। এর জন্য তাকে আমরা অনেক ধন্যবাদ জানাই।’
স্থানীয়রা বলেন, ‘শেফালী জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছেন। বাজারে সেলুনের কাজ করে তার সংসার চালিয়েছেন। এখন শেফালী রানীকে প্রধানমন্ত্রী একখানা ঘর তুলে দিয়েছেন। এখন তিনি পরিবার নিয়ে সুন্দরভাবে বসবাস করছেন। তাদের স্থায়ীভাবে থাকার একটা ব্যবস্থা হয়েছে। সন্তানদের নিয়ে এখন তিনি সুখে আছেন।’
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, শেফালীর জীবিকা নির্বাহের জন্য স্থানীয় দোগনা বাজারে খুব শিগগিরই একটি দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। যার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এবং তার বাড়িতে টিউবল ও অন্যান্য যেসব সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হবে।