প্রত্যাশা ডেস্ক : ভোটার নয় বরং পেশি শক্তির ওপর বেশি আস্থার কারণেই ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা বাড়ছে বলে মনে করেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের দূরদর্শিতার অভাবেও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বলে মত তাদের। সেক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সবপক্ষেরই সহযোগিতার কথা বলছেন তারা। তৃণমূলের সবার প্রথম স্তর ধরা হয় ইউনিয়ন পরিষদকে। সেই হিসেবে রাজনীতিতে বরাবরই গুরুত্ব পায় এই নির্বাচন। দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়নের মধ্যে এই পর্যায়ে নির্বাচনযোগ্য ইউনিয়ন তিন হাজার আটশ। এরই মধ্যে চার ধাপে নির্বাচন শেষ হয়েছে প্রায় দুই হাজার আটশ ইউনিয়ন পরিষদের। বাকি প্রায় হাজার খানেক। তবে এবারের ইউপি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো থাকলেও সহিংসতা আর প্রাণহানি যেনো অতীতের অনেক রেকর্ডই ছাড়িয়ে গেছে। প্রথম চার দফায় নির্বাচনী সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ৭০, আর হতাহত প্রায় পাঁচ শতাধিক। এমন আবস্থায় নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রার্থীরা ভোটারের চেয়ে পেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বাড়ছে সহিংসতা। সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এখন জনগণের ভোটের চেয়ে ওই পথটা দখল করার জন্য যা যা করা দরকার সবই করে। এ কারণে যেন পেশিশক্তির ব্যবহারটা হয়। তবে তৃণমূলে প্রতিকের এই নির্বাচনে সহিংসতা রোধ করতে না পারাটা নির্বাচন কমিশনের অদূরদর্শীতা মনে করছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, এটা প্রত্যাশিত ছিল যে এবার সহিংসতা বেশি হবে। নির্বাচনটাকে সহিংসতামুক্ত করার জন্য অস্ত্র উদ্ধার, এলাকাভিত্তিক চিহ্নিত সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেপ্তার করাসহ যে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার সে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলসহ সকল অংশীজন কমিশনকে সহায়তা না করলে সুফল মিলবে না। ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি মনে করেন যে আমি নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে করব তাহলে তারা পারবে। মো. শাহনেওয়াজ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও শক্ত ভূমিকা নিতে হবে। সেই সঙ্গে বিচার হচ্ছে এবং বিচার হবে এসব বাদ দিয়ে এগুলোর বিচার করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ও ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।