ঢাকা ০১:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

প্রতিবন্ধী শিশুরা ঘৃণার পাত্র নয়, দেশ ও জাতির সম্পদ

  • আপডেট সময় : ০৭:০১:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধী শিশুদের অনেকটা হেয় করে অথবা নীচু চোখে দেখা হয়। তাদের প্রায়ই অবহেলা করা হয়ে থাকে শুধু প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রতিবন্ধী শিশুরাও যে অনেক প্রতিভাবান হতে পারে, সেটি একদমই বুঝতে চেষ্টা করি না। প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও অনেক শিশুই নিজেদের মেধা আর দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এগুলো আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে। শত বাধা-বিপত্তি পার করে তাদের সফলতার সংবাদ প্রায়ই দেখা যায়। এ বিষয় নিয়েই এবারে নারী ও শিশু পাতার প্রধান ফিচার

বয়স, লিঙ্গ, জাতি, সংস্কৃতি বা সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী অন দশজন যে কাজগুলো করতে পারে, ইমপেয়ারমেন্টের কারণে ওই কাজগুলো প্রাত্যহিক জীবনে করতে না পারার অবস্থাটাই হলো ডিসএবিলিটি বা প্রতিবন্ধিতা। ইমপেয়ারমেন্ট হলো দেহের কোনো অংশ বা তন্ত্র যদি আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবে, ক্ষণস্থায়ী অথবা চিরস্থায়ীভাবে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায়; তাহলে ওই অবস্থাটিকেই বোঝায়।

সামাজিকভাবে প্রতিবন্ধীদের অবহেলার চোখে দেখা হলেও এখন সময় এসেছে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়; বরং মেধা, দক্ষতা আর সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারাও সমাজ, দেশ ও জাতির সম্পদে পরিণত হতে পারে।

এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক প্রতিবন্ধী শিশুরা বিশেষ কোনো দক্ষতায় পারদর্শী হয়, এক্ষেত্রে তাদের জন্য আরো উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

প্রতিবন্ধীদের সহজে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে যেন তারা দ্রুত স্বনির্ভর হতে পারে। সমাজে তাদের নিয়ে বিভিন্ন গঠনমূলক এবং সৃষ্টিশীল কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। এতে তাদের নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হবে এবং তারাও নিজেদের কর্মঠ ভাববে।

প্রতিবন্ধী শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য সুস্থ, সুন্দর পরিবেশ তৈরি করাটা জরুরি। এ জন্য তাদের নিয়ে চিত্তবিনোদন, খেলাধুলা ইত্যাদির আয়োজন করা যেতে পারে। প্রতিবন্ধী শিশুদের ঘৃণা বা অবহেলার চোখে দেখার যে প্রবণতা সমাজে চলমান, সেটি বন্ধ করার জন্য প্রচার, প্রচারণা চালানো যেতে পারে। এতে পরিবারের ভূমিকার বিকল্প নেই।

সুস্থ বিনোদন, প্রতিভা বিকাশের সঠিক এবং পর্যাপ্ত সুযোগ, বেড়ে উঠার জন্য উপযোগী পরিবেশ পেলে প্রতিবন্ধী শিশুরাও তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারবে।

আশার কথা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাবলম্বী নাগরিকরূপে গড়ে তুলছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা হলো বিশ্বের বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী এবং এই জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮০ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, বর্তমান পৃথিবীতে এক বিলিয়নের বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছে; যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ।

সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অর্থাৎ প্রতি দশজনে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ মোট ১২টি প্রতিবন্ধিতা চিহ্নিত করেছে- ১. অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার, ২. শারীরিক প্রতিবন্ধিতা, ৩. মানসিক অসুস্থতাজনিত প্রতিবন্ধিতা, ৪. দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা, ৫. বাক্প্রতিবন্ধিতা, ৬. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা, ৭. শ্রবণপ্রতিবন্ধিতা, ৮. সেরিব্রাল পালসি, ৯. ডাউন সিনড্রোম, ১০. শ্রবণ-দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা, ১১. বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতা ১২. অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা।

আশা করব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের (২০১৩) আলোকে প্রণীত বিধিমালা এবং জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় গঠিত উপজেলা, জেলা ও জাতীয় সমন্বয় কমিটিগুলো কার্যকর থাকুক প্রশ্নাতীতভাবে। সরকারি-বেসরকারি, সুশীল সমাজ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনগুলোর সমন্বিত ও উদ্যোগ ভালো উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত হোক। আমরা জানি,বাংলাদেশ সরকারের অধীন সব চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য ১ শতাংশ কোটা বরাদ্দ আছে। সরকারের সহযোগিতা সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির হাতে পৌঁছে যাক। আমাদের অবকাঠামো প্রতিবন্ধীবান্ধব হোক। আমরা যেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য আরও প্রশিক্ষণ ও কাজের জায়গা ও পরিবেশ তৈরি করতে পারি।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদ অনুসারে প্রতিবন্ধিতা অর্থ যেকোনো কারণে ঘটিত দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ীভাবে কোনো ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, বিকাশগত বা ইন্দ্রিয়গত ক্ষতিগ্রস্ততা বা প্রতিকূলতা যা উক্ত ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিগত ও পরিবেশগত বাধার পারস্পরিক প্রভাব তৈরি করে এবং যে কারণে উক্ত ব্যক্তি সমতার ভিত্তিতে সমাজে পূর্ণ ও কার্যকর অংশগ্রহণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই আসুন, শুধু মনে রাখি- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আসলে প্রতিবন্ধী নয়, তারা মানুষ।

বাংলাদেশের সব সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত আছে। তা ছাড়া সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাসেবার আওতায় প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাসেবার ‘সুবর্ণ কার্ড’ সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যেন পেতে পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অন্তর্ভুক্তি’ হোক সব উন্নয়ন-আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের উন্নয়ন ভাবনা যেমন নারীর জন্য, শিশুর জন্য, কিশোর-কিশোরীদের জন্য, প্রবীণদের জন্য, তেমনি হোক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রতিবন্ধী শিশুরা ঘৃণার পাত্র নয়, দেশ ও জাতির সম্পদ

আপডেট সময় : ০৭:০১:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধী শিশুদের অনেকটা হেয় করে অথবা নীচু চোখে দেখা হয়। তাদের প্রায়ই অবহেলা করা হয়ে থাকে শুধু প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রতিবন্ধী শিশুরাও যে অনেক প্রতিভাবান হতে পারে, সেটি একদমই বুঝতে চেষ্টা করি না। প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও অনেক শিশুই নিজেদের মেধা আর দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এগুলো আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে। শত বাধা-বিপত্তি পার করে তাদের সফলতার সংবাদ প্রায়ই দেখা যায়। এ বিষয় নিয়েই এবারে নারী ও শিশু পাতার প্রধান ফিচার

বয়স, লিঙ্গ, জাতি, সংস্কৃতি বা সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী অন দশজন যে কাজগুলো করতে পারে, ইমপেয়ারমেন্টের কারণে ওই কাজগুলো প্রাত্যহিক জীবনে করতে না পারার অবস্থাটাই হলো ডিসএবিলিটি বা প্রতিবন্ধিতা। ইমপেয়ারমেন্ট হলো দেহের কোনো অংশ বা তন্ত্র যদি আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবে, ক্ষণস্থায়ী অথবা চিরস্থায়ীভাবে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায়; তাহলে ওই অবস্থাটিকেই বোঝায়।

সামাজিকভাবে প্রতিবন্ধীদের অবহেলার চোখে দেখা হলেও এখন সময় এসেছে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়; বরং মেধা, দক্ষতা আর সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারাও সমাজ, দেশ ও জাতির সম্পদে পরিণত হতে পারে।

এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক প্রতিবন্ধী শিশুরা বিশেষ কোনো দক্ষতায় পারদর্শী হয়, এক্ষেত্রে তাদের জন্য আরো উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

প্রতিবন্ধীদের সহজে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে যেন তারা দ্রুত স্বনির্ভর হতে পারে। সমাজে তাদের নিয়ে বিভিন্ন গঠনমূলক এবং সৃষ্টিশীল কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। এতে তাদের নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হবে এবং তারাও নিজেদের কর্মঠ ভাববে।

প্রতিবন্ধী শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য সুস্থ, সুন্দর পরিবেশ তৈরি করাটা জরুরি। এ জন্য তাদের নিয়ে চিত্তবিনোদন, খেলাধুলা ইত্যাদির আয়োজন করা যেতে পারে। প্রতিবন্ধী শিশুদের ঘৃণা বা অবহেলার চোখে দেখার যে প্রবণতা সমাজে চলমান, সেটি বন্ধ করার জন্য প্রচার, প্রচারণা চালানো যেতে পারে। এতে পরিবারের ভূমিকার বিকল্প নেই।

সুস্থ বিনোদন, প্রতিভা বিকাশের সঠিক এবং পর্যাপ্ত সুযোগ, বেড়ে উঠার জন্য উপযোগী পরিবেশ পেলে প্রতিবন্ধী শিশুরাও তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারবে।

আশার কথা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাবলম্বী নাগরিকরূপে গড়ে তুলছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা হলো বিশ্বের বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী এবং এই জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮০ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, বর্তমান পৃথিবীতে এক বিলিয়নের বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছে; যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ।

সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অর্থাৎ প্রতি দশজনে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ মোট ১২টি প্রতিবন্ধিতা চিহ্নিত করেছে- ১. অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার, ২. শারীরিক প্রতিবন্ধিতা, ৩. মানসিক অসুস্থতাজনিত প্রতিবন্ধিতা, ৪. দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা, ৫. বাক্প্রতিবন্ধিতা, ৬. বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা, ৭. শ্রবণপ্রতিবন্ধিতা, ৮. সেরিব্রাল পালসি, ৯. ডাউন সিনড্রোম, ১০. শ্রবণ-দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা, ১১. বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতা ১২. অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা।

আশা করব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের (২০১৩) আলোকে প্রণীত বিধিমালা এবং জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় গঠিত উপজেলা, জেলা ও জাতীয় সমন্বয় কমিটিগুলো কার্যকর থাকুক প্রশ্নাতীতভাবে। সরকারি-বেসরকারি, সুশীল সমাজ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনগুলোর সমন্বিত ও উদ্যোগ ভালো উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত হোক। আমরা জানি,বাংলাদেশ সরকারের অধীন সব চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য ১ শতাংশ কোটা বরাদ্দ আছে। সরকারের সহযোগিতা সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির হাতে পৌঁছে যাক। আমাদের অবকাঠামো প্রতিবন্ধীবান্ধব হোক। আমরা যেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য আরও প্রশিক্ষণ ও কাজের জায়গা ও পরিবেশ তৈরি করতে পারি।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদ অনুসারে প্রতিবন্ধিতা অর্থ যেকোনো কারণে ঘটিত দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ীভাবে কোনো ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, বিকাশগত বা ইন্দ্রিয়গত ক্ষতিগ্রস্ততা বা প্রতিকূলতা যা উক্ত ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিগত ও পরিবেশগত বাধার পারস্পরিক প্রভাব তৈরি করে এবং যে কারণে উক্ত ব্যক্তি সমতার ভিত্তিতে সমাজে পূর্ণ ও কার্যকর অংশগ্রহণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই আসুন, শুধু মনে রাখি- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আসলে প্রতিবন্ধী নয়, তারা মানুষ।

বাংলাদেশের সব সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত আছে। তা ছাড়া সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাসেবার আওতায় প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাসেবার ‘সুবর্ণ কার্ড’ সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যেন পেতে পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অন্তর্ভুক্তি’ হোক সব উন্নয়ন-আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের উন্নয়ন ভাবনা যেমন নারীর জন্য, শিশুর জন্য, কিশোর-কিশোরীদের জন্য, প্রবীণদের জন্য, তেমনি হোক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ