ঢাকা ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

পুলিশি হামলার ২৭ দিন পর শাবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ

  • আপডেট সময় : ০১:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে হামলার ২৭ দিন পর অবশেষে দুঃখ প্রকাশ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপাচার্য এই দুঃখ প্রকাশ করেন। এর আগে শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি উপাচার্যকে দুঃখ প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। উক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ সরকারের সব স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ সিলেটের সুশীল সমাজের সবাইকে এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিরসনে মিডিয়া কর্মীদের যারা দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরও জানাচ্ছি ধন্যবাদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এ প্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা সম্ভব হবে।
গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। পরে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায়। পরদিন বিকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে তাদের ওপর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কিলোতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন।
গত ২৬ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল অনশনরত ২৮ জন শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙান। এরপর থেকে অহিংস আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ ও অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে চালিয়ে আসছিলেন তারা। ১৪ দিন পর বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এর দুই দিন পর শুক্রবার সংকট নিরসনে সিলেট ছুটে যান শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের (রাষ্ট্রপতি) সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পুলিশি হামলার ২৭ দিন পর শাবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ

আপডেট সময় : ০১:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে হামলার ২৭ দিন পর অবশেষে দুঃখ প্রকাশ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপাচার্য এই দুঃখ প্রকাশ করেন। এর আগে শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি উপাচার্যকে দুঃখ প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। উক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ সরকারের সব স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ সিলেটের সুশীল সমাজের সবাইকে এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিরসনে মিডিয়া কর্মীদের যারা দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরও জানাচ্ছি ধন্যবাদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এ প্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা সম্ভব হবে।
গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। পরে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায়। পরদিন বিকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে তাদের ওপর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কিলোতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন।
গত ২৬ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল অনশনরত ২৮ জন শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙান। এরপর থেকে অহিংস আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ ও অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে চালিয়ে আসছিলেন তারা। ১৪ দিন পর বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এর দুই দিন পর শুক্রবার সংকট নিরসনে সিলেট ছুটে যান শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের (রাষ্ট্রপতি) সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।