ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

পিয়ন-সুইপারের হাতে দুই সিটির যানবাহনের স্টিয়ারিং

  • আপডেট সময় : ১২:৫৫:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে

মহানগর প্রতিবেদন : পিয়ন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সুইপার ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কর্মরতদের দিয়েই চলছে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের যানবাহন। দক্ষ চালক নিয়োগ না দিয়ে এদের দিয়ে হালকা থেকে ভারী যানবাহন চালানো হচ্ছে। এসব চালকদের নেই কোনও বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। কয়েকজনের থাকলেও তারা গাড়ি চালান না। অন্যজনকে ভাড়া দিয়ে নিজেরা করেন ভিন্ন কাজ। ফলে অদক্ষ চালকদের হাতে গাড়ি চলে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
গত দুই দিনের ব্যবধানে দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ও দৈনিক প্রথম আলোর সাবেক একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা নগর ভবনেও অবস্থান করেছেন। নগর কর্তৃপক্ষ ঘাতক চালকের বিচার ও এ খাতে শৃঙ্খলা আনাসহ বিভিন্ন আশ্বাস দিয়েছেন। তবে দুর্ঘটনার আগে তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ দুই মেয়র সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য নানা কথা বলে যাচ্ছেন। এ জন্য বাস রুট রেশনালাইজেশন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দায়িত্বও দেওয়া হয়ে
সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে পিয়ন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও শ্রমিকদের নিয়ে গাড়ি চালানোর অভিযোগ একদিনের নয়। এর আগে এমন দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে করপোরেশনের গাড়ি চালকরা। প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে সব চেয়ে বড় অভিযোগ, তাদের বৈধ চালকের সংকট থাকলেও যারা রয়েছেন তারা নিজেরা গাড়ি চালান না। অন্য চালক ভাড়া করে গাড়ি চালান। বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করেছেন দুই মেয়র।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমাদের কোনও না কোনও আইনের আওতায় থাকতে হয়। নীতিমালা মেনে চলতে হয়। সেই নিয়মকানুন মেনেই চালকের গাড়ি চালানোর দায়িত্ব ছিল। সে সেই দায়িত্ব পালন করেনি। আরেকজনকে ভাড়া দিয়ে গাড়ি চালিয়েছে। সুতরাং সবাইকেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। যার দায়িত্ব ছিল তাকে আমরা সাময়িক বরখাস্ত করেছি। চাকরি থেকে অপসারণ করবো। যে চালক গাড়ি চালানো অবস্থায় ছিল সে খুনি। তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো। কোনও বহিরাগত যেন ডিএসসিসির গাড়ি চালাতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।’
অপরদিকে, উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের চালকের অনেক সংকট রয়েছে। আমরা ৪৫টি ভারি ও ৪৭টি হালকা গাড়ি চালকের চাহিদা চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা ৪৫ জনের অনুমতি পেয়েছি। নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চালকদের অর্ধেকের মতো বৈধ না। অন্য বিভাগ থেকে এনে তাদের দিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এর মধ্যেও নিজের গাড়ি অন্যকে দিয়ে চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব অবৈধ চালক দিয়ে গাড়ি পরিচালনার দায় সিটি করপোরেশন কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। এর সঙ্গে সংস্থার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারাই জড়িত। এছাড়া পরিবহনের তেল চুরির একটা বিষয়ও থাকে। এর ভাগ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও পান। এসব ঘটনায় যে গাড়ি চালিয়েছে বা গাড়িতে যে ছিল শুধু তাকে শাস্তি দিলে অন্যায় হবে। তাদের হাতে যারা গাড়ি তুলে দিয়েছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সিটি করপোরেশনও বলছে, গাড়িগুলো অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যারা বরাদ্দ নিয়েছেন শুধু তাদের শাস্তির আওতায় আনা হলেও যারা বরাদ্দ দিয়েছেন তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন।
শিক্ষার্থীদের নগর ভবনে অবস্থানের পর ডিএসসিসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অবৈধভাবেই গাড়ি বরাদ্দ গ্রহণ করে তা চালানোর কারণে পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. হারুন মিয়া ও গাড়ি চালানোর কাজে সহযোগিতা করায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. আব্দুর রাজ্জাককে কর্মচ্যুত করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত গাড়ি নিজে না চালিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অন্যকে চালাতে দেওয়ায় করপোরেশনের গাড়ি চালক (ভারী) মো. ইরান মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু অবৈধ বরাদ্দের সঙ্গে যে কর্মকর্তা জড়িত তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থার কথা জানানো হয়নি।
জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিজস্ব গাড়ি রয়েছে ৫৯১টি। কিন্তু চালক রয়েছে ২২৫ জন। এর মধ্যে ভারী যানবাহন রয়েছে ৩৩৭টি। কিন্তু তার চালক আছে ১১০ জন। এর মধ্যে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে চালক রয়েছে ২৬ জন। বাকি গাড়িগুলো সিটি করপোরেশন প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই পরিচ্ছন্নতা ও মশককর্মীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। একই অবস্থা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের। তাদের বর্জ্যবাহী ভারী যানবাহন রয়েছে ১৩৭টি। বিপরীতে চালক আছে মাত্র ৪১ জন। এর মধ্যে আবার ২৫ জনই দৈনিক মজুরিভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত। এছাড়া চালকের পাশাপাশি সংস্থা দুটির ৮০ ভাগ যানবাহনের ফিটনেস সনদও নেই।
পরিবহন চালকদের দুই সিটিতে দুটি সংগঠন রয়েছে। ড্রাইভার্স ইউনিয়ন নামে সংগঠন দুটির বিশাল কমিটি রয়েছে। তাদের নেতারা কবে যে গাড়ি চালিয়েছেন তার কোনও হিসাব নেই। প্রভাব খাটিয়ে ভাড়াটে চালক দিয়েই নিজের নামের গাড়িগুলো পরিচালনা করছেন। আর এসব কারণেই পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা চলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৬ সালে চূড়ান্ত করা দুই সিটির অর্গানোগ্রামে গাড়ি ৩০৬টি করে চালকের পদ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২১৫টি ভারী যানচালক ও ৯১ জন হালকা যানচালক। অথচ করপোরেশনের প্রয়োজন এর দ্বিগুণের বেশি। কিন্তু সিটি করপোরেশন চাইলেই এর চেয়ে বেশি যানচালক নিয়োগ দিতে পারে না। ফলে অতিরিক্ত গাড়ি চালানোর জন্য দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কিংবা ভাড়াটে চালক নিয়োগ দিতে হচ্ছে।
এদিকে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ভারী চালক খুঁজেও পাচ্ছে না সিটি করপোরেশন। ৫০ জন ভারী যানবাহন চালক নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ২৯ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কিন্তু এতে আবেদন করেছে মাত্র ৪১ জন। লাইসেন্সগুলো বিআরটিএতে পাঠলে দেখা যায়, এ থেকে মাত্র ১৯ জনের লাইসেন্স ঠিক। বাকিগুলো জাল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পিয়ন-সুইপারের হাতে দুই সিটির যানবাহনের স্টিয়ারিং

আপডেট সময় : ১২:৫৫:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১

মহানগর প্রতিবেদন : পিয়ন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সুইপার ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কর্মরতদের দিয়েই চলছে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের যানবাহন। দক্ষ চালক নিয়োগ না দিয়ে এদের দিয়ে হালকা থেকে ভারী যানবাহন চালানো হচ্ছে। এসব চালকদের নেই কোনও বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। কয়েকজনের থাকলেও তারা গাড়ি চালান না। অন্যজনকে ভাড়া দিয়ে নিজেরা করেন ভিন্ন কাজ। ফলে অদক্ষ চালকদের হাতে গাড়ি চলে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
গত দুই দিনের ব্যবধানে দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ও দৈনিক প্রথম আলোর সাবেক একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা নগর ভবনেও অবস্থান করেছেন। নগর কর্তৃপক্ষ ঘাতক চালকের বিচার ও এ খাতে শৃঙ্খলা আনাসহ বিভিন্ন আশ্বাস দিয়েছেন। তবে দুর্ঘটনার আগে তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ দুই মেয়র সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য নানা কথা বলে যাচ্ছেন। এ জন্য বাস রুট রেশনালাইজেশন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দায়িত্বও দেওয়া হয়ে
সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে পিয়ন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও শ্রমিকদের নিয়ে গাড়ি চালানোর অভিযোগ একদিনের নয়। এর আগে এমন দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে করপোরেশনের গাড়ি চালকরা। প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে সব চেয়ে বড় অভিযোগ, তাদের বৈধ চালকের সংকট থাকলেও যারা রয়েছেন তারা নিজেরা গাড়ি চালান না। অন্য চালক ভাড়া করে গাড়ি চালান। বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করেছেন দুই মেয়র।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমাদের কোনও না কোনও আইনের আওতায় থাকতে হয়। নীতিমালা মেনে চলতে হয়। সেই নিয়মকানুন মেনেই চালকের গাড়ি চালানোর দায়িত্ব ছিল। সে সেই দায়িত্ব পালন করেনি। আরেকজনকে ভাড়া দিয়ে গাড়ি চালিয়েছে। সুতরাং সবাইকেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। যার দায়িত্ব ছিল তাকে আমরা সাময়িক বরখাস্ত করেছি। চাকরি থেকে অপসারণ করবো। যে চালক গাড়ি চালানো অবস্থায় ছিল সে খুনি। তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো। কোনও বহিরাগত যেন ডিএসসিসির গাড়ি চালাতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।’
অপরদিকে, উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের চালকের অনেক সংকট রয়েছে। আমরা ৪৫টি ভারি ও ৪৭টি হালকা গাড়ি চালকের চাহিদা চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা ৪৫ জনের অনুমতি পেয়েছি। নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চালকদের অর্ধেকের মতো বৈধ না। অন্য বিভাগ থেকে এনে তাদের দিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এর মধ্যেও নিজের গাড়ি অন্যকে দিয়ে চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব অবৈধ চালক দিয়ে গাড়ি পরিচালনার দায় সিটি করপোরেশন কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। এর সঙ্গে সংস্থার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারাই জড়িত। এছাড়া পরিবহনের তেল চুরির একটা বিষয়ও থাকে। এর ভাগ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও পান। এসব ঘটনায় যে গাড়ি চালিয়েছে বা গাড়িতে যে ছিল শুধু তাকে শাস্তি দিলে অন্যায় হবে। তাদের হাতে যারা গাড়ি তুলে দিয়েছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সিটি করপোরেশনও বলছে, গাড়িগুলো অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যারা বরাদ্দ নিয়েছেন শুধু তাদের শাস্তির আওতায় আনা হলেও যারা বরাদ্দ দিয়েছেন তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন।
শিক্ষার্থীদের নগর ভবনে অবস্থানের পর ডিএসসিসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অবৈধভাবেই গাড়ি বরাদ্দ গ্রহণ করে তা চালানোর কারণে পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. হারুন মিয়া ও গাড়ি চালানোর কাজে সহযোগিতা করায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. আব্দুর রাজ্জাককে কর্মচ্যুত করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত গাড়ি নিজে না চালিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অন্যকে চালাতে দেওয়ায় করপোরেশনের গাড়ি চালক (ভারী) মো. ইরান মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু অবৈধ বরাদ্দের সঙ্গে যে কর্মকর্তা জড়িত তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থার কথা জানানো হয়নি।
জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিজস্ব গাড়ি রয়েছে ৫৯১টি। কিন্তু চালক রয়েছে ২২৫ জন। এর মধ্যে ভারী যানবাহন রয়েছে ৩৩৭টি। কিন্তু তার চালক আছে ১১০ জন। এর মধ্যে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে চালক রয়েছে ২৬ জন। বাকি গাড়িগুলো সিটি করপোরেশন প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই পরিচ্ছন্নতা ও মশককর্মীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। একই অবস্থা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের। তাদের বর্জ্যবাহী ভারী যানবাহন রয়েছে ১৩৭টি। বিপরীতে চালক আছে মাত্র ৪১ জন। এর মধ্যে আবার ২৫ জনই দৈনিক মজুরিভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত। এছাড়া চালকের পাশাপাশি সংস্থা দুটির ৮০ ভাগ যানবাহনের ফিটনেস সনদও নেই।
পরিবহন চালকদের দুই সিটিতে দুটি সংগঠন রয়েছে। ড্রাইভার্স ইউনিয়ন নামে সংগঠন দুটির বিশাল কমিটি রয়েছে। তাদের নেতারা কবে যে গাড়ি চালিয়েছেন তার কোনও হিসাব নেই। প্রভাব খাটিয়ে ভাড়াটে চালক দিয়েই নিজের নামের গাড়িগুলো পরিচালনা করছেন। আর এসব কারণেই পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা চলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৬ সালে চূড়ান্ত করা দুই সিটির অর্গানোগ্রামে গাড়ি ৩০৬টি করে চালকের পদ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২১৫টি ভারী যানচালক ও ৯১ জন হালকা যানচালক। অথচ করপোরেশনের প্রয়োজন এর দ্বিগুণের বেশি। কিন্তু সিটি করপোরেশন চাইলেই এর চেয়ে বেশি যানচালক নিয়োগ দিতে পারে না। ফলে অতিরিক্ত গাড়ি চালানোর জন্য দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কিংবা ভাড়াটে চালক নিয়োগ দিতে হচ্ছে।
এদিকে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ভারী চালক খুঁজেও পাচ্ছে না সিটি করপোরেশন। ৫০ জন ভারী যানবাহন চালক নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ২৯ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কিন্তু এতে আবেদন করেছে মাত্র ৪১ জন। লাইসেন্সগুলো বিআরটিএতে পাঠলে দেখা যায়, এ থেকে মাত্র ১৯ জনের লাইসেন্স ঠিক। বাকিগুলো জাল।