ঢাকা ০১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: রুম্মনের লাশ না নিয়ে স্বজনরা আদালতে

  • আপডেট সময় : ০১:৩৪:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : াজধানীর হাতিরঝিল থানায় পুলিশ হেফাজতে নিহত রুম্মন শেখ সুমনের ময়নাতদন্তের পর মরদেহ গ্রহণ না করে মামলা করতে আদালতে গেছে তার পরিবার। রুম্মনের স্ত্রী জান্নাত বেগমের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম মোশাররফ গতকাল রোববার বলেন, তারা আদালতে গেছেন ‘ন্যায়বিচার’ পেতে।
“আমরা লাশ গ্রহণ করিনি, আদালতে এসেছি বিচার চাইতে। লাশ নেওয়ার বিষয়ে আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেব, আগে আদালতের কাজ শেষ হোক।”
পুলিশের ভাষ্য, চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার ২৭ বছর বয়সী রুম্মন গত শুক্রবার মাঝরাতের পর জেল হাজতে ‘গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা’ করেন। এর একটি সিসিটিভি ভিডিও স্বজনদের দেখানো হয়েছে। তবে রুম্মনের পরিবার বলছে, গ্রেপ্তারের পর তাকে থানায় মারধর করা হয়েছে। পুলিশের দেখানো ভিডিওতে মৃতদেহ বা ঝুলন্ত দেহ ‘ছিল না’। রুম্মনের বিরুদ্ধে আনা চুরির অভিযোগও ‘সঠিক নয়’।
ময়নাতদন্তের জন্য রুম্মনের মরদেহ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়াদী হাসাপাতালের মর্গে নেওয়া হয় জানিয়ে হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ময়নাতদন্তের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু আমরা রাত দেড়টা পর্যন্ত বসে থেকেও লাশ পরিবারের কাছে দিতে পারিনি। তার আদালতে যাওয়ার কথা বলেছে।”
তেজগাঁও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক শনিবার রাতে থানায় সাংবাদিকদের জানান, ১৫ আগস্ট ইউনিলিভারের পিওরইটের এক বিপণনকারীর ৫৩ লাখ টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় মামলা হলে আল আমিন, সোহেল রানা ও অনিক নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।তারা এখন কারাগারে আছেন। ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং সিসিটিভির ভিডিও বিশ্লেষণ করে রুম্মন শেখকে শনাক্ত করা হয়। পরে শুক্রবার বিকালে রামপুরা মহানগর এলাকার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রুম্মন ওই বিপণন কোম্পানির ভ্যানচালক ছিলেন। আজিমুল হক বলেন, “তার (রুম্মন) বাসা থেকে তিন লাখ ১৩ হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে রাত ১১টার দিকে তাকে থানা হেফাজতে রাখা হয়।”
গত শনিবার সকালে রুম্মন শেখকে আদালতে পাঠানোর কথা ছিল জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “কিন্তু রাত ৩টা ৩২ মিনিটে রুম্মন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে লোহার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়। সিসিটিভি ফুটেজে সেটা দেখা গেছে। ওই ফুটেজ নিহতের স্ত্রীসহ স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে।”
তবে রুম্মনের স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যরা ওই ভিডিওকে ‘অসম্পূর্ণ’ আখ্যায়িত করে ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন। রুম্মন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে হাতিরঝিল থানার দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক হত্যার দায় এড়াতে পারি না, আমাদের ব্যর্থতা আছে

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: রুম্মনের লাশ না নিয়ে স্বজনরা আদালতে

আপডেট সময় : ০১:৩৪:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : াজধানীর হাতিরঝিল থানায় পুলিশ হেফাজতে নিহত রুম্মন শেখ সুমনের ময়নাতদন্তের পর মরদেহ গ্রহণ না করে মামলা করতে আদালতে গেছে তার পরিবার। রুম্মনের স্ত্রী জান্নাত বেগমের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম মোশাররফ গতকাল রোববার বলেন, তারা আদালতে গেছেন ‘ন্যায়বিচার’ পেতে।
“আমরা লাশ গ্রহণ করিনি, আদালতে এসেছি বিচার চাইতে। লাশ নেওয়ার বিষয়ে আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেব, আগে আদালতের কাজ শেষ হোক।”
পুলিশের ভাষ্য, চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার ২৭ বছর বয়সী রুম্মন গত শুক্রবার মাঝরাতের পর জেল হাজতে ‘গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা’ করেন। এর একটি সিসিটিভি ভিডিও স্বজনদের দেখানো হয়েছে। তবে রুম্মনের পরিবার বলছে, গ্রেপ্তারের পর তাকে থানায় মারধর করা হয়েছে। পুলিশের দেখানো ভিডিওতে মৃতদেহ বা ঝুলন্ত দেহ ‘ছিল না’। রুম্মনের বিরুদ্ধে আনা চুরির অভিযোগও ‘সঠিক নয়’।
ময়নাতদন্তের জন্য রুম্মনের মরদেহ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়াদী হাসাপাতালের মর্গে নেওয়া হয় জানিয়ে হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ময়নাতদন্তের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু আমরা রাত দেড়টা পর্যন্ত বসে থেকেও লাশ পরিবারের কাছে দিতে পারিনি। তার আদালতে যাওয়ার কথা বলেছে।”
তেজগাঁও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক শনিবার রাতে থানায় সাংবাদিকদের জানান, ১৫ আগস্ট ইউনিলিভারের পিওরইটের এক বিপণনকারীর ৫৩ লাখ টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় মামলা হলে আল আমিন, সোহেল রানা ও অনিক নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।তারা এখন কারাগারে আছেন। ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং সিসিটিভির ভিডিও বিশ্লেষণ করে রুম্মন শেখকে শনাক্ত করা হয়। পরে শুক্রবার বিকালে রামপুরা মহানগর এলাকার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রুম্মন ওই বিপণন কোম্পানির ভ্যানচালক ছিলেন। আজিমুল হক বলেন, “তার (রুম্মন) বাসা থেকে তিন লাখ ১৩ হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে রাত ১১টার দিকে তাকে থানা হেফাজতে রাখা হয়।”
গত শনিবার সকালে রুম্মন শেখকে আদালতে পাঠানোর কথা ছিল জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “কিন্তু রাত ৩টা ৩২ মিনিটে রুম্মন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে লোহার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়। সিসিটিভি ফুটেজে সেটা দেখা গেছে। ওই ফুটেজ নিহতের স্ত্রীসহ স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে।”
তবে রুম্মনের স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যরা ওই ভিডিওকে ‘অসম্পূর্ণ’ আখ্যায়িত করে ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন। রুম্মন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে হাতিরঝিল থানার দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।