ক্রীড়া ডেস্ক : বড় রান তাড়ায় দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে খেই হারিয়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। সেখান থেকে দলকে পথ দেখালেন কাইরন পোলার্ড। খুনে ব্যাটিংয়ে চেন্নাই সুপার কিংসের মুঠো থেকে ছিনিয়ে নিলেন ম্যাচ। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের তা-বে প্রথমবারের মতো আইপিএলে দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করে জিতল টুর্নামেন্টের সফলতম দলটি। দিল্লিতে শনিবার রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৪ উইকেটে জিতেছে মুম্বাই। ২১৯ রানের লক্ষ্য দলটি ছুঁয়েছে ম্যাচের শেষ বলে। আইপিএলে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয় আছে আর কেবল একটি। গত আসরে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ২২৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রাজস্থান রয়্যালস জিতেছিল ৪ উইকেটে।
৩৪ বলে অপরাজিত ৮৭, ৮ ছক্কার সঙ্গে চার ৬টি-রান উৎসবের ম্যাচে পোলার্ডের এই ইনিংসই গড়ে দিয়েছে ব্যবধান। ব্যাট হাতে মুম্বাইয়ের জয়ের নায়ক আলো ছড়ান বোলিংয়েও। ২ ওভারে ১২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। শেষ ওভারে মুম্বাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। লুঙ্গি এনগিডির করা ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেননি পোলার্ড। পরের দুই বলে মারেন দুটি বাউন্ডারি। চতুর্থ বলেও ইচ্ছে করে নেননি সিঙ্গেল। পরের বল ছিল ফুল টস, ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে হাঁকান ছক্কা। শেষ বলে দুই রান নিয়ে মেলান সমীকরণ। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চেন্নাই বড় সংগ্রহ গড়ে দুটি শতরানের জুটির সৌজন্যে। দ্বিতীয় উইকেটে ৬১ বলে ১০৮ রানের জুটিতে সুর বেঁধে দেন ফাফ দু প্লেসি ও মইন আলি। মইন ৩৬ বলে পাঁচটি করে ছক্কা ও চারে করেন ৫৮ রান। দু প্লেসি চারটি ছক্কা ও দুটি চারে ২৮ বলে থামেন ৫০ রানে। পরপর দুই বলে দু প্লেসি ও সুরেশ রায়নাকে ফিরিয়ে দেন পোলার্ড। তবে অম্বাতি রায়ডু এর প্রভাব পড়তে দেননি দলের ওপর। ২৭ বলে ৭ ছক্কা ও চারটি চারে খেলেন ৭২ রানের টর্নেডো ইনিংস। তার সঙ্গে ৫৬ বলে ১০২ রানের জুটিতে রবীন্দ্র জাদেজার অবদান ২২ বলে ২২ রান
ঝড় বয়ে গেছে যেন জাসপ্রিত বুমরাহর ওপর দিয়ে। বোলিংয়ে মুম্বাইয়ের সবচেয়ে বড় ভরসা এই ভারতীয় পেসার ৪ ওভারে দেন ৫৬ রান। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার সবচেয়ে খরুচে বোলিং। রান তাড়ায় ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দেন কুইন্টন ডি কক ও রোহিত শর্মা। তবে ১০ রানের মধ্যে এই দুই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে সূর্যকুমার যাদবকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় মুম্বাই। ক্রুনাল পান্ডিয়াকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে দলকে ম্যাচে ফেরান পোলার্ড। প্রথম ২ ওভারে কেবল ৯ রান দেওয়া জাদেজার ওভারে তিন ছক্কায় নেন ২০ রান। এনগিডিকে পরের ওভারে মারেন আরও দুই ছক্কা। তিন চার ও এক ছক্কায় শার্দুল ঠাকুরের ওভার থেকে নেন ২৩ রান। মাত্র ১৭ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি, চলতি আসরের দ্রুততম। আইপিএলে মুম্বাইয়ের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম। তখনও জয় দূরের পথ। রানের জন্য মরিয়া পোলার্ড চড়াও হচ্ছিলেন প্রায় প্রতি বলেই। শার্দুলের ওভারে আসে সুযোগ, কিন্তু দু প্লেসি মুঠোয় জমাতে পারেননি সহজ ক্যাচ। শেষে এরই মাশুল দিতে হয় ম্যাচ হেরে। জীবন পাওয়ার পর আর পেছনে তাকাননি পোলার্ড। ঠা-া মাথার ব্যাটিংয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চেন্নাই সুপার কিংস: ২০ ওভারে ২১৮/৪ (গায়কোয়াড ৪, দু প্লেসি ৫০, মইন ৫৮, রায়না ২, রায়ডু ৭২, জাদেজা ২২; বোল্ট ৪-০-৪২-১, কুলকারনি ৪-০-৪৮-০, বুমরাহ ৪-০-৫৬-১, রাহুল ৪-০-৩২-০, নিশাম ২-০-২৬-০, পোলার্ড ২-০-১২-২)।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ২০ ওভারে ২১৯/৬ (ডি কক ৩৮, রোহিত ৩৫, সূর্যকুমার ৩, ক্রুনাল ৩২, পোলার্ড ৮৭, হার্দিক ১৬, নিশাম ০, কুলকারনি ০; দিপক ৪-০-৩৭-০, কারান ৪-০-৩৪-৩, এনগিডি ৪-০-৬২-০, শার্দুল ৪-০-৫৬-১, জাদেজা ৩-০-২৯-১, মইন ১-০-১-১)।
ফল: মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কাইরন পোলার্ড।
পোলার্ড-ঝড়ে রান পাহাড় টপকাল মুম্বাই
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ