ঢাকা ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

পুলিশের উপস্থিতিতে শান্তি সমাবেশের কাছেই বাসে আগুন

  • আপডেট সময় : ০২:২৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে গতকাল রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে যেখানে বাসে আগুন দেওয়া হয়, তার কাছেই চলছিল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ। ওই এলাকায় পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তাও ছিল। এর মধ্যেই বাসে আগুন দিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সেখানে উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিস্মিত হয়েছেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে তিনি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। এমন সময় দেখেন বাসে আগুন জ্বলে উঠছে। আগুন নেভাতে গিয়ে তাঁর হাতে আঘাত লেগেছে। আগুন দেওয়া হয়েছে প্রজাপতি পরিবহনের একটি বাসে। বাসটি আবদুল্লাহপুর থেকে এসে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর হয়ে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের দিকে যাচ্ছিল। বাসটি যখন ১০ নম্বর গোলচত্বর পেরিয়ে ১ নম্বর সেকশনে যাওয়ার রাস্তার মুখে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল, তখনই আগুন জ্বলে ওঠে। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ চলছিল কিছুটা দূরে শাহ আলী প্লাজার পাশে। বাসটি যেখানে আগুনে পুড়ছিল, তার একেবারে কাছেই মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের সড়কদ্বীপে তৈরি ট্রাফিক পুলিশের একটি কার্যালয়। সেখানে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি থাকে।
এদিকে রোববার সকাল থেকে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, প্রজাপতি পরিবহনের ওই বাসে প্রায় ৪০ জন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীবেশে বাসে উঠে পেছনের দিকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তিনি বলেন, আগুন লাগার পর বাসের যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে বাস থেকে নেমে যান। তাৎক্ষণিকভাবে অগ্নিসংযোগকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। বিএনপির ডাকা দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরুর আগে গত শনিবার রাতে রাজধানীতে ছয়টি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত ৮টা ২০ মিনিট থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে মতিঝিল, গাবতলী, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, আগারগাঁওয়ের তালতলা ও কাফরুল থানা এলাকায় আগুন দেওয়ার এসব ঘটনা ঘটে। এরপর সূত্রাপুর ও মিরপুরে বাসে আগুনের ঘটনা ঘটল। এ নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৭৩টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ডেমরায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ হয়ে এক চালকের সহকারী মারা গেছেন। যানবাহনে আগুনের বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটছে সন্ধ্যার পর, গভীর রাত ও ভোরে। এ ঘটনাগুলোর জন্য কারা দায়ী, এ নিয়ে পুলিশ ও বিএনপি পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে।
পুলিশ বলছে, হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা চোরাগোপ্তা হামলা ও আগুন দিয়ে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি করছেন। আর বিএনপির পক্ষ থেকে আত্মগোপনে থাকা দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, সরকারের লোকজন আগুন দিচ্ছেন। পুলিশের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চোরাগোপ্তা হামলা নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। এরই মধ্যে মিরপুরের ঘটনাটিতে দেখা গেল, দিন–দুপুরে পুলিশের উপস্থিতির মধ্যে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কাছে বাসে আগুন দিয়ে চলে গেছে দুর্বৃত্তরা।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পুলিশের উপস্থিতিতে শান্তি সমাবেশের কাছেই বাসে আগুন

আপডেট সময় : ০২:২৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে গতকাল রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে যেখানে বাসে আগুন দেওয়া হয়, তার কাছেই চলছিল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ। ওই এলাকায় পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তাও ছিল। এর মধ্যেই বাসে আগুন দিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সেখানে উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিস্মিত হয়েছেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে তিনি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। এমন সময় দেখেন বাসে আগুন জ্বলে উঠছে। আগুন নেভাতে গিয়ে তাঁর হাতে আঘাত লেগেছে। আগুন দেওয়া হয়েছে প্রজাপতি পরিবহনের একটি বাসে। বাসটি আবদুল্লাহপুর থেকে এসে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর হয়ে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের দিকে যাচ্ছিল। বাসটি যখন ১০ নম্বর গোলচত্বর পেরিয়ে ১ নম্বর সেকশনে যাওয়ার রাস্তার মুখে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল, তখনই আগুন জ্বলে ওঠে। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ চলছিল কিছুটা দূরে শাহ আলী প্লাজার পাশে। বাসটি যেখানে আগুনে পুড়ছিল, তার একেবারে কাছেই মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের সড়কদ্বীপে তৈরি ট্রাফিক পুলিশের একটি কার্যালয়। সেখানে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি থাকে।
এদিকে রোববার সকাল থেকে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, প্রজাপতি পরিবহনের ওই বাসে প্রায় ৪০ জন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীবেশে বাসে উঠে পেছনের দিকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তিনি বলেন, আগুন লাগার পর বাসের যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে বাস থেকে নেমে যান। তাৎক্ষণিকভাবে অগ্নিসংযোগকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। বিএনপির ডাকা দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরুর আগে গত শনিবার রাতে রাজধানীতে ছয়টি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত ৮টা ২০ মিনিট থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে মতিঝিল, গাবতলী, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, আগারগাঁওয়ের তালতলা ও কাফরুল থানা এলাকায় আগুন দেওয়ার এসব ঘটনা ঘটে। এরপর সূত্রাপুর ও মিরপুরে বাসে আগুনের ঘটনা ঘটল। এ নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৭৩টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ডেমরায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ হয়ে এক চালকের সহকারী মারা গেছেন। যানবাহনে আগুনের বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটছে সন্ধ্যার পর, গভীর রাত ও ভোরে। এ ঘটনাগুলোর জন্য কারা দায়ী, এ নিয়ে পুলিশ ও বিএনপি পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে।
পুলিশ বলছে, হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা চোরাগোপ্তা হামলা ও আগুন দিয়ে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি করছেন। আর বিএনপির পক্ষ থেকে আত্মগোপনে থাকা দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, সরকারের লোকজন আগুন দিচ্ছেন। পুলিশের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চোরাগোপ্তা হামলা নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। এরই মধ্যে মিরপুরের ঘটনাটিতে দেখা গেল, দিন–দুপুরে পুলিশের উপস্থিতির মধ্যে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কাছে বাসে আগুন দিয়ে চলে গেছে দুর্বৃত্তরা।