ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

প্রতিদিন যে পরিমাণ ফল ও সবজি খাওয়া দরকার

  • আপডেট সময় : ১০:৫৯:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: তবে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ বা জীবনযাপনের ওপর সবজি ও ফল খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে না।
পর্যাপ্ত সবজি ও ফল খাওয়ার উপকারিতা
প্রকার ভেদে উপকারিতা ভিন্ন হতে পারে। তবে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য হাতের নাগালে থাকা বেশিরভাগ ফল ও সবিজতে থাকা উপাদানে তেমন কোনো ভিন্নতা নেই।
ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস
আঁশ: সব ধরনের ফল ও সবজিতে কিছু পরিমাণ হলেও আঁশ থাকে, যা স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেইটস- রিয়েলসম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক পুষ্টিবিদ ক্রিস্টিনা ম্যানিয়ান। এই উপাদান সার্বিকভাবে অন্ত্র, রোগ প্রতিরোধ ও বিপাকীয় ক্ষমতা এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
প্রোটিন: শক্তি ও দেহের সার্বিক গঠনের জন্য দরকারী এই উপাদান শুধু মাংস নয় সবজি ও ফল থেকেও পাওয়া যায়। ছোলা, মটর, ডাল উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস। এছাড়া ব্রকলি ও কপি, ফলের মধ্যে পেয়ারা ও কিউই এবং বাদাম আর বীজ ধরনের খাবার থেকে মিলবে প্রোটিন।
স্বাস্থ্যকর চর্বি: যদিও স্বাস্থ্যকর চর্বি পাওয়া সহজ নয় তবে বেশিরভাগ সবজি, ফল, বাদাম ও বীজ এই চাহিদা পূরণ করতে পারে। এই পুষ্টি উপাদান শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে, কোষের গঠন বজায় রাখে আর সার্বিকভাবে হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে।
মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস
ভিটামিন ও খানিজ: বেশিরভাগ ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা মেটানো যায় সবজি ও ফল খেয়ে। বিপাক থেকে শুরু করে কোষে স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড়ের স্বাস্থ্য, হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, ত্বক- মানে সার্বিকভাবে দেহ ভালো রাখতে এসব পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন হয়।
উদ্ভিজ্জ যৌগ: গুরুত্বপূর্ণ পথ্য-জাতীয় যৌগ পলিফেনল্স পাওয়া যায় ফল ও সবজি থেকে। বিজ্ঞানিরা প্রায় ৮ হাজারের ওপরে উদ্ভিজ্জ যৌগের সন্ধান পেয়েছে যেগুলোর একেকটির উপকারিতা মানব দেহে একেক রকম।
কী পরিমাণ ফল ও সবজি প্রতিদিন খাওয়া উচিত?
উপকারের কথা না হয় জানা হল। তবে কতটা সবজি ও ফল খেলে এসব পুষ্টি উপাদান মিলবে সে বিষয়টা কীভাবে বুঝবেন? এই বিষয়ে ‘ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)’র নির্দেশিকায় জানানো হয়, প্রতিদিন পাঁচ-মিশালি ফল ও সবজি খাওয়া উপকারী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে- ৮০ গ্রাম হিসেবে দৈনিক পাঁচ পরিবেশনে ফল ও সবজি গ্রহণ করতে হবে। তবে সবজি থেকে বাদ যাবে আলু, মিষ্টি আলু এবং অন্যান্য শ্বেতসার বহুল মূলীয় সবজি।
যেভাবে গণনা করতে হবে
পুষ্টিবিদ ম্যানিয়ান জানান, সব ফল ও সবজিতে একভাবে পুষ্টি উপাদান থাকে না। তাই প্রকার অনুসারে সার্ভিং বা পরিবেশনের মাপ পরিবর্তিত হয়। সাধারণভাবে এক পরিবেশন বলতে বোঝায়-
* কাঁচা সবজি ও ফল হলে এক কাপ।
* রান্না করা, টিনজাত বা হিমায়িত হলে আধা কাপ।
* শুকনা ফলের ক্ষেত্রে কাপের এক চতুর্থাংশ। তবে বেছে নিতে হবে আলাদাভাবে চিনি না দেওয়া শুকনা ফল।
* ফল ও সবজির রস বা জুসের ক্ষেত্রে চার আউন্স। অবশ্যেই চিনিমুক্ত হতে হবে। তবে জুসের চাইতে সম্পূর্ণ ফল ও সবজি খাওয়া বেশি উপকারী।
* শ্বেতসার ভিত্তিক সবজি যেমন- আলু, লাউ, ভুট্টা, মূলা ও গাজর ধর্মী সবজি, শালগম এবং শুঁটি ধরনের খাবার যেমন- ছোলা, বীজ, ডাল- সাধারণত সবজির পরিবেশন হিসেবে ধরা হয় না। কারণ এগুলো হজম হয় শষ্যের মতো করে।
খাদ্যতালিকায় সবজি ও ফল যুক্ত করার উপায়
নানান উপাদেয় পন্থায় দৈনিক খাদ্যতালিকায় সবজি ও ফল যোগ করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক স্বাস্থ্য সংস্থা মায়ো ক্লিনিক এক্ষেত্রে ‘১-২-৩ পন্থা’ প্রয়োগের পরামর্শ দেয়। যেখানে বলা হয়- দৈনিক পাঁচ মিশালি সবজি ও ফল খাওয়ার উপায় হল সকালে এক পরিবেশন, দুপুরের খাবারে দুই পরিবেশন এবং রাতের খাবারে তিন পরিবেশন ফল ও সবজি যোগ করা।
আর ফল ও সবজি দিনের খাবার এবং নাস্তা হিসেবেও গ্রহণ করা যায়।
* টাটকা বা হিমায়িত ফল যেমন- বিভিন্ন ধরনের বেরিজাতীয় ফল, কলা, আম, আনারস ও আপেলের সাথে শাক, কপি দিয়ে মিশিয়ে স্মুদি তৈরি করে খাওয়া যায়। এক্ষেত্রে কয়েক পরিবেশন গ্রহণ করা যায়।
* ডিম ভাজির সঙ্গে অল্প ভাজা সবজি যোগ করে খাওয়া যায় মজা করে।
* সকালে স্যান্ডউইচ খেতে চাইলে যোগ করা যায় টমেটো, পেঁয়াজ বা ক্যাপ্সিকাম।
* ওটস বা দইয়ের সঙ্গে খাওয়া যায় টাটকা ও হিমায়িত ফল।
* সালাদ হতে পারে ফল ও সবজি খাওয়ার সেরা উপায়। এক্ষেতে টাটকা ছাড়াও রোস্ট বা গ্রিল্ড করা সবজি দিয়ে তৈরি করা সালাদ খেতে মজা বেশি।
* আর পাস্তা, স্যান্ডউইচ ও সুপের সাথে তো সহজেই সবজি মিলিয়ে খাওয়া যায়।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রতিদিন যে পরিমাণ ফল ও সবজি খাওয়া দরকার

আপডেট সময় : ১০:৫৯:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: তবে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ বা জীবনযাপনের ওপর সবজি ও ফল খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে না।
পর্যাপ্ত সবজি ও ফল খাওয়ার উপকারিতা
প্রকার ভেদে উপকারিতা ভিন্ন হতে পারে। তবে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য হাতের নাগালে থাকা বেশিরভাগ ফল ও সবিজতে থাকা উপাদানে তেমন কোনো ভিন্নতা নেই।
ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস
আঁশ: সব ধরনের ফল ও সবজিতে কিছু পরিমাণ হলেও আঁশ থাকে, যা স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেইটস- রিয়েলসম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক পুষ্টিবিদ ক্রিস্টিনা ম্যানিয়ান। এই উপাদান সার্বিকভাবে অন্ত্র, রোগ প্রতিরোধ ও বিপাকীয় ক্ষমতা এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
প্রোটিন: শক্তি ও দেহের সার্বিক গঠনের জন্য দরকারী এই উপাদান শুধু মাংস নয় সবজি ও ফল থেকেও পাওয়া যায়। ছোলা, মটর, ডাল উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস। এছাড়া ব্রকলি ও কপি, ফলের মধ্যে পেয়ারা ও কিউই এবং বাদাম আর বীজ ধরনের খাবার থেকে মিলবে প্রোটিন।
স্বাস্থ্যকর চর্বি: যদিও স্বাস্থ্যকর চর্বি পাওয়া সহজ নয় তবে বেশিরভাগ সবজি, ফল, বাদাম ও বীজ এই চাহিদা পূরণ করতে পারে। এই পুষ্টি উপাদান শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে, কোষের গঠন বজায় রাখে আর সার্বিকভাবে হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে।
মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস
ভিটামিন ও খানিজ: বেশিরভাগ ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা মেটানো যায় সবজি ও ফল খেয়ে। বিপাক থেকে শুরু করে কোষে স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড়ের স্বাস্থ্য, হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, ত্বক- মানে সার্বিকভাবে দেহ ভালো রাখতে এসব পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন হয়।
উদ্ভিজ্জ যৌগ: গুরুত্বপূর্ণ পথ্য-জাতীয় যৌগ পলিফেনল্স পাওয়া যায় ফল ও সবজি থেকে। বিজ্ঞানিরা প্রায় ৮ হাজারের ওপরে উদ্ভিজ্জ যৌগের সন্ধান পেয়েছে যেগুলোর একেকটির উপকারিতা মানব দেহে একেক রকম।
কী পরিমাণ ফল ও সবজি প্রতিদিন খাওয়া উচিত?
উপকারের কথা না হয় জানা হল। তবে কতটা সবজি ও ফল খেলে এসব পুষ্টি উপাদান মিলবে সে বিষয়টা কীভাবে বুঝবেন? এই বিষয়ে ‘ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)’র নির্দেশিকায় জানানো হয়, প্রতিদিন পাঁচ-মিশালি ফল ও সবজি খাওয়া উপকারী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে- ৮০ গ্রাম হিসেবে দৈনিক পাঁচ পরিবেশনে ফল ও সবজি গ্রহণ করতে হবে। তবে সবজি থেকে বাদ যাবে আলু, মিষ্টি আলু এবং অন্যান্য শ্বেতসার বহুল মূলীয় সবজি।
যেভাবে গণনা করতে হবে
পুষ্টিবিদ ম্যানিয়ান জানান, সব ফল ও সবজিতে একভাবে পুষ্টি উপাদান থাকে না। তাই প্রকার অনুসারে সার্ভিং বা পরিবেশনের মাপ পরিবর্তিত হয়। সাধারণভাবে এক পরিবেশন বলতে বোঝায়-
* কাঁচা সবজি ও ফল হলে এক কাপ।
* রান্না করা, টিনজাত বা হিমায়িত হলে আধা কাপ।
* শুকনা ফলের ক্ষেত্রে কাপের এক চতুর্থাংশ। তবে বেছে নিতে হবে আলাদাভাবে চিনি না দেওয়া শুকনা ফল।
* ফল ও সবজির রস বা জুসের ক্ষেত্রে চার আউন্স। অবশ্যেই চিনিমুক্ত হতে হবে। তবে জুসের চাইতে সম্পূর্ণ ফল ও সবজি খাওয়া বেশি উপকারী।
* শ্বেতসার ভিত্তিক সবজি যেমন- আলু, লাউ, ভুট্টা, মূলা ও গাজর ধর্মী সবজি, শালগম এবং শুঁটি ধরনের খাবার যেমন- ছোলা, বীজ, ডাল- সাধারণত সবজির পরিবেশন হিসেবে ধরা হয় না। কারণ এগুলো হজম হয় শষ্যের মতো করে।
খাদ্যতালিকায় সবজি ও ফল যুক্ত করার উপায়
নানান উপাদেয় পন্থায় দৈনিক খাদ্যতালিকায় সবজি ও ফল যোগ করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক স্বাস্থ্য সংস্থা মায়ো ক্লিনিক এক্ষেত্রে ‘১-২-৩ পন্থা’ প্রয়োগের পরামর্শ দেয়। যেখানে বলা হয়- দৈনিক পাঁচ মিশালি সবজি ও ফল খাওয়ার উপায় হল সকালে এক পরিবেশন, দুপুরের খাবারে দুই পরিবেশন এবং রাতের খাবারে তিন পরিবেশন ফল ও সবজি যোগ করা।
আর ফল ও সবজি দিনের খাবার এবং নাস্তা হিসেবেও গ্রহণ করা যায়।
* টাটকা বা হিমায়িত ফল যেমন- বিভিন্ন ধরনের বেরিজাতীয় ফল, কলা, আম, আনারস ও আপেলের সাথে শাক, কপি দিয়ে মিশিয়ে স্মুদি তৈরি করে খাওয়া যায়। এক্ষেত্রে কয়েক পরিবেশন গ্রহণ করা যায়।
* ডিম ভাজির সঙ্গে অল্প ভাজা সবজি যোগ করে খাওয়া যায় মজা করে।
* সকালে স্যান্ডউইচ খেতে চাইলে যোগ করা যায় টমেটো, পেঁয়াজ বা ক্যাপ্সিকাম।
* ওটস বা দইয়ের সঙ্গে খাওয়া যায় টাটকা ও হিমায়িত ফল।
* সালাদ হতে পারে ফল ও সবজি খাওয়ার সেরা উপায়। এক্ষেতে টাটকা ছাড়াও রোস্ট বা গ্রিল্ড করা সবজি দিয়ে তৈরি করা সালাদ খেতে মজা বেশি।
* আর পাস্তা, স্যান্ডউইচ ও সুপের সাথে তো সহজেই সবজি মিলিয়ে খাওয়া যায়।