ঢাকা ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

পুরস্কারের তথ্য পরিকল্পিত মিথ্যাচার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চায় ইউনেসকো কমিশন

  • আপডেট সময় : ০১:২৯:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
  • ১১৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইউনেসকোর নাম অপব্যবহার করে প্রতারণা ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার করায় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ইউনূস সেন্টারের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন।
কমিশনের ভাষ্য, ‘বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার, সেহেতু তাদের (ড. ইউনূস ও ইউনূস সেন্টার) বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার ব্যাখা চাওয়া হবে।’
গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ট্রি অব পিস প্রদান: বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের বক্তব্য’ শীর্ষক এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে সই করেছেন কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জুবাইদা মান্নান। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ঢাকার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এবং ইউনূস সেন্টারের অফিসিয়াল ওয়েব পেজে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেসকো কর্তৃক ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার প্রদানের সংবাদটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের (বিএনসিইউ) দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ‘ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে পত্রিকায় যে সংবাদ ছাপা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ মার্চ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ১১তম গ্লোবাল বাকু ফোরোমে ড. ইউনূসকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। কিন্তু ইউনেসকো ঢাকা অফিস জানিয়েছে, প্যারিসস্থ ইউনেসকো সদরদপ্তর এ বিষয়ে একেবারেই অবহিত নয়।’
এতে আরও বলা হয়, ‘১১তম বাকু ফোরাম যেখানে এ সম্মাননা দেওয়ার সংবাদ প্রচার হয়েছে, সেখানে ইউনেসকোর কোনো অফিসিয়াল প্রতিনিধিত্বই ছিল না। অধিকন্তু ইউনূস সেন্টার কর্তৃক দাবিকৃত সম্মাননা ইউনেসকোর কোনো পুরস্কার বা সম্মাননাও নয়। ড. ইউনূসকে ‘ট্রি অব পিস’ নামক একটি ভাস্কর্য স্মারক/সম্মাননা প্রদান করেন ইসরায়েলি ভাস্কর্যশিল্পী মিস হেদভা সের। মিজ হেদভা নিজে নিশ্চিত করেছেন যে, ড. ইউনূসকে ‘ট্রি অব পিস’ প্রদানে ইউনেসকোর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।’
‘নিজামি গজনবী ইন্টারন্যাশন্যাল সেন্টারের আমন্ত্রণে ইসরায়েলি ভাস্কর্যশিল্পী মিস হেদভা সের ড. ইউনুসকে এটি প্রদান করেন। মিস হেদভা সের ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক কূটনীতিবিষয়ক গুইউইল অ্যাম্বাসেডর। কিন্তু ইউনেসকোর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধি নন এবং ইউনেসকোর কোনো পুরস্কার/সম্মাননা দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না।’
‘সুতরাং উল্লিখিত বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন ড. ইউনূস পরিচালিত ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত এবং প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতারণামূলক বলে মনে করে তার নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ ইউনেসকোর অন্যতম সক্রিয় সদস্যরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ইউনেসকোর মতো জাতিসংঘের এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং সুখ্যাতিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম অপব্যবহারের বিষয়ে ড. ইউনূস এবং ইউনুস সেন্টারকে সতর্ক করা হলো। একই সঙ্গে বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার, সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার ব্যাখা চাওয়া হবে।’
বিবৃতিতে একেবারে নিচের অংশে সম্প্রতি শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ড. ইউনূসের কারাদ-ের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। তাকে কোনো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বা সম্মাননা দেওয়া সমীচীন নয় বলেও এতে বলা হয়।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, গত ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের আদালত ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের আরও তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয়মাসের কারাদ- এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। ড. ইউনুস এবং তার সহযোগীরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন, যেটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া আয়কর আইন লঙ্ঘনের জন্য তার ব্যক্তিগত আয়কর দাবি আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং তিনি যতদিন আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত নন, ততদিন তাকে কোনো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বা সম্মাননা প্রদান সমীচীন নয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে ইউনেসকোর সঙ্গে কার্যক্রমের জন্য সরকারের ফোকাল পয়েন্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, কেউ যেন ইউনেসকোর নামের অপব্যবহার কিংবা অপপ্রয়োগ না করতে পারে—সেটি নিশ্চিত করা। সে হিসেবে ইউনেসকোর নাম অপব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে ইউনেসকো ঢাকা অফিস এবং ইউনেসকোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শ করে ইউনেসকো সদরদপ্তরকে অবহিত করা হবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুরস্কারের তথ্য পরিকল্পিত মিথ্যাচার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চায় ইউনেসকো কমিশন

আপডেট সময় : ০১:২৯:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইউনেসকোর নাম অপব্যবহার করে প্রতারণা ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার করায় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ইউনূস সেন্টারের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন।
কমিশনের ভাষ্য, ‘বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার, সেহেতু তাদের (ড. ইউনূস ও ইউনূস সেন্টার) বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার ব্যাখা চাওয়া হবে।’
গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ট্রি অব পিস প্রদান: বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের বক্তব্য’ শীর্ষক এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে সই করেছেন কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জুবাইদা মান্নান। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ঢাকার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এবং ইউনূস সেন্টারের অফিসিয়াল ওয়েব পেজে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেসকো কর্তৃক ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার প্রদানের সংবাদটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের (বিএনসিইউ) দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ‘ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে পত্রিকায় যে সংবাদ ছাপা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ মার্চ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ১১তম গ্লোবাল বাকু ফোরোমে ড. ইউনূসকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। কিন্তু ইউনেসকো ঢাকা অফিস জানিয়েছে, প্যারিসস্থ ইউনেসকো সদরদপ্তর এ বিষয়ে একেবারেই অবহিত নয়।’
এতে আরও বলা হয়, ‘১১তম বাকু ফোরাম যেখানে এ সম্মাননা দেওয়ার সংবাদ প্রচার হয়েছে, সেখানে ইউনেসকোর কোনো অফিসিয়াল প্রতিনিধিত্বই ছিল না। অধিকন্তু ইউনূস সেন্টার কর্তৃক দাবিকৃত সম্মাননা ইউনেসকোর কোনো পুরস্কার বা সম্মাননাও নয়। ড. ইউনূসকে ‘ট্রি অব পিস’ নামক একটি ভাস্কর্য স্মারক/সম্মাননা প্রদান করেন ইসরায়েলি ভাস্কর্যশিল্পী মিস হেদভা সের। মিজ হেদভা নিজে নিশ্চিত করেছেন যে, ড. ইউনূসকে ‘ট্রি অব পিস’ প্রদানে ইউনেসকোর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।’
‘নিজামি গজনবী ইন্টারন্যাশন্যাল সেন্টারের আমন্ত্রণে ইসরায়েলি ভাস্কর্যশিল্পী মিস হেদভা সের ড. ইউনুসকে এটি প্রদান করেন। মিস হেদভা সের ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক কূটনীতিবিষয়ক গুইউইল অ্যাম্বাসেডর। কিন্তু ইউনেসকোর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধি নন এবং ইউনেসকোর কোনো পুরস্কার/সম্মাননা দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না।’
‘সুতরাং উল্লিখিত বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন ড. ইউনূস পরিচালিত ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত এবং প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতারণামূলক বলে মনে করে তার নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ ইউনেসকোর অন্যতম সক্রিয় সদস্যরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ইউনেসকোর মতো জাতিসংঘের এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং সুখ্যাতিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম অপব্যবহারের বিষয়ে ড. ইউনূস এবং ইউনুস সেন্টারকে সতর্ক করা হলো। একই সঙ্গে বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার, সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার ব্যাখা চাওয়া হবে।’
বিবৃতিতে একেবারে নিচের অংশে সম্প্রতি শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ড. ইউনূসের কারাদ-ের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। তাকে কোনো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বা সম্মাননা দেওয়া সমীচীন নয় বলেও এতে বলা হয়।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, গত ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের আদালত ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের আরও তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয়মাসের কারাদ- এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। ড. ইউনুস এবং তার সহযোগীরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন, যেটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া আয়কর আইন লঙ্ঘনের জন্য তার ব্যক্তিগত আয়কর দাবি আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং তিনি যতদিন আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত নন, ততদিন তাকে কোনো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বা সম্মাননা প্রদান সমীচীন নয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে ইউনেসকোর সঙ্গে কার্যক্রমের জন্য সরকারের ফোকাল পয়েন্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, কেউ যেন ইউনেসকোর নামের অপব্যবহার কিংবা অপপ্রয়োগ না করতে পারে—সেটি নিশ্চিত করা। সে হিসেবে ইউনেসকোর নাম অপব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে ইউনেসকো ঢাকা অফিস এবং ইউনেসকোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শ করে ইউনেসকো সদরদপ্তরকে অবহিত করা হবে।