ভোলা প্রতিনিধি : পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. নুরে আলম গতকাল বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত রোববার ভোলায় সংঘর্ষের সময় তিনি গুরুতর আহত হন। ওই দিন প্রথমে তাঁকে ভোলা ও বরিশালে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। ভোলা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নুরে আলম রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নুরে আলমের ভগ্নিপতি ভোলা জাঙালিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বলেন, গতকাল বুধবার রাত আটটার লঞ্চে নুরে আলমের মরদেহ ঢাকা থেকে ভোলায় আনা হবে। তবে জানাজার সময় এখনো ঠিক করা হয়নি। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আমিন বলেন, ‘নুরে আলমের ময়নাতদন্ত হবে কি না, তা ঢাকার নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
গত রোববার ঘটনার দিন সংঘর্ষকালে গুলিতে আবদুর রহিম মাতব্বর নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা নিহত হন। এ নিয়ে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হলো। এ ছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অনেকে চিকিৎসাধীন আছেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ভোলা জেলা বিএনপি শহরের মহাজনপট্টিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মী বিক্ষোভ মিছিল করতে রাস্তায় নামলে পুলিশ লাঠিপেটা করে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩৩টি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ১৬৫টি শটগানের গুলি ছোড়ে।
আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক বিএনপির : ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। বুধবার (৩ আগস্ট) এ হরতালের ডাক দেয় দলটি। গত রোববার সারাদেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলায় আয়োজিত বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে পুলিশের বাধা দেওয়ায় এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অনেকে। গুলিতে ওইদিনই স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আবদুর রহিম নিহত হন। একইদিন আহত হয়ে ঢাকা কমপ্যাথ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম। বুধবার বিকাল ৩টার দিকে তিনি মারা যান। এ নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনায় দু-জনের মৃত্যু হলো। এ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৬ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতির মৃত্যু, আজ হরতাল
জনপ্রিয় সংবাদ