ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার দায় কার

  • আপডেট সময় : ০১:০৩:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মে ২০২১
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা : দেশে এ বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবুও কয়েকদিন পরপর পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। এতে কখনও কেজিতে ৫ টাকা আবার কখনও ১৫ টাকা পর্যন্ত বাড়ে। ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন অজুহাতে এ কাজটি করছেন মধ্যস্বত্বভোগীদের একটি বড় অংশ। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, আড়তদার, ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের সব পেঁয়াজ মাঠ থেকে কৃষকের ঘরে উঠে এসেছে। বাজারজাত করা হচ্ছে সেসব পেঁয়াজ। বাজার এখন দেশি পেঁয়াজে সয়লাব। আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজও রয়েছে বাজারে। কাজেই কোনও অজুহাতেই পেঁয়াজের সরবরাহে সংকট সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়নি। তারপরও কখনও রমজান, কখনও লকডাউন, কখনও রাস্তায় গাড়ি না চলা আবার কখনও বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজিতে দাম বাড়িয়েছেন ৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা। আবার সীমান্তে বন্দরগুলোয় যখন ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়েছে, সেই সুযোগ দেশি পেঁয়াজের দামও বাড়িয়েছেন এসব সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী। টিসিবি’র তথ্য মতে, ঈদের পর কোনও পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। বরং ঈদের পর খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৭ শতাংশ কমেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ এখন আগের যে কোনও সময়ের তুলনায় বেশি। ক্রেতাদের দাম নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। তাদের দাবি, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজের বাজারের অস্থিরতা তৈরি করেন আমদানিকারকরা। তারাই গুজব ছড়িয়ে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। এবছরও তারা সেই অপচেষ্টা করছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আড়ত থেকে যে দাম তোলা হয়, সেই দামেই আমরা কিনতে বাধ্য হই। কারণ, আড়তের আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা সব একজোট হয়ে একটা দাম ফিক্সড করে। যা সবাই অনুসরণ করে। ফলে আড়তের দরের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নাই। পেঁয়াজ নিয়ে যা কিছু হয়, তা আড়তেই হয়। আড়তের বাইরে কোথাও কোনও কারসাজির সুযোগ নাই। তবে আড়তদাররা এসব বক্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি দ্বিমত করে জানিয়েছেন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সঠিক নয়। যখন যে দাম ওঠে, সেই দামেই আড়ত থেকে পেঁয়াজ ছাড়তে হয়। এখানে মনোপলির কোনও সুযোগ নাই। তারা জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকেই বেশিরভাগ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। সেদেশে নির্ধারিত দরই এখানে প্রযোজ্য। সেই দরের সঙ্গে বিভিন্ন ট্যাক্স পরিশোধ করে পরিবহন খরচ ও মুনাফা যুক্ত করেই বিক্রি করতে হয়। অপরদিকে পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য বিধায় এর মজুদ নিয়ে সময়ক্ষেপণও সম্ভব নয়। রাজধানীর কোনাপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, তারা পরিবহন খরচ ও কেজিতে ২ থেকে ৪টাকা মুনাফা যুক্ত করে বিক্রি করেন। খুচরা বাজারের কেউ মজুতদারিও করে না। কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী ফিরোজ মিয়া বলেন, আসলে পেঁয়াজ নিয়ে যা কিছু হয়, তা আমদানি পরিস্থিতির ওপরই নির্ভর করে। সীমান্তের দামের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমদানিকারক আব্দুল মাজেদ জানান, ভারতের সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে সেদেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। জানা গেছে, ঈদের পর বাজারে ক্রেতা কম। তাই পেঁয়াজের চাহিদাও কম। ঈদের আগের দিন ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। প্রসঙ্গত, গতবছর দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ছিলো ২৫ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ অর্থবছর ফলন হয়েছে ২৫ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৭ থেকে ২৫ শতাংশ প্রসেস লস বাদ দিয়ে মোট উৎপাদনের পরিমাণ দাড়ায় ১৯ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন। তাই বছরে ঘাটতি দাঁড়ায় ৬ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টন। এই পরিমাণ পেঁয়াজই ভারত থেকে আমদানি করেন দেশি আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। কোনও কারণে আমদানি পরিস্থিতিতে ঝামেলা সৃষ্টি হলেই বাজার অস্থির হয়। যার প্রভাব দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ওপরেও পড়

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার দায় কার

আপডেট সময় : ০১:০৩:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মে ২০২১

বিশেষ সংবাদদাতা : দেশে এ বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবুও কয়েকদিন পরপর পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। এতে কখনও কেজিতে ৫ টাকা আবার কখনও ১৫ টাকা পর্যন্ত বাড়ে। ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন অজুহাতে এ কাজটি করছেন মধ্যস্বত্বভোগীদের একটি বড় অংশ। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, আড়তদার, ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের সব পেঁয়াজ মাঠ থেকে কৃষকের ঘরে উঠে এসেছে। বাজারজাত করা হচ্ছে সেসব পেঁয়াজ। বাজার এখন দেশি পেঁয়াজে সয়লাব। আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজও রয়েছে বাজারে। কাজেই কোনও অজুহাতেই পেঁয়াজের সরবরাহে সংকট সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়নি। তারপরও কখনও রমজান, কখনও লকডাউন, কখনও রাস্তায় গাড়ি না চলা আবার কখনও বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজিতে দাম বাড়িয়েছেন ৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা। আবার সীমান্তে বন্দরগুলোয় যখন ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়েছে, সেই সুযোগ দেশি পেঁয়াজের দামও বাড়িয়েছেন এসব সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী। টিসিবি’র তথ্য মতে, ঈদের পর কোনও পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। বরং ঈদের পর খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৭ শতাংশ কমেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ এখন আগের যে কোনও সময়ের তুলনায় বেশি। ক্রেতাদের দাম নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। তাদের দাবি, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজের বাজারের অস্থিরতা তৈরি করেন আমদানিকারকরা। তারাই গুজব ছড়িয়ে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। এবছরও তারা সেই অপচেষ্টা করছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আড়ত থেকে যে দাম তোলা হয়, সেই দামেই আমরা কিনতে বাধ্য হই। কারণ, আড়তের আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা সব একজোট হয়ে একটা দাম ফিক্সড করে। যা সবাই অনুসরণ করে। ফলে আড়তের দরের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নাই। পেঁয়াজ নিয়ে যা কিছু হয়, তা আড়তেই হয়। আড়তের বাইরে কোথাও কোনও কারসাজির সুযোগ নাই। তবে আড়তদাররা এসব বক্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি দ্বিমত করে জানিয়েছেন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সঠিক নয়। যখন যে দাম ওঠে, সেই দামেই আড়ত থেকে পেঁয়াজ ছাড়তে হয়। এখানে মনোপলির কোনও সুযোগ নাই। তারা জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকেই বেশিরভাগ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। সেদেশে নির্ধারিত দরই এখানে প্রযোজ্য। সেই দরের সঙ্গে বিভিন্ন ট্যাক্স পরিশোধ করে পরিবহন খরচ ও মুনাফা যুক্ত করেই বিক্রি করতে হয়। অপরদিকে পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য বিধায় এর মজুদ নিয়ে সময়ক্ষেপণও সম্ভব নয়। রাজধানীর কোনাপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, তারা পরিবহন খরচ ও কেজিতে ২ থেকে ৪টাকা মুনাফা যুক্ত করে বিক্রি করেন। খুচরা বাজারের কেউ মজুতদারিও করে না। কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী ফিরোজ মিয়া বলেন, আসলে পেঁয়াজ নিয়ে যা কিছু হয়, তা আমদানি পরিস্থিতির ওপরই নির্ভর করে। সীমান্তের দামের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমদানিকারক আব্দুল মাজেদ জানান, ভারতের সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে সেদেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। জানা গেছে, ঈদের পর বাজারে ক্রেতা কম। তাই পেঁয়াজের চাহিদাও কম। ঈদের আগের দিন ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। প্রসঙ্গত, গতবছর দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ছিলো ২৫ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ অর্থবছর ফলন হয়েছে ২৫ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৭ থেকে ২৫ শতাংশ প্রসেস লস বাদ দিয়ে মোট উৎপাদনের পরিমাণ দাড়ায় ১৯ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন। তাই বছরে ঘাটতি দাঁড়ায় ৬ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টন। এই পরিমাণ পেঁয়াজই ভারত থেকে আমদানি করেন দেশি আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। কোনও কারণে আমদানি পরিস্থিতিতে ঝামেলা সৃষ্টি হলেই বাজার অস্থির হয়। যার প্রভাব দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ওপরেও পড়