ফরিদপুর সংবাদদাতা: ২৪ ঘণ্টা জনগণের জানমালের নিরাপত্তার অঙ্গীকার -এই শ্লোগানে, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) একটি সতর্ক মহড়া আয়োজন করে। তবে, মহড়ায় অংশগ্রহণকারী পুলিশের মোটরসাইকেল চালকদের কেউই হেলমেট পরেননি। এ ঘটনা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা উঠতে থাকে।
মোটরসাইকেল মহড়ায় সাতটি মোটরসাইকেলে ১৪ জন পুলিশ সদস্য সাইরেন বাজিয়ে অংশ নেন। তাদের সঙ্গে ছিল একটি পিকআপ গাড়ি, যার মধ্যে আরো ৬ থেকে ৮ পুলিশ সদস্য ছিলেন। মোট ২০ থেকে ২২ জন পুলিশ সদস্য এই মহড়ায় অংশ নেন। মহড়াটি বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে এক ঘণ্টা ধরে আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে থানায় ফিরে আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের জানমাল রক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা। এই মহড়ায় পুলিশ সদস্যরা আলফাডাঙ্গা বাজার, গুরুত্বপূর্ণ মোড়, জনবহুল স্থান এবং গ্রামীণ এলাকায় টহল দেন। তারা জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহযোগিতা কামনা করেন।
দেশে হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো আইনত দণ্ডনীয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এফ ডি নিউজ ওয়ান নামে একটি পেজ থেকে মহড়ার ভিডিও শেয়ার করা হলে বিভিন্ন ব্যবহারকারী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাফিন হোসেন নামে একজন মন্তব্য করেন, মহড়া দিলেন, হেলমেট নেই, অথচ মোড়ে মোড়ে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করেন। ইমন খান নামে একজন লিখেছেন, একটারও হেলমেট নেই। রবিদুল ইসলাম মন্তব্য করেন, পুলিশের হেলমেট লাগে না? মো. মামুন প্রশ্ন তোলেন, তাদের মাথায় হেলমেট নেই কেন? তারা কি আইনের ঊর্ধ্বে?
এ বিষয়ে আরো খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম ওই সময় থানায় ছিলেন না। তিনি ফরিদপুর শহরে দাপ্তরিক কাজে ছিলেন। তবে, মহড়াটি তার নির্দেশে পরিচালিত হয়েছে বলে জানান অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম। তিনি স্বীকার করেন, হেলমেট ছাড়া মহড়া আয়োজন করা ভুল ছিল। ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না।
এ বিষয়ে ওসি মো. শাহজালাল আলম বলেন, আমরা আইনের শাসক, তাই হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। পুলিশ সদস্যদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ফরিদপুর ইউনিটের সাবেক সভাপতি শিপ্রা গোস্বামী মন্তব্য করেন, আইনের রক্ষকরা যদি নিজেই আইন লঙ্ঘন করে, তাহলে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরো বলেন, যে পুলিশ সদস্য নিজে হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালান, তিনি কীভাবে সাধারণ মানুষকে জরিমানা করবেন?
এসি/আপ্র/২৯/১০/২০২৫























