প্রত্যাশা ডেস্ক: এই পানির নাম ‘অ্যাকুয়া দ্য ক্রিস্টালো ট্রিবুটো আ মোডিগ্লিয়ানি’। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি পানি হিসেবে এটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছে। ৭৫০ মিলিলিটারের এই পানির বোতলের মূল্য প্রায় ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫০ লাখ টাকার সমান! চলো জেনে নেওয়া যাক, এমন কী আছে এই বিশেষ পানিতে? কেন এর দাম আকাশছোঁয়া?
অ্যাকুয়া দ্য ক্রিস্টালোয় কিন্তু আমাদের বাসাবাড়ির কলের সাধারণ পানি নেই। এই বিশেষ পানি সংগ্রহ করা হয়েছে পৃথিবীর তিনটি প্রাকৃতিক ও নির্মল উৎস থেকে। প্রথমটি হলো ফ্রান্সের একটি স্বচ্ছ ঝরনা। দ্বিতীয়টি ফিজির গভীর জলের উৎস এবং তৃতীয়টি আইসল্যান্ডের গলিত হিমবাহের পানি। এই তিন উৎসের পানি মিশ্রিত করে তৈরি করা হয়েছে এই পরিশোধিত ও মিনারেলসমৃদ্ধ পানি।
এই পানির আরেকটি ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য হলো এতে ২৩ ক্যারেট খাঁটি সোনার গুঁড়া মেশানো থাকে। প্রতিটি বোতলে থাকে ৫ গ্রাম সোনার গুঁড়া। এই সোনার গুঁড়া পানির অ্যালকালাইন মাত্রা বাড়ায় বলে দাবি করা হয়, যা শরীরের পিএইচ ব্যালান্স বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। অনেক বিলাসী ব্যক্তি মনে করেন, এমন পানি পান করলে শুধু দেহ নয়, মনও প্রশান্ত থাকে। তবে বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি যদিও বিতর্কের বিষয়।
অ্যাকুয়া দ্য ক্রিস্টালোর বোতলটির ডিজাইন করেছেন মেক্সিকান শিল্পী ফার্নান্দো আলতামিরানো। তিনি ইতালির বিখ্যাত ভাস্কর আমেদিও মদিগলিয়ানির কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বোতল তৈরি করেছেন। বোতলটি দেখতে লম্বা ও সরু মূর্তির মতো।
বোতলটি তৈরি করা হয়েছে ২৪ ক্যারেট সোনায় মোড়ানো কাচ দিয়ে। কিছু বিশেষ সংস্করণে বোতলের ওপর প্লাটিনাম ও হীরা বসানো হয়। ফলে বোতলটি পানির চেয়ে মূল্যবান হয়ে ওঠে।
২০১০ সালে মেক্সিকো সিটির এক নিলামে এই পানির বোতল বিক্রি হয় ৭ লাখ ৭৪ হাজার মেক্সিকান পেসোয়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দামি পানির বোতল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই নিলামের আয় বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবিলায় দান করা হয়েছিল।
অ্যাকুয়া দ্য ক্রিস্টালোর পানির বোতলকে শিল্পকর্ম হিসেবে ধরা হয়। বিলাসবহুল সংগ্রহযোগ্য বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয় এই বোতল। ধনী ব্যক্তি ও সেলিব্রিটিরা অনেক সময় এ ধরনের পণ্য কেনেন। শুধু নিজেদের স্ট্যাটাস বা রুচির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ ধরনের কাজ করেন তাঁরা। এটি যেমন শিল্পপ্রেমীদের কাছে আকর্ষণীয়, তেমনি সংগ্রাহকদের কাছেও মূল্যবান। অন্যদিকে অনেকেই এটিকে অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা ও অপচয়ের প্রতীক হিসেবে মনে করেন।