ঢাকা ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

পোলট্রি খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ

  • আপডেট সময় : ০১:৫৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১
  • ১৪৩ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য ভোক্তার প্লেটে যাওয়ার প্রতিটি পর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি চাই নিবিড় পর্যবেক্ষণ। পোলট্রি খাত দেশের আমিষের অভাব পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ খাতের উন্নয়নে চাই সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত তৎপরতা। ‘পোলট্রি খাতে খাদ্যনিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক প্রকল্প নিয়ে এক কর্মশালায় কথাগুলো বলেন বক্তারা। মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে এ অনুষ্ঠান হয়। বীজবিস্তার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (বিসিএএস) এবং কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যৌথভাবে এ প্রকল্প পরিচালনা করে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রকাশ প্রকল্পের আওয়তায় এ প্রকল্পে সহায়তা দেওয়া হয়। আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজকও ছিল তারাই। প্রকল্পে সার্বিক সহায়তা দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। দেশের ছয়টি জেলার সাত উপজেলায় পোলট্রি তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্প চলে। অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমিত ব্যবহার করে মুরগি উৎপাদন, নিরাপদ খামার ব্যবস্থাপনার জন্য খামারিদের প্রশিক্ষণ, পোলট্রি খাতের উন্নয়নে সরকারি সহায়তার সঙ্গে খামারিদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া, বাজার সম্প্রসারণ—এসব কাজ হয় এ প্রকল্পে।
চলতি মাসেই এ প্রকল্প শেষ হয়ে যাবে। এর প্রকল্পে তার আগে অনুষ্ঠিত এ সভায় আজ প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ আজিজুর রহমান। তিনি এ প্রকল্পের বিষয়ে বলেন, সরকারি-বেসরকারি তৎপরতার ফলে কীভাবে উন্নয়ন হতে পারে, এ প্রকল্প এর একটি উদাহরণ। এটি একটি মডেল হিসেবে থাকবে। এ মডেলের আরও সম্প্রসারণে কাজ করতে হবে। শেখ আজিজুর রহমান বলেন, ‘ডিম ও মৎস্য খাতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। শুধু দুধের প্রাপ্যতায় কিছু পিছিয়ে আছি। সেটিও অর্জিত হবে। এখন দরকার নিরাপদ খাদ্য। এটা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’ অনুষ্ঠানে বিসিএসের নির্বাহী পরিচালক আতিক রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে একটি প্রকল্প শুরু হয় জোরেশোরে। কিন্তু এগুলোর মেয়াদ শেষ হলে আর কোনো খবর থাকে না। এ প্রকল্প যেন এভাবেই শেষ না হয়ে যায়।’ অনুষ্ঠানে প্রকল্প এলাকা থেকে কয়েক খামারি অংশ নেন। তাঁদের একজন কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জ্যোৎস্না বেগম। তিনি বলেন, ‘আগে অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে প্রয়োগ করব, তা জানতাম না। কিন্তু প্রশিক্ষণের পর এ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।’ গাজীপুরের খামারি মো. রিয়াজ বলেন, ‘নিয়ম মেলে পোলট্রি পরিচালনা করলে লাভের দেখা মেলে, পরিবেশও রক্ষা হয়। আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি।’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আফতাব বহুমুখী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান। তিনি বলেন, পোলট্রি খাতের উন্নয়নে একটি পোলট্রি বোর্ড দরকার। যেখানে খামারি, খামারের মালিক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন তরফের লোক থাকবে। তিনি বলেন, ‘ইউরোপে নিরাপদ খাদ্যের যে মানদ- নির্ধারণ করা হয়েছে, তা আমাদের দেশে মানলে মানুষ খেতে পাবে না। আমাদের জন্য আমাদের উপযোগী মানদ- নির্ধারণ করতে হবে।’ তবে ফজলে রহিম খানের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে লাইভস্টক ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এলডিডিপি) মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘আমাদের খাদ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় মানদ- অবশ্যই রাখতে হবে। এই মানদ- নিশ্চিত করে, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করছে এবং সফলও হচ্ছে।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রকাশ প্রকল্পের টিম লিডার জেরি ফক্স, প্রকল্পের ব্যবস্থাপক তাসলিমা আখতার, বীজবিস্তার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পোলট্রি খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ

আপডেট সময় : ০১:৫৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য ভোক্তার প্লেটে যাওয়ার প্রতিটি পর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি চাই নিবিড় পর্যবেক্ষণ। পোলট্রি খাত দেশের আমিষের অভাব পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ খাতের উন্নয়নে চাই সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত তৎপরতা। ‘পোলট্রি খাতে খাদ্যনিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক প্রকল্প নিয়ে এক কর্মশালায় কথাগুলো বলেন বক্তারা। মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে এ অনুষ্ঠান হয়। বীজবিস্তার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (বিসিএএস) এবং কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যৌথভাবে এ প্রকল্প পরিচালনা করে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রকাশ প্রকল্পের আওয়তায় এ প্রকল্পে সহায়তা দেওয়া হয়। আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজকও ছিল তারাই। প্রকল্পে সার্বিক সহায়তা দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। দেশের ছয়টি জেলার সাত উপজেলায় পোলট্রি তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্প চলে। অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমিত ব্যবহার করে মুরগি উৎপাদন, নিরাপদ খামার ব্যবস্থাপনার জন্য খামারিদের প্রশিক্ষণ, পোলট্রি খাতের উন্নয়নে সরকারি সহায়তার সঙ্গে খামারিদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া, বাজার সম্প্রসারণ—এসব কাজ হয় এ প্রকল্পে।
চলতি মাসেই এ প্রকল্প শেষ হয়ে যাবে। এর প্রকল্পে তার আগে অনুষ্ঠিত এ সভায় আজ প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ আজিজুর রহমান। তিনি এ প্রকল্পের বিষয়ে বলেন, সরকারি-বেসরকারি তৎপরতার ফলে কীভাবে উন্নয়ন হতে পারে, এ প্রকল্প এর একটি উদাহরণ। এটি একটি মডেল হিসেবে থাকবে। এ মডেলের আরও সম্প্রসারণে কাজ করতে হবে। শেখ আজিজুর রহমান বলেন, ‘ডিম ও মৎস্য খাতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। শুধু দুধের প্রাপ্যতায় কিছু পিছিয়ে আছি। সেটিও অর্জিত হবে। এখন দরকার নিরাপদ খাদ্য। এটা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’ অনুষ্ঠানে বিসিএসের নির্বাহী পরিচালক আতিক রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে একটি প্রকল্প শুরু হয় জোরেশোরে। কিন্তু এগুলোর মেয়াদ শেষ হলে আর কোনো খবর থাকে না। এ প্রকল্প যেন এভাবেই শেষ না হয়ে যায়।’ অনুষ্ঠানে প্রকল্প এলাকা থেকে কয়েক খামারি অংশ নেন। তাঁদের একজন কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জ্যোৎস্না বেগম। তিনি বলেন, ‘আগে অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে প্রয়োগ করব, তা জানতাম না। কিন্তু প্রশিক্ষণের পর এ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।’ গাজীপুরের খামারি মো. রিয়াজ বলেন, ‘নিয়ম মেলে পোলট্রি পরিচালনা করলে লাভের দেখা মেলে, পরিবেশও রক্ষা হয়। আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি।’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আফতাব বহুমুখী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান। তিনি বলেন, পোলট্রি খাতের উন্নয়নে একটি পোলট্রি বোর্ড দরকার। যেখানে খামারি, খামারের মালিক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন তরফের লোক থাকবে। তিনি বলেন, ‘ইউরোপে নিরাপদ খাদ্যের যে মানদ- নির্ধারণ করা হয়েছে, তা আমাদের দেশে মানলে মানুষ খেতে পাবে না। আমাদের জন্য আমাদের উপযোগী মানদ- নির্ধারণ করতে হবে।’ তবে ফজলে রহিম খানের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে লাইভস্টক ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এলডিডিপি) মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘আমাদের খাদ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় মানদ- অবশ্যই রাখতে হবে। এই মানদ- নিশ্চিত করে, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করছে এবং সফলও হচ্ছে।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রকাশ প্রকল্পের টিম লিডার জেরি ফক্স, প্রকল্পের ব্যবস্থাপক তাসলিমা আখতার, বীজবিস্তার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।