নিজস্ব প্রতিবেদক: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবি ‘সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের অংশ’ বলে মনে করেন রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এমন মন্তব্য করেন। কোনো দলের নাম না নিয়ে তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতিতে ভোট না হলে আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আজকে এই বিষয়কে তো প্রমিনেন্টলি নিয়ে আসা, এত সামনে নিয়ে আসা আমি মনে করি, এটা সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের অংশ। এটা কারও জন্যই কোনো মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসবে না।
রাজধানীর বারিধারায় জামিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসায় ক্যান্সার আক্রান্ত এনামুল হাসান ফারুকীর সঙ্গে এদিন দেখা করেন রিজভীর নেতৃত্বে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর একটি প্রতিনিধি দল। তারা এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে নগদ অর্থ ফারুকীর হাতে তুলে দেন।
সেখানে রিজভী কোনো দলের নাম না নিয়ে বলেন, ‘আপনাদের যে এতদিন আন্দোলন গেল, ১৬/১৭ বছর আপনারাও গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছেন, এখানে সমস্ত ইসলামিক রাজনৈতিক দল আপনারা করেছেন সেদিন তো এই প্রসঙ্গ (আনুপাতিক হারে ভোট) তোলেননি। আজকে এটা এত বড় দেখা হল, এই বিষয়কে এত সিরিয়াসলি নিচ্ছেন কেন? এলাকার লোক যদি তার প্রতিনিধিকে আগে থেকে চিনতে না পারে তাহলে তো মানুষ বিভ্রান্তিতে ভুগবে। মানুষ জানতে পারবে না যে আমাদের প্রতিনিধি কে হবে? আজকে জুনায়েদ আল হাবিব উনি যদি একটা এলাকা থেকে দাঁড়ান উনি যদি আগে সেই এলাকায় পরিচিত না থাকেন তাহলে মানুষ চিন্তা কীভাবে করবে উনি কে? ওনার পরিচয় কি? উনি কি কোনো ব্যাংকের অফিসার ছিলেন নাকি উনি স্টাডি স্কলার না অন্য কিছু? মানুষ তাকে চিনতে তো হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এখানে বৃটিশবিরোধী আন্দোলন কারা করেছে? এক‘শ বছর-দেড়‘শ বছর। হাজী শরীয়তুল্লাহর দেশ এটা, পীর মহসিন উদ্দিন দুদু মিয়ার দেশ এটা। নেসার আলী তিতুমীরের দেশ এটা। তাদের রক্তপাত, তাদের শহীদি আত্মদানের মধ্য দিয়ে বৃটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ হয়েছে এই বাংলার মাটিতে সেখানে আপনি ইসলামকে উচ্ছেদ করে দেবেন, আপনি মাদ্রাসা উচ্ছেদ করে দেবেন, ইসলামের শিক্ষাকে বন্ধ করে দেবেন এটা হতে পারে না। এটা হয়নি। তারা বারবার চেষ্টা করেছে। যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই চেষ্টা করেছে কীভাবে এটার বিরুদ্ধে একটা পাল্টা বয়ান তৈরি করা যায়। ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে, মাদ্রাসার বিরুদ্ধে, আমাদের যারা ইসলামিক স্কলার এখানে বসে আছেন, ইসলামী পণ্ডিত যারা আাছেন তাদের বিরুদ্ধে একটা বয়ান তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে, সেই বয়ান তারা টেকাতে পারেনি।
ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন নিয়ে রিজভী বলেন, আমরা সম্প্রতি ইউনির্ভাসিটিগুলোতে যে নির্বাচন সেই নির্বাচনেও আমরা দেখেছি ভেতরে ভেতরে কী হয়েছে, দেখেছেন? একটা নির্বাচন হলে, কোনো কিছু ঘটনা হলে পরে সেখানে একটা বিশ্লেষণ আছে। সেই বিশ্লেষণে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সেখানে যারা পরাজিত শক্তি তাদের লোকজনরা ভোট দিচ্ছেন একটি ছাত্র সংগঠনকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন। এটা কেন হচ্ছে? এটা কিসের আলামত। এই আলামত তো ভালো না। ওই পরাজিত শক্তি যদি কোনোভাবে প্রত্যাবর্তন করে এটা সবার জন্য দুঃখজনক হবে। আজকে যারা এই মুহূর্তে রাজনৈতিক গেইম লাভ করার জন্য, রাজনীতিতে নিজের একটা প্লাস পয়েন্ট তৈরি করার জন্য যারা তাদের সাথে গোপনে আঁতাত করে কিছু করতে চাচ্ছেন- এটা কারও জন্য মঙ্গলদায়ক হবে না। কারণ ওই পরাজিত শক্তির পেছনে আরেকটি বৃহত্তর শক্তি আছে যারা ইসলামকে টলারেট করে না, যারা বাংলাদেশ একটি স্বাধীন অস্তিত্বে থাকুক তা চায় না। কারণ বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ।
এ সময়ে হেফাজতে ইসলামের জুনায়েদ আল হাবিব, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেদায়েতুল্লাহ কাসেমী, জাবের কাসেমী, সানাউল্লাহ মাহমুদী, নূর মোহাম্মদ, জাকির হোসেন কাসেমী, সালেহ আহমদ আজম ও এনায়েত উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম, মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম রনি।
সানা/আপ্র/১৬/০৯/২০২৫