ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পুঁজিবাজারে সাড়ে ১০ বছরে সর্বোচ্চ লেনদেন

  • আপডেট সময় : ০১:২৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সপ্তাহের প্রথম দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ২ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে পুঁজিবাজারে লেনদেন ২০১০ সালের ধসের সময়কার উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা সাড়ে ১০ বছরে সর্বোচ্চ। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর গতকাল রোববার প্রথম লেনদেনে বাংলাদেশের দুই পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক বাড়লেও শেয়ার বিক্রির চাপে সূচক কিছুটা কমেছে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে এদিন লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ২২ দশমিক ৩২ শতাংশ বা ৪৮৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা বেড়েছে।
ঢাকায় ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ২ হাজার ১৮২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এই লেনদেন গত সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে বেশি। এর আগে এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর। সেদিন ডিএসইতে লেনদেন ছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম বলেন,“ শিল্পবান্ধব বাজেট হয়েছে। সেটার একটা ভালো প্রভাব দেশের পুঁজিবাজারে আছে। এই লেনদেনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।”
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কমিশনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ রোববার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের এক অনুষ্ঠানে বলেন,“বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন খুব ভালো অবস্থায় আছে। অন্যান্য বছর বাজেটের পরে পুঁজিবাজারে লেনদেন কমে যায়। কিন্তু এবার বাজেটের পরদিন রেকর্ড লেনদেন হয়েছে।”
বাজেটের পর প্রথম কার্যদিবসে এবং ছয় হাজার পয়েন্টের মাইলফলকে সূচকের অবস্থানের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লেনদেনে এক ধরনের মনস্তাত্বিক চাপ রয়েছে। এই দ্বিধার কারণে শেয়ার কেনাবেচায় অনেকেই ছিলেন সতর্ক। যে কারণে শেয়ারবিক্রির চাপ বেশি থাকায় বেশিরভাগ শেয়ার দর হারায় বলে বলছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, সূচক কমার মূল কারণ একই দিনে ব্যাংক, ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক খাত ও বীমার বেশিরভাগের দরপতন। এতে সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ১৫ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৩৮ দশমিক ২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৪০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বেড়েছে।
গতকাল রোববার এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৩৬৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৫টির এবং কমেছে ২০১টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির দর। ব্যাংক খাতের ৮৭ শতাংশ শেয়ারের দাম কমেছে। তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৭টির শেয়ারের দাম কমেছে। ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খাতের ৭৮ শতাংশ শেয়ারের দাম কমেছে। ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৮টির শেয়ারের দাম কমেছে। এদিন বীমা খাতে ৮০ শতাংশ শেয়ারের দাম কমেছে। তালিকাভুক্ত ৫০টির মধ্যে ৪০টির দাম কমেছে। তবে দর বেড়েছে বস্ত্র খাতের শেয়ারের। এই খাতে তালিকাভুক্ত ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৪০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, শতকরা হারে বেড়েছে ৭১ শতাংশ।
ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৯৯ দশমিক ৩১ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ১৮ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ২২২ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০টি কোম্পানি : বেক্সিমকো লিঃ, ইফাদ অটোস, ফরচুন সুজ, রূপালী ইন্স্যুরেন্স , রবি আজিয়াটা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স , গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স , এসএস স্টিল ও সোনার বাংল ইন্স্যুরেন্স ।
দাম বাড়ার শীর্ষ ১০টি কোম্পানি : ফরচুন সুজ, আরএসআরএম স্টিল, রানার অটোমোবাইল, বেক্সিমকো লি., শাইনপুকুর সিরামিক্স, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, আইমেক্স ইলেকট্রোডস, এএফসি এগ্রো বায়োটেক, আলিফ ম্যানুফেকচারিং ও সাফকো স্পিনিং।
দাম কমার শীর্ষ ১০টি কোম্পানি : এনসিসি ব্যাংক, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স , রিল্যায়েন্স ইন্স্যুরেন্স , সাউথইস্ট ব্যাংক, এশিয়া প্যাসিফিক জেঃ ইন্স্যুরেন্স , ডাচ-বাংলা ব্যাংক, জনতা ইন্স্যুরেন্স , প্রাইম ব্যাংক, আমান ফিড ও ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৬ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭ হাজার ৫০৭ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে। সিএসইতে রোববার লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ১৮২ শতাংশ বা ১০৩ কোটি ২১ লাখ টাকা বেড়েছে। সিএসই রোববার ১৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৫৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩০টির, কমেছে ১৪৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির দর।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পুঁজিবাজারে সাড়ে ১০ বছরে সর্বোচ্চ লেনদেন

আপডেট সময় : ০১:২৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : সপ্তাহের প্রথম দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ২ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে পুঁজিবাজারে লেনদেন ২০১০ সালের ধসের সময়কার উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা সাড়ে ১০ বছরে সর্বোচ্চ। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর গতকাল রোববার প্রথম লেনদেনে বাংলাদেশের দুই পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক বাড়লেও শেয়ার বিক্রির চাপে সূচক কিছুটা কমেছে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে এদিন লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ২২ দশমিক ৩২ শতাংশ বা ৪৮৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা বেড়েছে।
ঢাকায় ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ২ হাজার ১৮২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এই লেনদেন গত সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে বেশি। এর আগে এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর। সেদিন ডিএসইতে লেনদেন ছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম বলেন,“ শিল্পবান্ধব বাজেট হয়েছে। সেটার একটা ভালো প্রভাব দেশের পুঁজিবাজারে আছে। এই লেনদেনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।”
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কমিশনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ রোববার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের এক অনুষ্ঠানে বলেন,“বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন খুব ভালো অবস্থায় আছে। অন্যান্য বছর বাজেটের পরে পুঁজিবাজারে লেনদেন কমে যায়। কিন্তু এবার বাজেটের পরদিন রেকর্ড লেনদেন হয়েছে।”
বাজেটের পর প্রথম কার্যদিবসে এবং ছয় হাজার পয়েন্টের মাইলফলকে সূচকের অবস্থানের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লেনদেনে এক ধরনের মনস্তাত্বিক চাপ রয়েছে। এই দ্বিধার কারণে শেয়ার কেনাবেচায় অনেকেই ছিলেন সতর্ক। যে কারণে শেয়ারবিক্রির চাপ বেশি থাকায় বেশিরভাগ শেয়ার দর হারায় বলে বলছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, সূচক কমার মূল কারণ একই দিনে ব্যাংক, ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক খাত ও বীমার বেশিরভাগের দরপতন। এতে সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ১৫ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৩৮ দশমিক ২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৪০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বেড়েছে।
গতকাল রোববার এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৩৬৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৫টির এবং কমেছে ২০১টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির দর। ব্যাংক খাতের ৮৭ শতাংশ শেয়ারের দাম কমেছে। তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৭টির শেয়ারের দাম কমেছে। ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খাতের ৭৮ শতাংশ শেয়ারের দাম কমেছে। ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৮টির শেয়ারের দাম কমেছে। এদিন বীমা খাতে ৮০ শতাংশ শেয়ারের দাম কমেছে। তালিকাভুক্ত ৫০টির মধ্যে ৪০টির দাম কমেছে। তবে দর বেড়েছে বস্ত্র খাতের শেয়ারের। এই খাতে তালিকাভুক্ত ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৪০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, শতকরা হারে বেড়েছে ৭১ শতাংশ।
ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৯৯ দশমিক ৩১ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ১৮ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ২২২ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০টি কোম্পানি : বেক্সিমকো লিঃ, ইফাদ অটোস, ফরচুন সুজ, রূপালী ইন্স্যুরেন্স , রবি আজিয়াটা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স , গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স , এসএস স্টিল ও সোনার বাংল ইন্স্যুরেন্স ।
দাম বাড়ার শীর্ষ ১০টি কোম্পানি : ফরচুন সুজ, আরএসআরএম স্টিল, রানার অটোমোবাইল, বেক্সিমকো লি., শাইনপুকুর সিরামিক্স, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, আইমেক্স ইলেকট্রোডস, এএফসি এগ্রো বায়োটেক, আলিফ ম্যানুফেকচারিং ও সাফকো স্পিনিং।
দাম কমার শীর্ষ ১০টি কোম্পানি : এনসিসি ব্যাংক, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স , রিল্যায়েন্স ইন্স্যুরেন্স , সাউথইস্ট ব্যাংক, এশিয়া প্যাসিফিক জেঃ ইন্স্যুরেন্স , ডাচ-বাংলা ব্যাংক, জনতা ইন্স্যুরেন্স , প্রাইম ব্যাংক, আমান ফিড ও ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৬ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭ হাজার ৫০৭ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে। সিএসইতে রোববার লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ১৮২ শতাংশ বা ১০৩ কোটি ২১ লাখ টাকা বেড়েছে। সিএসই রোববার ১৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৫৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩০টির, কমেছে ১৪৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির দর।