প্রযুক্তি ডেস্ক: পৃথিবীতে প্রাণের বীজ মহাকাশ থেকে আসতে পারে ও এমন উপাদান পুরো মহাবিশ্বেই ছড়িয়ে থাকতে পারে– সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই বলছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ‘প্রোটোস্টার’ বা নবগঠিত এক তারার আশপাশে ঘিরে থাকা ডিস্কে জটিল জৈব অণুর সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা, যেটিকে তারা বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন। এসব অণুকে প্রাণের মূল উপাদানের শুরুর ধাপ হিসেবে ধরা হচ্ছে, যেগুলো জীবন তৈরির জন্য দরকারি। এসব অণু পরে চিনি ও অ্যামিনো অ্যাসিডে রূপ নেয়। এসব উপাদান থেকেই জটিল উদ্ভিদ ও প্রাণী গঠিত হয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
এর আগেও এমন জটিল জৈব অণু অন্যান্য জায়গায় খুঁজে পেয়েছিলেন গবেষকরা।তব, তাদের দাবি, এবার এমন কিছু খুঁজে পাওয়া গেল যা আগে কখনও মেলেনি। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, মহাবিশ্বে প্রাণ ছড়িয়ে থাকার বিষয়টি হয়ত বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়েও বেশি বিস্তৃত ও সাধারণ হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, যখন একটি ঠান্ডা ‘প্রোটোস্টার’ বা নবগঠিত তারা প্রাথমিক অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে তরুণ তারায় পরিণত হয় তখন সেটি ধুলা ও গ্যাসে ঘেরা এক ডিস্কের মধ্যে আবদ্ধ থাকে এবং এ রূপান্তর প্রক্রিয়াটি খুবই তীব্র ও বিষ্ফোরক হয়। এতে প্রচ- বিকিরণ ও গ্যাস ছুঁড়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটে।
এর আগে গবেষকদের আশঙ্কা ছিল, এই চরম প্রক্রিয়াটি তারার আশপাশে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগকে সম্পূর্ণভাবে ‘রিসেট’ করে দিতে পারে, অর্থাৎ আগে থাকা বিভিন্ন যৌগ ধ্বংস হয়ে যায় এতে। ফলে প্রাণ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থকে আবার নতুন করে গঠন করতে হবে, ঠিক সেই সময় যখন বিভিন্ন গ্রহও তৈরি হচ্ছে।
তবে নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, এই তীব্র রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্যেও জটিল বিভিন্ন জৈব অণু টিকে থাকতে পারে।
এর মানে, এসব উপাদান ধ্বংস না হয়ে ওই প্রোটোস্টারের আশপাশের ডিস্ক অর্থাৎ যেখান থেকে পরে গ্রহ তৈরি হয় সেখানে পৌঁছে যেতে পারে। ‘এ ডিপ সার্চ ফর কমপ্লেক্স অর্গানিক মলিকুলাস টুওয়ার্ডস দ্য প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক অফ ভি৮৮৩ ওরি’ শিরোনামে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।