ঢাকা ০৭:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫

পেশাদার শেফের অধ্যয়নে মনোযোগ দরকার

  • আপডেট সময় : ০৫:২৬:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

সবাই নিজেকে একজন শেফ বলতে পারেন তাহলে সত্যিকারের শেফ হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই অধ্যয়ন ও অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবেই আপনি পেশাদার শেফ হিসেবে নিজেকে বিবেচনা করতে পারবেন।
বর্তমানে শুধু বিদেশেই নয়; বরং বাংলাদেশেও শেফ বা রন্ধনশিল্পীদের কদর বেড়েছে। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সবখানেই ছোট-বড় দেশি-বিদেশি রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠছে। এসব রেস্টুরেন্টে শেফদের চাহিদা বাড়ছে। কিছু রেস্টুরেন্টে তো ভারত কিংবা পাকিস্তান থেকেও শেফ নিয়ে আসছেন। তাই আপনিও যদি একজন পেশাদার শেফ হতে চান তাহলে অবশ্যই এ বিষয়ে পড়ালেখা করা ও অনুশীলন করা জরুরি। যেমনÑ
রান্নার বিষয়ে আগ্রহ থাকতে হবে: নিজের জন্য বা পরিবার ও বন্ধুবান্ধবকে রান্না করে খাওয়ানোর আগ্রহ অনেকের মধ্যেই আছে। তবে অপরিচিতদের জন্য বা একটি বাণিজ্যিক রান্নাঘরে রান্না করার বিষয়টি কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। আপনি তখনই এজন্যই ভালো শেফ হতে পারবেন, যখন রান্নার বিষয়ে আপনার আগ্রহ থাকবে। আপনি মন প্রাণ দিয়ে রান্নাটি করবেন ও নিজের প্রতিভা দেখাতে সক্ষম হবেন। এমনকি নতুন নতুন খাবার তৈরির মনোবল রাখতে হবে আপনাকে।
রেস্টুরেন্টে কিছুদিন কাজ করুন: আপনার যদি একজন শেফ হওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে এ বিষয়ে আইডিয়া নিতে কোনো রেস্টুরেন্টে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ শুরু করুন। এতে করে আপনি রেস্টুরেন্টের রাননাঘরের পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পাবেন। তাদের কাজের গতবিধি টের পাবেন। এমনকি এই পেশা আপনার জন্য ঠিক সঠিক কি না তাও বিবেচনা করতে পারবেন। পেশাদারদের সঙ্গে কাজ করার ফলে রেস্টুরেন্টের লাইন কুক ও হেড শেফদের অভিজ্ঞতা জানতে পারবেন। এতে আপনার দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে ও পেশাদার শেফ হিসেবে নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করবেন, এ বিষয়ক গাইডলইনও পাবেন।
রন্ধনশিল্পের ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট অর্জন করুন: যদিও শেফ হওয়ার জন্য আপনাকে রন্ধনশিল্পের ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে না, তবে এ বিষয়ক একটি ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে আপনাকে আলাদা করে তুলবে। একটি মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফিকেট অর্জন করলে ক্যারিয়ারে আপনাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনি এমন একটি প্রোগ্রাম খুঁজুন যাতে আপনার আগ্রহ আছে। রন্ধনসম্পর্কীয় প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে আছে- পেস্ট্রি ও বেকিং, শিল্প উপাদান, আন্তর্জাতিক রন্ধনপ্রণালী, রেস্তোরাঁ ব্যবস্থাপনা, ক্যাটারিং ম্যানেজমেন্টসহ মেনু বিপণনের মতো বিষয়। যখনই আপনি পছন্দের বিষয়ে অধ্যয়ন শুরু করবেন, তখন বুঝবেন রন্ধনসম্পর্কীয় বিশ্ব সম্পর্কে অনেক কিছু শেখার আছে।
কোথায় পাবেন শেফের প্রশিক্ষণ: একজন প্রশিক্ষিত শেফ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হলে ‘ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন’ কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। এ কোর্সের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে আছে- বাংলাদেশি, চায়নিজ, ইতালিয়ান, ইউরোপিয়ান, ইন্ডিয়ান খাবার তৈরি প্রণালি, ডেকোরেশন, হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশন। এসব বিষয়ে তিন মাস, ছয় মাস ও এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স আছে। এছাড়া প্রফেশনাল শেফ কোর্স নামের ডিপ্লোমা কোর্স করা থাকা ভালো। তবে চাকরির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কোর্সগুলো বেশি গ্রহণযোগ্য ও প্রাধান্য পায়। শেফ পেশায় সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনে কোর্স করা যায়। এ ছাড়া সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন- ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোর্সের ব্যবস্থা রয়েছে। তিন মাসের কোর্সে ৪৫-৫০ হাজার টাকা খরচ পড়বে। অন্যদিকে এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে খরচ হবে প্রায় দেড় লাখ টাকা।
দক্ষতা বুঝে কাজ খুঁজুন: একজন পেশাদার শেফ হিসেবে আপনি নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারে। আর যদি আপনার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে ব্যবসা করার তাহলে একজন কমিস (একজন পেশাদার রান্নাঘর সহকারী) বা একজন লাইন শেফ হিসেবে প্রথমত কাজ শুরু করতে পারেন। এতে করে আপনার অভিজ্ঞতা আরও বাড়বে। এক সময় আপনি প্রধান শেফ হিসেবে বিবেচিত হতে পারবেন।
শেফরা শুধু রেস্টুরেন্টেই কাজ করেন না: সব শেফ রেস্টুরেন্টেই কাজ করে না। ক্রুজ জাহাজে, থিম পার্কে, পাবলিক স্কুল সিস্টেমসহ কর্পোরেট অফিস ক্যাফেটেরিয়াতেও শেফের প্রয়োজন। শেফরাও ফাস্ট ফুড চেইনে এয়ারলাইন্স ও নতুন খাবারের আইটেমগুলোলির জন্য মেনু তৈরি করে কর্পোরেট ফুড ল্যাবে কাজ করতে পারেন।
শেফ কী কী কাজ করেন: শেফরা উপাদানের উৎস থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ পরিচালনা পর্যন্ত বহুমুখী দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিটি শেফের প্রতিদিনের দায়িত্বগুলো নির্ভর করে তারা কোথায় কাজ করেন, তাদের দল কীভাবে গঠন করা হয় ও রেস্তোঁরা পরিচালনায় তারা কীভাবে জড়িতÑ এর ওপর। কোনো শেফের কাজের দায়িত্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেÑ
=খাবার তৈরি করা।
=মেনুতে নতুনত্ব খাবার যোগ করা।
=উপাদানের উৎস নিশ্চিত করা।
=নতুন সব খাবার তৈরি করা।
=রান্নাঘর পরিচালনা।
=অর্ডার ইনভেন্টরি ও সরবরাহ।
=খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
=কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি তদারকি করা।
=গ্রাহকদের সাথে ডিল করা।
=খাদ্যের গুণমান ও ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা।
=রেস্টুরেন্টের প্রচার ও বিপণন করা।
>> আর্থিক ব্যবস্থাপনার তদারকি করা ইত্যাদি।
শেফের বেতন: ইউএস ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকসের (বিএলএস) তথ্য অনুসারে, একজন শেফ ও প্রধান শেফের গড় বেতন প্রতি বছর ৫৮ হাজার ৯২০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। যদিও শেফের বেতন দেশের শিল্প, ভৌগলিক অবস্থান ও অভিজ্ঞতার স্তর অনুসারে পরিবর্তিত হয়। আর বাংলাদেশে শেফ হিসেবে শুরুতে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পাওয়া সম্ভব। আর অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অথবা পাঁচ তারকা হোটেলগুলোয় চাকরি পেলে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন হতে পারে। সঙ্গে বাড়ি-গাড়ির সুবিধাও দেয় কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া দেশের বাইরে সুযোগ করে নিতে পারলে আরও বেশি আয় করা সম্ভব।
শেফের মধ্যে প্রকারভেদ: বড় বড় হোটেল বা রেস্টুরেন্টগুলোতে রান্নাঘরের কাজ কয়েকজন শেফের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়, যেমন- কমিস শেফ, ডেমি শেফ, সিনিয়র শেফ, সু শেফ বা অ্যাসিস্ট্যান্ট শেফ, এক্সিকিউটিভ শেফ ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ, একজন কমিস শেফ হলেন একজন জুনিয়র-স্তরের শেফ। যিনি অন্যান্য শেফদের খাবার তৈরিতে সহায়তা করেন। অন্যদিকে এক্সিকিউটিভ শেফরা রান্নাঘরের নেতৃত্ব দেন। গ্রাহকদের সামনে পরিবেশনের আগে তারা নিশ্চিত করেন খাবারটি তাদের রেস্টুরেন্টের মানসম্পন্ন কি না। আর সু শেফরা সরাসরি নির্বাহী শেফদের অধীনে কাজ করেন। তারা রান্নাঘরের কর্মীদের কাজের তত্ত্বাবধান করেন ও মান নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সূত্র: রয়টার্স।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পেশাদার শেফের অধ্যয়নে মনোযোগ দরকার

আপডেট সময় : ০৫:২৬:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

সবাই নিজেকে একজন শেফ বলতে পারেন তাহলে সত্যিকারের শেফ হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই অধ্যয়ন ও অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবেই আপনি পেশাদার শেফ হিসেবে নিজেকে বিবেচনা করতে পারবেন।
বর্তমানে শুধু বিদেশেই নয়; বরং বাংলাদেশেও শেফ বা রন্ধনশিল্পীদের কদর বেড়েছে। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সবখানেই ছোট-বড় দেশি-বিদেশি রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠছে। এসব রেস্টুরেন্টে শেফদের চাহিদা বাড়ছে। কিছু রেস্টুরেন্টে তো ভারত কিংবা পাকিস্তান থেকেও শেফ নিয়ে আসছেন। তাই আপনিও যদি একজন পেশাদার শেফ হতে চান তাহলে অবশ্যই এ বিষয়ে পড়ালেখা করা ও অনুশীলন করা জরুরি। যেমনÑ
রান্নার বিষয়ে আগ্রহ থাকতে হবে: নিজের জন্য বা পরিবার ও বন্ধুবান্ধবকে রান্না করে খাওয়ানোর আগ্রহ অনেকের মধ্যেই আছে। তবে অপরিচিতদের জন্য বা একটি বাণিজ্যিক রান্নাঘরে রান্না করার বিষয়টি কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। আপনি তখনই এজন্যই ভালো শেফ হতে পারবেন, যখন রান্নার বিষয়ে আপনার আগ্রহ থাকবে। আপনি মন প্রাণ দিয়ে রান্নাটি করবেন ও নিজের প্রতিভা দেখাতে সক্ষম হবেন। এমনকি নতুন নতুন খাবার তৈরির মনোবল রাখতে হবে আপনাকে।
রেস্টুরেন্টে কিছুদিন কাজ করুন: আপনার যদি একজন শেফ হওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে এ বিষয়ে আইডিয়া নিতে কোনো রেস্টুরেন্টে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ শুরু করুন। এতে করে আপনি রেস্টুরেন্টের রাননাঘরের পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পাবেন। তাদের কাজের গতবিধি টের পাবেন। এমনকি এই পেশা আপনার জন্য ঠিক সঠিক কি না তাও বিবেচনা করতে পারবেন। পেশাদারদের সঙ্গে কাজ করার ফলে রেস্টুরেন্টের লাইন কুক ও হেড শেফদের অভিজ্ঞতা জানতে পারবেন। এতে আপনার দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে ও পেশাদার শেফ হিসেবে নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করবেন, এ বিষয়ক গাইডলইনও পাবেন।
রন্ধনশিল্পের ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট অর্জন করুন: যদিও শেফ হওয়ার জন্য আপনাকে রন্ধনশিল্পের ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে না, তবে এ বিষয়ক একটি ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে আপনাকে আলাদা করে তুলবে। একটি মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফিকেট অর্জন করলে ক্যারিয়ারে আপনাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনি এমন একটি প্রোগ্রাম খুঁজুন যাতে আপনার আগ্রহ আছে। রন্ধনসম্পর্কীয় প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে আছে- পেস্ট্রি ও বেকিং, শিল্প উপাদান, আন্তর্জাতিক রন্ধনপ্রণালী, রেস্তোরাঁ ব্যবস্থাপনা, ক্যাটারিং ম্যানেজমেন্টসহ মেনু বিপণনের মতো বিষয়। যখনই আপনি পছন্দের বিষয়ে অধ্যয়ন শুরু করবেন, তখন বুঝবেন রন্ধনসম্পর্কীয় বিশ্ব সম্পর্কে অনেক কিছু শেখার আছে।
কোথায় পাবেন শেফের প্রশিক্ষণ: একজন প্রশিক্ষিত শেফ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হলে ‘ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন’ কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। এ কোর্সের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে আছে- বাংলাদেশি, চায়নিজ, ইতালিয়ান, ইউরোপিয়ান, ইন্ডিয়ান খাবার তৈরি প্রণালি, ডেকোরেশন, হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশন। এসব বিষয়ে তিন মাস, ছয় মাস ও এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স আছে। এছাড়া প্রফেশনাল শেফ কোর্স নামের ডিপ্লোমা কোর্স করা থাকা ভালো। তবে চাকরির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কোর্সগুলো বেশি গ্রহণযোগ্য ও প্রাধান্য পায়। শেফ পেশায় সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনে কোর্স করা যায়। এ ছাড়া সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন- ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোর্সের ব্যবস্থা রয়েছে। তিন মাসের কোর্সে ৪৫-৫০ হাজার টাকা খরচ পড়বে। অন্যদিকে এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে খরচ হবে প্রায় দেড় লাখ টাকা।
দক্ষতা বুঝে কাজ খুঁজুন: একজন পেশাদার শেফ হিসেবে আপনি নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারে। আর যদি আপনার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে ব্যবসা করার তাহলে একজন কমিস (একজন পেশাদার রান্নাঘর সহকারী) বা একজন লাইন শেফ হিসেবে প্রথমত কাজ শুরু করতে পারেন। এতে করে আপনার অভিজ্ঞতা আরও বাড়বে। এক সময় আপনি প্রধান শেফ হিসেবে বিবেচিত হতে পারবেন।
শেফরা শুধু রেস্টুরেন্টেই কাজ করেন না: সব শেফ রেস্টুরেন্টেই কাজ করে না। ক্রুজ জাহাজে, থিম পার্কে, পাবলিক স্কুল সিস্টেমসহ কর্পোরেট অফিস ক্যাফেটেরিয়াতেও শেফের প্রয়োজন। শেফরাও ফাস্ট ফুড চেইনে এয়ারলাইন্স ও নতুন খাবারের আইটেমগুলোলির জন্য মেনু তৈরি করে কর্পোরেট ফুড ল্যাবে কাজ করতে পারেন।
শেফ কী কী কাজ করেন: শেফরা উপাদানের উৎস থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ পরিচালনা পর্যন্ত বহুমুখী দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিটি শেফের প্রতিদিনের দায়িত্বগুলো নির্ভর করে তারা কোথায় কাজ করেন, তাদের দল কীভাবে গঠন করা হয় ও রেস্তোঁরা পরিচালনায় তারা কীভাবে জড়িতÑ এর ওপর। কোনো শেফের কাজের দায়িত্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেÑ
=খাবার তৈরি করা।
=মেনুতে নতুনত্ব খাবার যোগ করা।
=উপাদানের উৎস নিশ্চিত করা।
=নতুন সব খাবার তৈরি করা।
=রান্নাঘর পরিচালনা।
=অর্ডার ইনভেন্টরি ও সরবরাহ।
=খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
=কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি তদারকি করা।
=গ্রাহকদের সাথে ডিল করা।
=খাদ্যের গুণমান ও ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা।
=রেস্টুরেন্টের প্রচার ও বিপণন করা।
>> আর্থিক ব্যবস্থাপনার তদারকি করা ইত্যাদি।
শেফের বেতন: ইউএস ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকসের (বিএলএস) তথ্য অনুসারে, একজন শেফ ও প্রধান শেফের গড় বেতন প্রতি বছর ৫৮ হাজার ৯২০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। যদিও শেফের বেতন দেশের শিল্প, ভৌগলিক অবস্থান ও অভিজ্ঞতার স্তর অনুসারে পরিবর্তিত হয়। আর বাংলাদেশে শেফ হিসেবে শুরুতে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পাওয়া সম্ভব। আর অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অথবা পাঁচ তারকা হোটেলগুলোয় চাকরি পেলে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন হতে পারে। সঙ্গে বাড়ি-গাড়ির সুবিধাও দেয় কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া দেশের বাইরে সুযোগ করে নিতে পারলে আরও বেশি আয় করা সম্ভব।
শেফের মধ্যে প্রকারভেদ: বড় বড় হোটেল বা রেস্টুরেন্টগুলোতে রান্নাঘরের কাজ কয়েকজন শেফের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়, যেমন- কমিস শেফ, ডেমি শেফ, সিনিয়র শেফ, সু শেফ বা অ্যাসিস্ট্যান্ট শেফ, এক্সিকিউটিভ শেফ ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ, একজন কমিস শেফ হলেন একজন জুনিয়র-স্তরের শেফ। যিনি অন্যান্য শেফদের খাবার তৈরিতে সহায়তা করেন। অন্যদিকে এক্সিকিউটিভ শেফরা রান্নাঘরের নেতৃত্ব দেন। গ্রাহকদের সামনে পরিবেশনের আগে তারা নিশ্চিত করেন খাবারটি তাদের রেস্টুরেন্টের মানসম্পন্ন কি না। আর সু শেফরা সরাসরি নির্বাহী শেফদের অধীনে কাজ করেন। তারা রান্নাঘরের কর্মীদের কাজের তত্ত্বাবধান করেন ও মান নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সূত্র: রয়টার্স।