ঢাকা ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

পোলট্রিতে ৫১৮ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা কীভাবে : এফবিসিসিআই

  • আপডেট সময় : ০২:১৭:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অগাস্ট ২০২২
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পোলট্রি কোম্পানিগুলো ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করার বিষয়ে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের কাছে জানতে চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গতকাল সোমবার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বাজার ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই হল রুমে এক মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে জানতে চায় সংগঠনটি। এফবিসিসিআই-এর এ সভায় ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করে বলল ১৫ দিনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত মুনাফা করেছে পোল্ট্রি কোম্পানিগুলো, এটা কি মনগড়া মন্তব্য? মন যা চাইল তাই বলে দিল তা তো হবে না। কোনো তথ্য দিলে তা বাস্তবসম্মত হতে হবে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘১৮ আগস্ট থেকে টানা তিনদিন সারা দেশে অভিযান চালিয়েছি। এর পেছনে কারা আছে আমরা তাদের খোঁজ বের করার চেষ্টা করছি। এফবিসিসিআই একটা বহুমুখী সৎ ব্যবসায়ীদের সংগঠন। কিছু অসাধু লোকের জন্য যেভাবে সমাজে ব্যবসায়ীদের অসৎ তকমা দেওয়া হচ্ছে তা সত্যিই দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, ‘ভোক্তার অভিযানে কয়েকদিনেই ডিমের হালিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় নেমে এসেছে। তাহলে স্পষ্ট বুঝা যায় ডিম নিয়ে ম্যানিউপুলেট করা হয়েছে। আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আমরা মামলার দিকে যাব।’ ভোক্তা মহাপরিচালক জানান, দেশে তিনটা বৈধ অ্যাসোসিয়েশন আছে। এগুলো হলো বাংলাদেশ এগ প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অর্গানিক প্রোডাক্ট মেনুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। এগুলো বৈধ অ্যাসোসিয়েশন। এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্বে জালানি তেলের দাম বাড়ার ফলে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন তা মানলাম। কিন্তু আপনারা এফবিসিসিআইয়ের কাছে আসেন না কেন। এসে আলোচনা করুন। আপনারা লস করলে আমাদের বলুন। কীভাবে সেটা থেকে উত্তরণ করা যায় আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব। অনেক প্রতিষ্ঠান আছে এই মন্দা সময়েও ভালো করছে। ব্যবসা লাভ-লসের মধ্যেই চালিয়ে যেতে হবে।’
বাংলাদেশ এগ প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বলা হয়, একটি পক্ষ দাদন দেওয়ার মাধ্যমে গুদামজাতকারীদের হাত করে নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে নিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বাংলাদেশ এগ প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। এর আগে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করে, ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে দেশের পোলট্রি কোম্পানিগুলো। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানান, দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা চার কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে কোম্পানিগুলো উৎপাদন করে দুই কোটি ৫০ লাখ। আর খামারিরা উৎপাদন করেন এক কোটি ৩০ লাখ।
কর্মকর্তাদের দাবি, কোম্পানিগুলো প্রতিটি ডিমে অতিরিক্ত তিন টাকা বেশি মূল্য নির্ধারণ করে। এতে গত ১৫ দিনে তারা শুধু ডিম থেকে ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করে। পোলট্রি খামারিরা জানান, প্রতিদিন ১৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি মুরগির মাংসের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবং পরবর্তী সময়ে তা বাজারে ছেড়ে প্রতি কেজিতে বাড়তি নেওয়া হয়েছে ১৫ টাকা। এর ফলে কোম্পানিগুলো গত ১৫ দিনে ১৭২ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পোলট্রিতে ৫১৮ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা কীভাবে : এফবিসিসিআই

আপডেট সময় : ০২:১৭:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পোলট্রি কোম্পানিগুলো ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করার বিষয়ে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের কাছে জানতে চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গতকাল সোমবার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বাজার ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই হল রুমে এক মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে জানতে চায় সংগঠনটি। এফবিসিসিআই-এর এ সভায় ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করে বলল ১৫ দিনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত মুনাফা করেছে পোল্ট্রি কোম্পানিগুলো, এটা কি মনগড়া মন্তব্য? মন যা চাইল তাই বলে দিল তা তো হবে না। কোনো তথ্য দিলে তা বাস্তবসম্মত হতে হবে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘১৮ আগস্ট থেকে টানা তিনদিন সারা দেশে অভিযান চালিয়েছি। এর পেছনে কারা আছে আমরা তাদের খোঁজ বের করার চেষ্টা করছি। এফবিসিসিআই একটা বহুমুখী সৎ ব্যবসায়ীদের সংগঠন। কিছু অসাধু লোকের জন্য যেভাবে সমাজে ব্যবসায়ীদের অসৎ তকমা দেওয়া হচ্ছে তা সত্যিই দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, ‘ভোক্তার অভিযানে কয়েকদিনেই ডিমের হালিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় নেমে এসেছে। তাহলে স্পষ্ট বুঝা যায় ডিম নিয়ে ম্যানিউপুলেট করা হয়েছে। আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আমরা মামলার দিকে যাব।’ ভোক্তা মহাপরিচালক জানান, দেশে তিনটা বৈধ অ্যাসোসিয়েশন আছে। এগুলো হলো বাংলাদেশ এগ প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অর্গানিক প্রোডাক্ট মেনুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। এগুলো বৈধ অ্যাসোসিয়েশন। এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্বে জালানি তেলের দাম বাড়ার ফলে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন তা মানলাম। কিন্তু আপনারা এফবিসিসিআইয়ের কাছে আসেন না কেন। এসে আলোচনা করুন। আপনারা লস করলে আমাদের বলুন। কীভাবে সেটা থেকে উত্তরণ করা যায় আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব। অনেক প্রতিষ্ঠান আছে এই মন্দা সময়েও ভালো করছে। ব্যবসা লাভ-লসের মধ্যেই চালিয়ে যেতে হবে।’
বাংলাদেশ এগ প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বলা হয়, একটি পক্ষ দাদন দেওয়ার মাধ্যমে গুদামজাতকারীদের হাত করে নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে নিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বাংলাদেশ এগ প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। এর আগে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করে, ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে দেশের পোলট্রি কোম্পানিগুলো। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানান, দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা চার কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে কোম্পানিগুলো উৎপাদন করে দুই কোটি ৫০ লাখ। আর খামারিরা উৎপাদন করেন এক কোটি ৩০ লাখ।
কর্মকর্তাদের দাবি, কোম্পানিগুলো প্রতিটি ডিমে অতিরিক্ত তিন টাকা বেশি মূল্য নির্ধারণ করে। এতে গত ১৫ দিনে তারা শুধু ডিম থেকে ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করে। পোলট্রি খামারিরা জানান, প্রতিদিন ১৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি মুরগির মাংসের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবং পরবর্তী সময়ে তা বাজারে ছেড়ে প্রতি কেজিতে বাড়তি নেওয়া হয়েছে ১৫ টাকা। এর ফলে কোম্পানিগুলো গত ১৫ দিনে ১৭২ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে।